Ameen Qudir
Published:2019-01-29 03:13:12 BdST
গোলমেলেমাতাল ও মাতলামির পক্ষে বক্তব্য বিজ্ঞানীদের : মনোবিজ্ঞানী চিকিৎসকরা কি বলছেন
গোলমাল ছবিতে নাট্যসম্রাট উৎপল দত্ত ও কেষ্ট মুখোপাধ্যায় ।
ডেস্ক
__________________________
‘‘দাদা, মাল খেয়ে আছি বলে ভাববেন না বাতেলা দিচ্ছি’’ অথবা ‘‘তখন মালের ঘোরে কী বলতে কী বলে ফেলেছি ব্রাদার, কিছু মনে রেখো না’’— বাঙালি জীবনে এই ধরনের সংলাপ অতি কমন। আর এই কমন সংলাপ থেকে আমরা জানি, মাতালদের কথার কোনও মূল্য নেই। মদের নেশায় মানুষ রাজাকে গজা, উটকে ইট, পাঁঠাকে জ্যাঠা বলে বর্ণনা করতে পারে। সুতরাং, মাতালের প্রবচনে ভুলে তাকে সত্য হিসেবে ধরাটা একেবারেই বোকামি— এমন এক সামাজিক নীতিকেই আমরা প্রাপ্ত হয়ে এসেছি এতকাল।
কিন্তু সম্প্রতি এই সত্যে বাধ সাধলেন একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের মতে, মাতালের বচনে অবশ্যই সত্যতা বিদ্যমান। কারণ মদ্যপ অবস্থাতেই ব্যক্তির আসল সত্তা প্রকাশিত হয়।
সম্প্রতি ‘ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মিসৌরি এবং পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় উক্ত তথ্য জানা গিয়েছে। গবেষকরা মাতাল ও না-মাতাল ব্যক্তিদের আচরণ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করেই এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। ১৫৬ জন ব্যক্তিকে মদ খাইয়ে ও না খাইয়ে তাদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয় বেশ কিছু দিন ধরে। এই ব্যক্তিদের একাংশকে মদ খাইয়ে বেশ কিছু পর্সোন্যালিটি টেস্ট করা হয় ও ওই সংক্রান্ত গেম খেলানো হয়। তার পরে তাঁদের স্বাভাবিক অবস্থাতেও ওই কাজগুলি করতে বলা হয়। দেখা যায়, তাঁদের দুই অবস্থার মধ্যে তেমন কিছু পার্থক্য নেই।
এখান থেকেই বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে আসছেন, মাতাল অবস্থাতেও ব্যক্তির প্রকৃত ব্যক্তিত্ব অক্ষুণ্ন থাকে। কেবল, মদ্যপ অবস্থায় মানুয একটু প্রগলভ হয়ে পড়ে, এই যা।
ডা. সুলতানা এলগিন যা বলছেন
১. মদ পান ও মাতাল এবং মাতলামি নিয়ে আদ্যিকাল থেকে নানা মিথ আছে। রসাল গালগল্প আছে। মদিরা বিশেষজ্ঞদের নানা পক্ষে বিপক্ষে মতও আছে। এখন এর মধ্যে কল্যাণটাই বেছে নিতে হবে।
২. একজন মাদকাসক্তি র চিকিৎসক হিসেবে কেউ যদি আমার মত চান, আমি মদিরার পক্ষে জোর কোন রায় দেব না।
৩. মাতাল ও মাতলামির পক্ষে কোনরকম উকালতির কোন সুযোগই নেই। কেননা, মাতাল ও মাতলামি উভয়েই অতিরিক্ত মদপান জনিত।
৪. মদপানের নানা মত আছে। সেসবের মধ্যে না গিয়েও বলা যায়, মাতলামির নানা বাড়াবাড়ির জন্যই এ নিয়ে নানা নিষেধ ও রসিকতা।
৫. মাতালের বক্তব্য কতটা সত্য ও গ্রহণ যোগ্য। 
মাতলামি শারিরীক সুস্থতার কোন স্থিতিই নয়। মদপানে মাতাল হলেই মাতলামি। তাই মাতাল তো অস্থির। তার বক্তব্য শ্রুতিমধুর ( বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রুতি কটু ও অশ্রাব্য ) হলেও তার সত্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। 
৬. মদ পান বাড়াবাড়ি হলে মাদকাসক্তি নিরাময়ে ডাক্তারের শরণ নিতে হয়। ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন ছাড়া মদ পান অবশ্যই শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
৭. মদপান কখনও উপকারী বলে বলে অনেকে। সেটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে। স্বল্পমাত্রায়। অতিরিক্ত মদ পান অবশ্যই অপকারী। 
__________________________
ডা. সুলতানা এলগিন । মানসিক সম্পর্ক বিদ। 
সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ। কনসালটেন্ট , ওসিডি ক্লিনিক; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
আপনার মতামত দিন:


 
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                       