Dr.Liakat Ali
Published:2022-01-24 08:57:19 BdST
অভিনন্দন বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেলেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
অধ্যাপক ডা শুভাগত চৌধুরী
ডা. রেজাউল করিম
_______________
বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেলেন
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যাচার্য হিসেবে তিনি উপমহাদেশ জুড়ে সম্মানিত।
সাহিত্যামোদীরা বলেন, দেরীতে হলেও বাংলা একাডেমি তাঁকে সম্মানিত করে দৃশ্যত নিজেরাই সম্মানিত হয়েছে।
বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত লেখাকে অধ্যাপক ডা শুভাগত চৌধুরী সাহিত্যের সম্পদের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশে তিনি এক্ষেত্রে পথিকৃৎ।
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন ডাক্তার প্রতিদিন সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের প্রফেসর ডা সুলতানা আলগিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে সাহিত্য মূলক লেখার পথিকৃৎ তিনি। তিনি সম্মানিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত । অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরীকে সম্মান প্রদানে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠানগুলোর শৈথিল্য প্রদর্শন আমাদের বেদনাহত করে। নক্ষত্র সম এই লেখক উপমহাদেশ জুড়েই প্রণম্য।
পীযূষ কান্তি বড়ুয়া র লেখা থেকে জানা যায়,
১৯৪৭ সালের ১১জানুয়ারি তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার আকিলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন জমিদার। তাঁর পিতা শ্রী শৈলেন্দ্র চৌধুরী এবং তাঁর মাতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. মঞ্জুশ্রী চৌধুরী যাঁর লেখা গদ্য 'রূপসী বাংলা' শিরোনামে সপ্তম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত ছিল। তাঁর অনুজ ভ্রাতা অধ্যাপক ডাঃ অরূপ রতন চৌধুরী একজন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান উপস্থাপক। তাঁর একমাত্র বোন ড. মধুশ্রী ভদ্র।
শৈশবে জন্মস্থানে শিশু শিক্ষা লাভের পর মায়ের তৎপরতায় ভর্তি হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি নিকেতনের পাঠ ভবনে। কবিগুরুর জ্যেষ্ঠ পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর সে সময় শান্তি নিকেতনের উপাচার্য ছিলেন। তিনি সিলেট মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এবং কর্মসূত্রে তৎকালীন আইপিজিএমআর এ নিযুক্ত ছিলেন। তিনি লন্ডনের সেন্ট থমাস মেডিক্যাল স্কুলে গবেষক হিসেবে বৃত্তি লাভ করেন। অধ্যাপক চৌধুরী নিউইয়র্ক মেডিক্যাল এসোসিয়েশন এর নির্বাচিত ফেলো। তাঁর লেখা পঞ্চাশটির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য জার্নালে ছাপা হয়।
তিনি বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান, বিশেষতঃ চিকিৎসা বিজ্ঞানের চর্চা ও প্রসারে ড. আব্দুল্লাহ্ আল মুতী শরফুদ্দিন এর অনুপ্রেরণায় অনলস শ্রম দিয়ে গেছেন। ডেভিডসনের মেডিসিন পাঠ্য বই বাংলায় অনুবাদ করে তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর ৬৩টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক কলাম লিখে 'বদ্যিবুড়ো' নামে খ্যাতি অর্জন করেছেন। দৈনিক প্রথম আলোয় তাঁর নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক কলাম 'অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে' প্রকাশিত হয়ে আসছে। ১৯৭৮ সালে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ' চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবিষ্কারের কাহিনী' মুক্তধারা থেকে প্রকাশিত হয়। তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের দায়িত্ব পালন করে তিনি ২০০৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বারডেমের ল্যাবরেটরি বিজ্ঞান বিষয়ের পরিচালক ছিলেন।
তিনি সাহিত্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক রচনার পাশাপাশি প্রায় পঞ্চাশটি নাটকে অভিনয় করেন এবং বিশটি নাটকে নির্দেশনা প্রদান করেন। 'প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের লীলাভূমি কানাডা' নামে তাঁর একটি ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থ আছে। তিনি চিকিৎসা বিষয়ে অবদানের জন্যে শেরে বাংলা পুরস্কারে ভূষিত হন।
আপনার মতামত দিন: