Ameen Qudir
Published:2018-04-30 14:13:56 BdST
মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ এবং মহাপরিনির্বাণ দিবস
ডা. আশীষ দেবনাথ
________________________________
শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। এই বৈশাখী পূর্ণিমাই মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ এবং মহাপরিনির্বাণ দিবস।
গৌতম বুদ্ধ দেখলেন, মহাবিশ্বের শৃঙ্খলা চলে সুনির্দিষ্ট প্রাকৃতিক নিয়মে। আর জগতের সকল কিছুই এই প্রকৃতির অধীন। মানুষের দুঃখ-দূর্দশা, জরা, দুশ্চিন্তা, অভাব, হতাশা কোন অতিপ্রাকৃত নির্ভর বিষয় নয়। এর জন্য দায়ী মানুষের চরিত্র। গৌতমের মতে, মানুষের মনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হলো কামনা। আর কামনা অপূর্ণ থাকলে তৈরী হয় অপ্রাপ্তি। অপ্রাপ্তি থেকেই সৃষ্টি হয় দুঃখ। কোন বেদনাদায়ক ঘটনায় মানুষের মন যেমন যন্ত্রনা থেকে মুক্তি চায়, তেমনি আনন্দের সময় মানুষ চায় এটি দীর্ঘস্থায়ী হউক। তাই মানুষের মন কখনো স্থিরতা পায়না। সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজাও এজন্য দুশ্চিন্তার হাত থেকে বাঁচতে পারেন না। সুখের পিছনে ছুটে আর দুঃখ থেকে পালিয়ে বাঁচতে মানুষ এক জীবন পার করে ফেলে।
গৌতম দেখলেন, দুঃখ এবং সুখকে কামনা ছাড়া গ্রহন করলেই মানুষের এই দুর্দশা আর থাকে না। কিন্তু মানুষের মন এই কামনা ত্যাগ করবে কেমন করে? গৌতম বললেন, এটা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। এই জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার। "কী হতে পারতো" না ভেবে যদি আমরা "কী হচ্ছে" ভাবি তাহলেই বিষয়টা অনেক সহজ হয়ে যায়।
কামনা-বাসনাকে এড়াতে যথাযোগ্য সাধনায় ইন্দ্রীয় জয় করাতেই মানবের মুক্তি। গৌতম একে বললেন, 'নির্বাণ' লাভ। নির্বাণ শব্দের অর্থ, 'আগুন নিভে যাওয়া'। এতে মানুষ সবরকম কল্পনা ও মোহ'কে দূরে সরিয়ে সুস্পষ্ট বাস্তবকে গ্রহন করতে পারে। এতে তারা দুঃখ-ব্যাথা অনুভব করেনা তা নয়, কিন্তু তখন এগুলো তাকে আর পীড়িত করেনা।
গৌতম বুদ্ধের শিক্ষাকে এক বাক্যে সহজে বলা যায় এভাবে, "মোহ থেকে দুঃখ আসে, দুঃখমোচনের একমাত্র উপায় মোহ থেকে মুক্ত হওয়া। মোহ থেকে মুক্ত হবার উপায় হলো বাস্তবতা যেমন, তাকে সেভাবেই গ্রহন করা"।
শুভ জন্মদিন সিদ্ধার্থ।
সব্বে সত্তা সুখীতা ভবন্তু
জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক।
_____________________________

আপনার মতামত দিন: