Ameen Qudir
Published:2018-05-17 22:45:05 BdST
ঘুম সমস্যায় ভুগছেন: আজ লিখছি ঘুম নিয়ে
ডা. সুলতানা আলগিন
___________________________
ঘুম বড় দরকারি। ঘুম ঠিক মত না হলে ঘুম চিকিৎসাও দরকারি। আমরা এখন বাংলাদেশে আধুনিক ঘুম চিকিৎসারও যোগাড়যন্ত্র করছি। এরই মধ্যে আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্লিপ ল্যাব চালু হয়েছে।
ঘুম না হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়:
দুর্বলতা,দৈনন্দিন সব কাজে অনীহা
মনোযোগের অভাব, ভুলেযাওয়া ,বিরক্তিবোধ
সামাজিকতা ও কাজের মান নষ্ট হওয়া
বিষন্নতা,উদ্বেগ রোগ ও নানাধরণের মানসিক সমস্যা ।
কেন এমন হয়:
ঘুম আসা না নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন থাকলে
বিভিন্ন রকমের জটিলতা/ স্ট্রেস: পারিবারিক, সামাজিক, পেশাগত সাময়িক সমস্যা
বিভিন্ন মানসিক রোগ: বিষন্নতা,উদ্বেগ রোগ ও নানাধরণের মানসিক সমস্যা
কাশি,চুলকানি,বদহজম,বিভিন্ন রকমের ওষুধ সেবন ও মাদক গ্রহণ
মোবাইল,ল্যাপটপ,টিভি দেখা নিয়ে রাতে ব্যস্ত থাকা।
![](https://daktarprotidin.com/uploads/shares/ghum1-2018-05-17-16-41-11.jpg)
আপনি কি নীচের কে সমস্যায় ভুগছেন ?
নিদ্রাহীনতা বা অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া
বোবায় ধরা,নাক ডাকা,শ্বাসপ্রশ্বাসে বন্ধ হয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠা
ঘুমের মধ্যে হাটা ,কথা বলা,খাওয়া,মারামারি করা বা লাথি মারা বা খিচুনী হওয়া ,হাতপা অবশ হয়ে যাওয়া,দাত কিড়মিড় করা
দুঃ¯^প্ন থেকে আতঙ্কিত বোধ, হাতপা অবশ হয়ে যাওয়া,বিছানায় প্রস্রাব করা
নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন ?
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে নাইএমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তবে ঘুম যাদের ধরা দিচ্ছে না তাদের জন্য রাত হলো বিষাদময় । তারা বোঝে না ঘুমানোর যন্ত্রণা। তাই ঘুমকে অবহেলা না করে তাকে কি ভাবে বশে আনা যায় তার চেষ্টা করাই উচিত।
যা করণীয়:
ঘুমের পরিবেশ হতে হবে ---
স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং আরামের । খুব গরমবাঠান্ডা যেন না হয়। বিছানার চাদর-বালিশের কাভার ,পরনের পোশাক প্রয়োজনে বদলে নিতে পারেন।
অন্ধকার এবং নীরব সুনসান । জানালায় ভারী পর্দা থাকলে ভোরের আলো আপনাকে বিরক্ত করতে পারবে না।
![](https://daktarprotidin.com/uploads/shares/ghum-2018-05-17-16-43-33.jpg)
যা আপনি করবেন ---
বিছানায় একমাত্র ঘুম পেলেই বা ক্লান্ত হলেই যাবেন।
নির্দ্দিষ্ট সময়ে রাতে বিছানায় যাবেন এবং নির্দ্দিষ্ট সময়ে বিছানা ছেড়ে সকালে উঠবেন।এমনকি ছুটীর দিনেও এই নিয়মে অবহেলা করবেন না।
দিনের যত চিন্তা হিসাবনিকাশ এবং পরের দিনের কর্মসূচী সবকিছুই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে বিছানায় ঘুমাতে যাবেন।
দিনের বেলা নিয়মিত ব্যয়াম করবেন ,পুষ্টিকর খাবার খাবেন।
ঘুমানোর আগে গোসল করা ,বইপড়া বা গরম পানীয় যেমন এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। হালকা মিউজিক শুনতে পারেন। তবে তা ৩০মিনিটের মধ্যে যেন আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।
![](https://daktarprotidin.com/uploads/shares/ghum2-2018-05-17-16-42-22.jpg)
যা করা থেকে বিরত থাকবেন
শেষ বিকেল বা সন্ধ্যার পর ভারী ব্যায়াম বা খেলাধূলা করবেন না।
চা,কফি, সিগারেট বা কোন মদ্যপান করবেন না। (কমপক্ষে ৬ঘন্টা আগে বন্ধ করবেন)
বিছানায় বসে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভি দেখবেন না।
দিনেরবেলা অতিরিক্ত ঘুমাবেন না।
বেলা শেষে বা ঘুমের আগে পেটপুরে খাবেন না।তবে হালকা কিছু খেতে পারেন।
বিছানায় ঘুম না পেলে অহেতুক গড়াগড়ি করবেন না।
যে খাবার খেলে চোখে ঘুম তাড়াতাড়ি আসবে:
ফল-- কিউই, কলা , চেরী
দুধ, দই এবং দুধজাতীয় খাবার
সব রকমের মাছ বিশেষত: স্যামন ,টুনা
সবুজসব্জি: ব্রকলি,সয়াফুড,শিমজাতীয় সব্জি,হোলগ্রান বা শস্যদানা
যে চিকিৎসা দেয়া হয়:
মেডিসিন:
সাইকোথেরাপী :স্টিমুলাস কন্ট্রোল থেরাপী, স্লিপ রেসট্রিকশন থেরাপী,রিল্যাকজেশন থেরাপী,প্যারাডক্সিকাল ইনটেনশন,বায়োফিডব্যাক,কসনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপী
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এরপরও যদি ঘুম না আসে বিছানা থেকে উঠে পড়ু ন। অন্য রুমে যান।বই পড়ুন গান শুনুন হালকা কিছু খান । আর ঘুম পেলেই ফিরে যান ঘুমের রাজ্যে ।
_______________________________
ডা. সুলতানা আলগিন ।
সহযোগী অধ্যাপক , মনোরোগবিদ্যা বিভাগ। কনসালটেন্ট, ওসিডি ক্লিনিক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
আপনার মতামত দিন: