SAHA ANTOR
Published:2020-10-04 02:13:47 BdST
' ডাক্তার সাব, আমার মেয়ে বলে, তার বাচ্চাকে মেরে ফেলে সে–ও মরে যাবে '
ডা. সুলতানা আলগিন
সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ এবং
ওসিডি ক্লিনিক কনসালট্যান্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
_____________________
এবার একজন মধ্যবয়সী ভদ্রমহিলা বেশ আলুথালু বেশে চেম্বারে ঢুকলেন। তিনি বললেন, আপা, আমার মেয়ের সংসার বাঁচান। সমস্যা হলো, বিয়ের বছর না ঘুরতেই নাতির মুখ দেখলাম। দুই পরিবারের সবাই খুশি। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বউ, নাতি নিয়ে গেল ঠিকই। কিন্তু আমার মেয়ে তার সন্তানকে ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারছে না। ঘুম, খাওয়াদাওয়া কোনোটাই ওর ঠিকমতো হচ্ছে না। উল্টাপাল্টা কথা বলছে। বাচ্চার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আর কাঁদে। বলে, বাচ্চাকে মেরে ফেলে সে–ও মরে যাবে। সে মনে করে, কেউ তার আপন নয়। মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাদের ফোন দিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসতে বলেছে। তবে নাতিকে দেবে না। সুস্থ হলে পরে কথা বলবে।
মেয়েটি প্রসবোত্তর সাইকোসিস টাইপের মানসিক রোগে ভুগছে। চিকিৎসা করলে এ অসুখ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। বাচ্চা, সংসার সবই রক্ষা পায়। অথচ অজ্ঞানতা আমাদের অন্ধ করে রেখেছে।
একজন চিকিৎসক হিসেবে ডাক্তারি গল্প বললাম। এর কারণ হলো, প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদের পেছনে কারণ থাকে। আমরা সেসব কারণ অনেক সময় খতিয়ে দেখি না। অসচেতন থাকি। অনেক সময় কারণ বুঝতে পারি না। শুধু পারস্পরিক দোষারোপের মধ্যে চক্রাকারে ঘুরে সুখের সংসারকে অসুখী করে তোলা হয়। যার শেষ পরিণতি ঘটে বিচ্ছেদে।
আপনার মতামত দিন: