Saha Suravi
Published:2025-03-09 17:38:08 BdST
চিকিৎসা বিদ্যার মহাগুরু প্রফেসর ডা. টি. এ. চৌধুরী আর নেই
ডেস্ক
_____________________
বাংলাদেশের চিকিৎসা জগতের মহানক্ষত্র
শিক্ষক, পথপ্রদর্শক, অভিভাবক এবং খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ প্রফেসর টি. এ. চৌধুরী আর নেই। ওজিএসবি, বিসিপিএস ও সাফোগ সভাপতি হিসেবে আলোকিত করেছেন বাংলাদেশকে। আজ বিকেল ৩:০০ টায় তিনি মহাপ্রয়াণে গেছেন। তিনি ছিলেন শিক্ষকদের শিক্ষক। তিনি ছিলেন চিকিৎসা বিদ্যার মহাগুরু ।
মহান চিকিৎসক ও বাংলাদেশের গৌরব অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরীর
মৃত্যুতে গভীর শোক জ্ঞাপন করেছেন
বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যার প্রফেসর ডা. সুলতানা আলগিন । শোকবার্তায় তিনি বলেন,
স্যারের চলে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য এই অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর মহাপ্রয়াণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন এক আলোকবর্তিকা, যাঁর হাতে গড়া অসংখ্য শিক্ষার্থী ও চিকিৎসক আজ দেশ-বিদেশে মানবসেবায় নিয়োজিত। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন তিনি। তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এক নজরে মহাজীবন
)
এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী , যিনি ডাঃ টিএ চৌধুরী নামে অধিক পরিচিত। তিনি ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এ্যান্ড রিসার্চ এর পরিচালক ছিলেন। ২০১৭ সালে চৌধুরী চিকিৎসাবিদ্যায় অবদানের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
জন্ম ও শিক্ষা
তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলায়। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন এবং অনার্স মার্কসহ প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরে তিনি লাহোরের কিং এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পড়ার পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ যান এবং সেখানে থেকে এফআরসিএস সম্পন্ন করেন। তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী ১৯৬৫ সালে রয়েল কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ান এ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট থেকে এমআরসিওজি পাশ করেন।
কর্মজীবন
তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী দেশে ফিরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চাকরির মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি ৬ বছর ছিলেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলি হন। ১৯৮০ দশকে চৌধুরী তৎকালীন ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এ্যান্ড রিসার্চ(বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যোগ দেন এবং ১৯৮৭ সালে এর পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পান। ১৯৯৪ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি বারডেম হাসপাতালে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চৌধুরী অবস. এন্ড গাইনোকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ'র প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও পরবর্তীতে সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও তিনি এশিয়া এন্ড ওশেনিয়া ফেডারেশন অব অবস. এন্ড গাইনোকোলজি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং 'সাউথ এশিয়া ফেডারেশন অব অবস. এন্ড গাইনোকোলজি'র প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯১-১৯৯৩ সালে দুই বছর মেয়াদে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস এর সভাপতি ছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
ছাত্র জীবনে চৌধুরী এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করায় এটিসিও গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। নেপালে স্নাতকোত্তর চিকিৎসক বৃদ্ধিতে কাজ করায় নেপালের রাজা তাকে সে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার গোর্খা দক্ষিণ বাহু গোল্ড মেডেল প্রদান করে। ২০১৭ সালে চিকিৎসা শাস্ত্রের গাইনোকোলজী এবং অবসটেট্রিক্সের অন্যান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।
আপনার মতামত দিন: