SAHA ANTAR

Published:
2022-05-30 22:52:53 BdST

কান্নাকাটি জুড়ে চিকিৎসক-বাবার মৃত্যুর খবর দেয় ছ’বছরের সন্তান


ডা. সদানন্দ দাস





সংবাদ সংস্থা
________________

ঘরের ভিতরে অস্বাভাবিক কিছু দেখে ছ’বছরের শিশু ফ্ল্যাটের বাইরের সিঁড়িতে এসে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিল। দুই প্রতিবেশী সেই কান্না শুনে ছুটে এলে নিজের গলায় হাত দিয়ে ইশারায় সে জানিয়েছিল, বাবার মৃত্যু হয়েছে। তার কিছু ক্ষণ পরেই জানা যায়, ওই আবাসনেরই পাঁচতলার ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে শিশুটির বাবারঝুলন্ত দেহ।

পুলিশ জানিয়েছে, সদানন্দ দাস (৫১) নামে ওই ব্যক্তি পেশায় অপথ্যালমোলজিস্ট। বাগুইআটি থানার পুলিশ শনিবার রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদেরঅনুমান, সদানন্দবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনার পিছনে পারিবারিক অশান্তি কাজ করেছে বলেও প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ।

এই নিয়ে গত শুক্র ও শনিবার বিধাননগর পুর এলাকায় পরপর তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। তিনটিই আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সল্টলেকের সিডি ব্লকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল মা-মেয়ের দেহ। শনিবার দত্তাবাদে এক ট্যাক্সিচালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই রাতেই বাগুইআটিরঅশ্বিনীনগরের ওই আবাসন থেকে ঝুলন্ত দেহ মেলে সদানন্দবাবুর। এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। তবে মৃতের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি জানান, স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া চলাকালীনই আচমকা ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরে অনেক বার স্ত্রী দরজায় ধাক্কা দিলেও দরজা খোলেননি সদানন্দবাবু। রাতের দিকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

 

প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির বছর ছয়েকের সন্তান উত্তরবঙ্গে বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করে। গরমের ছুটিতে সে বাড়ি এসেছে। ঘটনার রাতে সে-ই প্রথম দরজা খুলে বাইরে এসে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করছিল। যা শুনে দু’জন প্রতিবেশী সদানন্দবাবুদের ফ্ল্যাটের সামনে খোঁজ নিতে যান। কিন্তু তাঁর স্ত্রী কিছু জানাতে চাননি। তবে ভিতরে দরজা ভাঙার মতো শব্দ তাঁরা শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।

 

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পরিবারটির সঙ্গে আবাসনের বাকি বাসিন্দাদের তেমন মেলামেশা ছিল না। তবে এলাকায় চশমার দোকান থাকার সুবাদে সদানন্দবাবুকে অনেকেই চিনতেন। তাই এই ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরা।

পুলিশ প্রাথমিক ভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছে, বোলপুরে সদানন্দবাবুদের পৈতৃক বাড়ি। সপ্তাহান্তে তিনি সেখানে যেতেন ও সেখানে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের চোখের চিকিৎসাকরতেন। তদন্তকারীরা জানান, শনিবার তাঁর বোলপুর যাওয়া ঘিরেই বাড়িতে অশান্তির সূত্রপাত। সদানন্দবাবু ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গিয়েও পরে ফিরে আসেন। তার পরে কী ঘটেছিল, তা জানতে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়