Dr. Aminul Islam

Published:
2021-10-22 19:50:28 BdST

মর্মান্তিক বাবা হারানো ডা. মাশরিক বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন শেষে নিজেই অকালে চলে গেলেন


 

ডা. নুসরাত জাহান নাদিয়া
________________


নম্র-ভদ্র এ মেধাবী চিকিৎসক। কম বয়সে চলে গেছেন বাবা। বাবার স্বপ্ন ছিল, ছেলে ডাক্তার হবে। সরকারি চাকুরি করবে। মানুষের সেবা করবে। 

ছেলে জন্ম হওয়ার পর খুব খুশি হয়েছিলেন পিতা।  বলতেন, তাঁর ছেলে খুব মেধাবী হবে। ডাক্তার হবে। মানুষের মত মানুষ হবে। 

কিন্তু ছেলের ডাক্তার হওয়ার অনেক অনেক অাগেই প্রয়াত হয়েছেন পিতা। 

 

পিতার সেই  স্বপ্নেরও বাস্তব রূপ দিয়েছিলেন ডা. মাশরিকুর দীপ্ত । কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
কিডনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ৪২তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ডা. মাশরিকুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার ২১ অক্টোবর২০২১ দিবাগত রাতে মুম্বাইয়ে কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

 

 

প্রয়াত পিতার স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেওয়া ডা. মাশরিকুর দীপ্তের অকাল প্রয়াণে গভীর শোক জানান ডাক্তার প্রতিদিন সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের প্রফেসর ডা সুলতানা আলগিন। শোক এপিটাফ এ বলেন,
নম্র-ভদ্র এ মেধাবী চিকিৎসকের মৃত্যু সকলকে শোকাহত করেছে। সকলের প্রতি সমবেদনা জানাই।

তিনি ২০১১ সালে গাজীপুর শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি থেকে এসএসসি এবং রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করেন।

এর পর ২০১৩-১৪ সেশনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন। পরে ২০১৮ সালে চিকিৎসা সেবার সনদ গ্রহণ করেন টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরের ছেলে ডা. মাশরিক।


বন্ধু ডা. আহসান উজির বলেন, ‘সদ্য এমবিবিএস পাস করা ছেলেটার বয়স কতই বা ছিল ২৬ বা ২৭। মাস খানেক আগে পরম সাধনার বিসিএসও হয়ে গিয়েছিল। কম  বয়সে বাবাহারানো ছেলেটার চোখে-মুখে কত স্বপ্ন! করোনা শুরু হওয়ার পর চারদিকে যখন দিগ্বিদিক টালমাটাল অবস্থা, তখনই ছেলেটা সিদ্ধান্ত নেয় সে কিছু করবে। যোগ দেয়, সবচেয়ে ভয়ানক কোভিড আইসিইউ ইউনিটে। দিনরাত এক করে একেবারে সামনে থেকে সেবা দিতে থাকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের। অথচ কে জানতো সেইই বয়ে বেড়াচ্ছে মরণব্যাধি কিডনি ক্যান্সার, এই বয়সেই, তাও একেবারে লাস্ট স্টেজ। যে ক্যান্সার কিডনিকে ছাড়িয়ে আক্রান্ত করে ফেলেছিল ফুসফুস, অগ্ন্যাশয়, শিরা মহাশিরা ও তার চারপাশের সবকিছু। এত ভদ্র, এত শান্ত, এত মেধাবী আমার বন্ধু এত কষ্টে উপার্জিত কোনো কিছুরই স্বাদ উপভোগ করতে পারল না। অথচ আমরা মৃত্যু নিয়ে কতই না উদাসীন! রামেক প্রাক্তন ডা. এস এম সপ্তর্ষি জানান,ডা. মাশরিকুর রাজ্জাক দীপ্ত, রামেক ৫৫ তম ব্যাচ।৪২ বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত। পুরো ব্যাচের সবচেয়ে মেধাবী, পরিশ্রমী আর কনসিস্টেন্ট ছাত্রদের একজন।
আমার সাথে নামে যেমন মিল, তেমনি রোলমেটও ছিল ৪ বছর।মেটাস্ট্যাটিক রেনাল ক্যান্সার তাকে এই রেস থেকে অকস্মাৎই মুক্তি দিয়েছে।
আমাদের দিনরাত পরিশ্রম, কষ্ট,ডিপ্রেশন আর এই পৃথিবী কতটা ঠুনকো সেটা আরো একবার বুঝিয়ে দিতে।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়