Ameen Qudir

Published:
2016-11-21 05:49:32 BdST

সিএমসির অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন স্যার এখন যেমন আছেন


ডা. তিতাস মাহমুদ
____________________

 

আমি নিশ্চিত জানি , তিনি আমাকে চেনেননি। আমাকে চেনার বিশেষ কোন কারণ নেই। আমি কোনদিন তাঁর ক্লাস করিনি। ওয়ার্ডের রাউন্ডে যাইনি। তাঁর ছায়া দেখলেই পিছন দিয়ে পালিয়ে যেতাম।

অথচ আজ কি অনায়াসে আমি তাঁর পাশে বসে ডান হাতটি ধরলাম।
পার্কিনসন ডিজিজের কাঁপা কাঁপা আর স্ট্রোকের অবশ মুঠি দিয়ে তিনি আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। খেতে গিয়ে বারবার খাওয়া গুলো তাঁর ফুসফুসে চলে যায়। গলা জুড়ে তাঁর খড়খড়ে কাশি, কন্ঠে আর কোন স্শব্দ নেই।

 

টরেন্টোতে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন স্যারের বড় মেয়ে, মায়া হোসেনকে জিজ্ঞেস করলাম, 'আমরা কি করে স্যারের এতো ঋণ, একটু শোধ করতে পারি?' সে বললো, 'এখানেই হাত ধরে বসে থাকেন আরো দিন,আরো রাত। আপনাদের দেখে বাবা একটিও কাশি দিলেন না। অথচ ফোনে আপনাদের বলেছিলাম, বাবাকে ফের হাসপাতালে নিচ্ছি। ওনার রক্তে অক্সিজেন মাত্র ৭৮%। আপনারা এসে একটু এসে দেখে যান!'

 

আমরা ২৮ তম ব্যাচের পক্ষ থেকে স্যারের বাড়িতে পৌঁছে দেবার জন্যে একটি 'রিক্লাইনার চেয়ার' অর্ডার করবো। হয়তো এতে 'এ্যাসপিরেশান নিউমুনাইটিস' এর কষ্ট কিছুটা কমবে।

এরপর নিঃস্তব্দতা ভেঙে বাশার এম আতিকুজ্জামান বললো: 'আমরা এবার আসি স্যার।' স্যার কিছুই বললেন না। তাঁর চোখ দিয়ে টপ টপ করে কয়েক ফোঁটা পানি ঝরলো। আমার হাতের আঙ্গুলে আরেকটু কড়া চাপ অনুভব করলাম। সে হাত ছাড়িয়ে আমি তাঁর পা ছুঁয়ে সালাম করলাম।
________________________

 

 

লেখক ডা. তিতাস মাহমুদ । জনপ্রিয় কবি ও অাবৃত্তিকার। প্রবাসী চিকিৎসক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ- সিএমসি ২৮ । ছবিতে লেখক ও সহপাঠী বন্ধুরা স্যারের সঙ্গে। 

আপনার মতামত দিন:


প্রিয় মুখ এর জনপ্রিয়