Ameen Qudir
Published:2019-10-12 21:32:43 BdST
বাংলা সাহিত্যের এক নবীন বিস্ময় ডা. প্রীতম মন্ডল: "ব্যাসার্ধ" পাঠে মুগ্ধ পাঠকরা
আমিন কাদির
_____________________
নবীন চিকিৎসক প্রীতম মন্ডলের গল্প গ্রন্থ "ব্যাসার্ধ" নিয়ে পাঠক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ডা. প্রীতম মন্ডলের অনন্য কলম। অসাধারণ তার লেখার শক্তি। এর মধ্যেই ডাক্তার প্রতিদিন সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় তার লেখা প্রকাশ হয়েছে। পঠিত হয়েছে প্রচুর। যারা তার লেখা পড়েছেন, সবাই মুগ্ধ। অনেকের ভাষ্য, একজন মানবসেবী ডাক্তারের পাশাপাশি পাঠকমনকে আবিষ্ট করার প্রচন্ড ক্ষমতা রয়েছে প্রীতমের মধ্যে। প্রীতমের মধ্যে অনেকেই একজন শক্তিমান কথাশিল্পীকেও দেখতে পাচ্ছেন।
সায়ন্তনী চক্রবর্ত্তী লিখেছেন,
এ বছরের পুজোর সেরা গিফ্ট এর মধ্যে প্রীতম দার "ব্যাসার্ধ" অন্যতম। পুজোর চারদিন ধরে চুটিয়ে পড়লাম গল্প টা। ছোটবেলা থেকেই গার্লস স্কুলে কেটেছে। তাই কো-এড স্কুলের এই চেনা ছক কিছুটা অচেনা লাগলেও দাদার লেখার জাদুতে যেন চোখের সামনেই ঘটতে দেখলাম প্রিয়েশ-সৃজিতার বন্ধুত্বের আবরণে মোড়া অপরিণত প্রেমটা। লেখার বিষয়ে কিছু বলাই বাহুল্য। প্রীতম দার চেনা ফরম্যাট-এ আগেও মুগ্ধ হয়েছি আর এবারেও। খুব নস্টালজিক ও হয়েছি। এরকম প্রিয়েশ বা সৃজিতা হয়তো আমাদের সকলের জীবনেই কেউ না কেউ আছে। যার জন্যে এতো বছর পরেও এতো ব্যস্ততার মধ্যেও পুরোনো ঝাঁপি খুলে বসা যায়; বলা ভালো বসতে ইচ্ছে করে। যাইহোক বেশী ব্যাখ্যা করে পাঠক দের সাসপেন্স নষ্ট করবো না। খুব ভালো লেগেছে।
#ব্যাসার্ধ নিয়ে লিখেছেন পৌলমী আদক। তিনি লেখেন,
যেদিন প্রথম এই বইটার কথা জেনেছিলাম সেদিন থেকেই আমি ঠিক করেছিলাম এই বই আমার চাই।কারণ কেনো জানিনা আমার মনে হয়েছিল কোথাও একটা গিয়ে এই বই আমার নিজের জীবনের গল্প,ফেলে আসা অতীতের এক মিষ্টি অধ্যায়ের গল্প বলবে।এই বইয়ের ব্যাপারে জানার আগে অবধি না আমি লেখক কে চিনতাম, না তাঁর কোনো লেখা আগে পড়েছিলাম।শুধুমাত্র স্কুল জীবনের বন্ধুত্বের গল্প এটুকুই আমার চোখ আকর্ষণ করার জন্যে যথেষ্ট ছিল।তারপর আরও আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছিল বইটির ট্রেলার ভিডিওটি।তারপর আসে শিল্পী কৃষ্ণেন্দু মণ্ডলের প্রচ্ছদ।না এইবার বিভা পাবলিকেশন আমায় আর কোনো কথা বলার সুযোগ দেয়নি।মন চোখ ভরে যায় এই প্রচ্ছদ দেখে,একেবারে যথাযথ।কারণ স্কুল জীবনের ওই বন্ধুত্ব গুলো স্কুলবইয়ের ভিতরের ওই সূত্র গুলোর মতোই,স্কেল,কাঁটা কম্পাস পেন পেন্সিল জ্যামিতিতে বন্দী।