ডেস্ক

Published:
2021-06-25 16:48:48 BdST

করোনা রোগীর স্বজনদের অসাবধানতা এবং করোনার বিস্তার


 

 

ডা.সুরেশ তুলসান
_____________________

কিছুক্ষণ আগেই স্বল্প পরিচিত একজন ফোন করে জানতে চাইলেন,"স্যার আমার কি করোনা টেস্ট করা লাগবে ? "--
বললাম, কেন কি হয়েছে ? তোমার করোনা টেস্ট করা লাগবে কেন ?

তিনি যা বললেন গল্পটা এরকম, তিনি তার গ্রামে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সায় যাচ্ছিলেন। তার সামনের সিটে বসা চাচা-ভাতিজী নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় ব্যাস্ত। মেয়েটির আরেকজন চাচা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। চাচার অবস্থা বেশ খারাপ। শঁ শঁ শব্দে অক্সিজেন দেয়ার পরও উনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন এর মাত্রা বেশ খারাপ। আর মুহূর্তের জন্য অক্সিজেন মাস্ক সরালেই অক্সিজেনের মাত্রা ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে। একটু আগেই তার চাচার বেডের সামনের বেডে এক অল্পবয়সী রোগী শত চেষ্টার পরও মারা গেছেন এই মেয়েটির চোখের সামনেই। বলাবাহুল্য এই মেয়েটিই তার চাচার সাথে করোনা ওয়ার্ডে এটেনডেন্ট হিসাবে থাকে। আর তার এই চাচা ওয়ার্ডের বাইরে থাকেন কখন কি লাগে তার জন্য। প্রয়োজনীয় রসদ এবং নৈমিত্তিক কারনে তারা হাসপাতাল থেকে কিছু সময়ের জন্য বাড়িতে যাচ্ছেন। এই দুজন চাচা-ভাতিজী, আমাকে ফোন করা ব্যাক্তি এবং অটোচালক সহ অটোতে থাকা কারোও মুখেই মাস্ক নেই।
তিনি অবশ্য এসব শুনেই তাড়াহুড়ো করে সেই অটো থেকে নেমে অন্য অটোতে করে বাসায় যেয়েই আচ্ছামত একটা গোসল দিয়েছেন লাইফবয় সাবান দিয়ে। তারপরও তিনি জানতে চাচ্ছেন উনার নিজের এখন করোনা পরীক্ষা করা লাগবে কিনা ?

প্রত্যেকটি করোনা রোগীর স্বজন এবং রোগীর সাথে হাসপাতালে থাকা এটেডেন্টদের বলে দেয়া হয় হাসপাতাল এবং হাসপাতালের বাহিরে এবং তাদের নিজেদের বাড়িতে তাদের জন্য বিধিনিষেধ এবং অবশ্য পালনীয় বিষয় সমূহ সম্পর্কে।
তারপরও যদি সাধারণ মানুষ সেইগুলা না মানেন অথবা শুধুমাত্র নিজের বাড়িতে মানেন কিন্তু বাহিরে মানেন এই ভেবে যে বাহিরে ছড়ালে তো তার নিজের বা তার বাড়ির কোন ক্ষতি হচ্ছে না তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই আত্মঘাতী হবে।

ডা সুরেশ তুলসান।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়