ডাক্তার প্রতিদিন

Published:
2020-05-15 17:04:11 BdST

এক ডাক্তার মায়ের কাহিনি: ফিরিয়ে দাও অবুঝ শিশুর মাতৃদুগ্ধের অধিকার!


 


লেখসূত্র ও তথ্য : হিউম্যানস ডিজিএমসি
__________________________

একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সবচেয়ে বেশি যে উপদেশ দিয়ে থাকেন,তা হল মায়ের বুকের দুধের বিকল্প কিছুই হতে পারে না এবং বাচ্চার বয়স দু বছর হওয়া পর্যন্ত অবশ্যই তা চালিয়ে যেতে হবে।

কিন্তু এত উপদেশ দেওয়া এক ''মা শিশু বিশেষজ্ঞ'' যদি নিজের সন্তানকেই বুকের দুধ ছাড়িয়ে দেন মাত্র নয় মাস বয়সে !!!!! তবে বিষয়টা কেমন হবে?বলুনত?অবুঝ শিশু বঞ্চিত তার মাতৃদুগ্ধের অধিকার থেকে।

এই বিষয়টা সমাজ কখনো মেনে নিতে চাইবে না।সমাজ জেগে উঠে বলবে,,,,,ফিরিয়ে দেওয়া হোক সেই অবুঝ শিশুর মাতৃদুগ্ধের অধিকার ,তার মায়ের বুক আঁকড়ে রাখার অধিকার।

কিন্তু সে পাষাণ মা, তার সন্তানকে আজ কাছে টানবে না,,দূরে দূরে সরিয়ে রাখবে।অবুঝ সে শিশু খুঁজে বেড়ায় তার মায়ের উষ্ণ পরশ, তার ছোট্ট মনে হয়ত বুঝবার ক্ষমতাও হয়নি আজ তার মা কেন দূরে।

আমরা অনেক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হলেও এমন ঘটনা ঘটে খুব কদাচিৎ। মা কাছে থেকেও থাকছে অনেক দূরে,,,অনেক দূরে,,,,,

কোভিড ১৯ এর সাথে চিকিৎসক হিসাবে লড়ে যাওয়া এক শিশু বিশেষজ্ঞ মায়ের কথা আপনাদের বলছিলাম। যুদ্ধের একেবারে সামনে থাকা ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. লায়লা শারমিন দিবার কথা আপনাদের বলছি। আজ তার দায়িত্ব, কর্তব্য প্রিয় সন্তানের সাথে তাঁর এমন বিচ্ছেদের কারন।দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পদে পদে থাকে করোনায় সংক্রমণের শংকা। তাই সন্তানকে রক্ষা করতেই এই মা আর তাঁর সন্তানের এমন বিচ্ছেদ।দেশের জন্য মা লড়ছে,,তাই তার অবুঝ শিশু এমন ত্যাগ স্বীকার করছে।এই শিশুটির জীবন শুরুই হয়েছিল অন্য এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে।অপ্রতুল ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ায় জন্মের পর পর শুরু হয় অনেক প্রতিকূলতা। ১৫ দিন NICU তে যুদ্ধ করে এই শিশু এখন আমাদের মাঝে আছে। একদিন সে বড় হবে,,,সে জানবে অবুঝ বয়সে তার অনেক যুদ্ধ জয়ের গল্প।

করোনা যুদ্ধের এই সম্মুখ যোদ্ধা ডা. লায়লা শারমিন দিবা আমাদের দিনাজপুরে মেডিকেল কলেজের ১২ তম ব্যাচের ছাত্রী। ২০০৯ সালে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ থেকে ইন্টার্ন শেষ করে বিসিএস পোস্টিং গ্রামে শেষ করে ২০১২ সালে চলে আসেন ঢাকায়।ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২০১২ সালে MD কোর্স শুরু করে সাফল্যের সাথে ২০১৮ তে কোর্স সমাপ্ত করেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের মাঝে একটা কথা খুব প্রচলিত। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হতে পারলেই আরাম আর আরাম।ডা. দিবার ক্ষেত্রে এই কথাটা বরং উল্টো প্রমাণিত হয়। ২০১৯ এ সন্তানের মা হবার পর ২০১৯ এর শেষে যোগদান করেন কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে।আর এদিকে মাত্র কয় মাসের ব্যবধানে ২০২০ সালে কোভিড ১৯ এর সংক্রমণ প্রকোপ হওয়া শুরু করলে তাঁর হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রুপান্তর করা হয়। মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকেই করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি শুরু করে এবং তখন থেকেই শুরু হয় আসল যুদ্ধ। ১০ দিন টানা এই হাসপাতালে চিকিৎসকদের ডিউটি করে যেতে হয়।এই দশ দিন নিজের পরিবার থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। আর কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হবার কারনে দায়িত্বের বোঝাটা অনেক অনেক বেশি। আরো অনেক অনেক দায়িত্বের গল্প,ত্যাগের গল্প, বিসর্জনের গল্প জড়িয়ে আছে আমাদের চিকিৎসকদের সাথে।

ডা. লায়লা শারমিন দিবা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের গর্ব, আমাদের গর্ব।এ মেডিকেল কলেজ এমন শত কৃতী সন্তানকে জন্ম দিয়েছে। আজকের এ কোভিড যুদ্ধে তারা অগ্রগামী অকুতোভয় সেনানী

সৌজন্য :


with Laila Sharmin Diba/হিউম্যানস ডিজিএমসি

AD..,

 

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়