প্রথম থেকেই বইটির যত পাতা উল্টে গেছি মনে হয়েছে এই গল্প আমার।এই প্রিয়েশ সৃজিতা কে আমি খুব কাছ থেকে চিনি।স্কুল লাইফ এ বহুবার "নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ" আবৃত্তি করেছি।বাড়ি ফেরার সময় ঐভাবে ওই উঁকি দেয়া,নাটকের রিহার্সাল, সরস্বতী পুজো,ল্যান্ড লাইনের প্রতিটা রিং এর সাথে মিশে থাকা বন্ধুত্ব,ভাললাগা, বড়ো হয়ে ওঠার সাহস,ভয়,নোকিয়া মোবাইলের নতুন করতে শেখা এস এম এস,ল্যান্ড ফোনের বিলের ভয়ে ওষ্ঠাগত প্রাণ,এমনকি বেঞ্চের সারি গুলো পর্যন্ত আমার জীবনের সাথে মিলে গেছে এবং আশা করি পাঠক রাও নিজেদের জীবনের ফেলে আসা দিন গুলোয় ফিরে যাবেন এই বই পড়লে।খুব মনে পড়ছে নিজের স্কুলজীবন।না কোনো কঠিন সাহিত্য নয়,কোনো জটিল ভাষার অযথা লেখনী নয়,শুধুমাত্র সিম্পল ন্যারেটিভ এবং প্রতিটা লাইনে স্মৃতির আনাগোনা।এটাই এই বইয়ের সম্পদ।এই স্কুল লাইফের বন্ধুত্ব গুলো সত্যিই বড়ো অদ্ভুত।খাতার পাতায় লেখা ছোট ছোট ইচ্ছের লুকোচুরির ব্যাসার্ধ গুলোই জন্ম দেয় এক মিষ্টি অদ্ভুত ভালোলাগার।যা ক্রমে ভবিষ্যতের এক বড় বৃত্ত সম্পূর্ণ করার দিকে এগিয়ে যায়।এই বন্ধুত্বের আলোয় বেড়ে ওঠা যে অপরিণত প্রেম,তার ব্যাপ্তি এই সব কিছু মিশে গিয়ে X=নিখাদ সরল এক বন্ধুত্বই উঠে আসে লেখকের লেখার মাধ্যমে।এর সাথে উঠে আসে এক একাকী কিছুটা মুখচোরা নিজের মতো কাটানো সন্তানের গল্প,এবং উঠে এসেছে এক ডাক্তারের জীবনের ব্যস্ততা,দায়িত্ববোধ এবং মানবিক দিকটুকু।এই এপিসোড টা খুব সম্ভবত লেখক ডাক্তারবাবুর নিজের জীবনেরই ছায়া অবলম্বনে বলেই মনে হয়েছে আমার। আরও মনে হলো এই গল্পের শেষ এখানে নয়,এটা সবে শুরু।এই গল্পের আরও বিস্তৃতি বোধহয় কাম্য।লেখকের কাছে সেই বিস্তৃতির তথা এই গল্পের পরবর্তী খণ্ডের আর্জি জানিয়ে রাখলাম।সব মিলিয়ে প্রথম বই,প্রথম উপন্যাস হিসেবে অনেক স্মৃতি উস্কে দেওয়ার জন্যে হলেও অন্তত এই গল্প সার্থক।কলম এগিয়ে চলুক ডাক্তারবাবু!লিখে চলুন।খুব ভালো লাগলো।আপাতত সৃজিতা প্রিয়েশের জীবনের পরবর্তী ধাপের অপেক্ষায় রইলাম।ভালো থাকুক আমাদের নস্টালজিয়া,আমাদের স্কুল জীবন,হোয়্যাটস অ্যাপ নয় এস এম এস প্যাকের বন্ধুত্ব গুলো!বাঁচিয়ে রাখুক স্মৃতিদের!!শুভকামনা রইল
"অভ্যাস চট করে বদলাতে নেই।বদলালে একটা অদৃশ্য ঝড় তৈরি হয়।মানুষের মনে নানান প্রশ্ন জাগে।পরিস্থিতি একটা অযাচিত নিম্নচাপের নীচে চাপা পড়ে যায়।ব্যাপারটাকে সাবধানে ট্যাকেল না করলে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকে।"
আপনার মতামত দিন: