DESK
Published:2024-09-12 19:48:34 BdST
ডা. সজীব কাজীর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের:চিকিৎসক,নার্সদের ৪ দফা
ডেস্ক
___________________________
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউ-তে (করোনারি কেয়ার ইউনিটে) কর্মরত অবস্থায় ডা. সজীব কাজীর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার আসোসিয়েশন। অবিলম্বে দোষীদের শনাক্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
হামলার ঘটনার বিচার চেয়ে চার দফা দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও। দাবি মানা না হলে তারা কঠোর অবস্থান নেবেন।
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার আসোসিয়েশন-এর
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে কর্মরত অবস্থায় ডা. সজীব কাজীর ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় রোগীর স্বজনরা। হামলায় ডা. সজীব গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসথে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
এমন নিরাপত্তাহীনতায় কাজ করা সকল চিকিৎসকের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনটি আরো জানায়, এ ধরনের হামলার একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। আমরা অনতিবিলম্বে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে জরুরি মিটিংয়ের আহ্বান জানাচ্ছি। এভাবে প্রতিনিয়ত চিকিৎসকরা হামলার শিকার হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে এ বক্তব্য জানানো হয়।
হামলার শিকার ডা. সজীব জানান, রোগীর হার্টে আগে থেকেই একটা রিং পরানো ছিল, তবে সেটা প্রায় অকার্যকর ছিল। বিষয়টি আমরা স্বজনদের জানিয়েছিলাম। সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যার ভিডিও ডকুমেন্টও আছে। তারপরেও আমাকে তারা এলোপাথারি মারধর শুরু করে এবং প্রায় ৩০-৪০ জন মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নিয়ে আসে।
তাকে হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন এই চিকিৎসক। বলেন, হাসপাতাল থেকে বের করে আমাকে একটি অটোরিক্সায় উঠতে বললে আমি দৌড় দিয়ে জরুরি বিভাগে চলে যায়। পরে সেখানে গিয়েও আমাকে মারধর করে। এ সময় জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের অনেক জায়গায় ভাঙচুর চালানো হয়।
চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৪ দফা
--------------------------------
ওদিকে
কক্সবাজার ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সজীব কাজীর উপর হামলার ঘটনার বিচার চেয়ে চার দফা দাবি জানিয়েছেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়কের কাছে দেয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখ রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল, কক্সবাজার এ চতুর্থ তলায় কার্ডিওলজি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সজীব কাজীর উপর হামলা এবং অপহরণ পূর্বক হত্যা চেষ্টাসহ মারাত্মকভাবে জখম হওয়ায় হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ হতে নিম্নলিখিত দাবীগুলো পেশ করা হইল।’
চার দফা দাবি-
১. প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে প্রশাসনের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ। হামলার ঘটনার ৩৬ ঘন্টা পার হওয়ার পর ও চিহ্নিত অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হওয়া ও প্রশাসনের গড়িমসি গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত অপরাধীদের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করা ও প্রথম সারির গণমাধ্যমে যথারীতি প্রচার করা।
২. সকল চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোপরি হাসপাতালের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আনসার, পুলিশ, বিজিবি ও সেনা বাহিনীর সমন্বয়ে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা আজ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ থেকে জোরদার করা।
৩. অদ্য সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হতে মামলা দায়ের নিশ্চিত করা।
৪. আহত চিকিৎসক ডা. সজীব কাজীর পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘উক্ত দাবিসমূহ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান কর্মবিরতি বলবৎ থাকিবে। বর্তমানে সীমিত পরিসরে জরুরি বিভাগ ও জরুরি প্রসূতি সেবা চলমান থাকলেও আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উল্লেখিত দাবিসমূহ অতিদ্রুত পূরণ না হলে জরুরি বিভাগসহ পুরো হাসপাতাল কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’
এদিকে ঘটনার পর দিন সকালে ডা. সজীব কাজীর উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আপনার মতামত দিন: