Ameen Qudir
Published:2019-08-02 22:02:45 BdST
সোহরাওয়ার্দীর ঘটনা মিডিয়ার অপপ্রচার: বাংলাদেশের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
ডেস্ক
__________________________
সোহরাওয়ার্দীসহ সব মেডিকেলে ডাক্তাররা জীবন বাজি রেখে ডেঙ্গি রোগের আক্রান্তদের বাঁচাতে অক্লান্ত অতন্দ্র লড়ছেন, আর এক শ্রেনীর অপমিডিয়া, গুজব মিডিয়াএখনও; এই বাংলাদেশবাসীর ক্রান্তি লগ্নেও মিথ্যা প্রপাগান্ডায় লিপ্ত। এরা চায়, ডেঙ্গিরোগীরাও তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে অন্য রাষ্ট্রে চিকিৎসার জন্য চলে যাক।
সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের এক ঘটনা নিয়ে মিডিয়াগুলো চিকিৎসকদের নিয়ে অবর্নণীয় কুতসা রটাচ্ছে। তার মধ্যে সত্যের লেশ মাত্র নেই।
হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত পথশিশুকে ভর্তি না করা এবং ঘটনার তথ্য সংগ্রহে হাসপাতালে যাওয়া দুই সাংবাদিককে চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগের খবরে সত্যতা নেই। এটা মিডিয়া মেইড হিংসাত্মক খবর। সম্পূর্ণ ডাক্তারবিদ্বেষকে জনমনে ছড়িয়ে দিতে উদ্দেশ্যমূলক এই প্রচার।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বলেন, ‘ত্রিশ জুলাই রাতে শিশু বিভাগে আসে ওই শিশু। যেহেতু জ্বর নিয়ে এসেছে সেজন্য জ্বরের ওষুধ এবং ডেঙ্গু সন্দেহ করে তার জন্য যতটুকু চিকিৎসা দরকার, সে চিকিৎসা দিয়ে ডেঙ্গুর অবস্থা জানতে দুটি ব্লাড টেস্ট দেওয়া হয়েছে। ৩১ জুলাই শিশু বহির্বিভাগে অথবা দুইটার পরে হলে ইনডোরে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের দেখাবেন। তারা দুপুর ১২টার দিকে রিপোর্ট পায়, কিন্তু তারা কোনো চিকিৎসকদের রিপোর্ট দেখায়নি। সাধারণত ডেঙ্গু কনফার্ম হলে ভর্তি নিয়ে নিই।
ডা. ফরহাদ হোসেন এ নিয়ে এক লেখায় বিস্তারিত তথ্য ও বক্তব্য জানিয়েছেন।
কৃতঘ্ন_এক_জাতি:
শিরোনামের লেখায় তিনি জানান,
আমাদের বাঙালী জাতির বড়ো একটা অংশই সম্ভবত অকৃতজ্ঞ / কৃতঘ্ন
এ জাতির শিক্ষিতরাও চরম মূর্খের মতো আচরণ করে, বিশ্বাস করে কান কথা আর হুজুগে
আর এতোই ক্ষীণ স্মরণ শক্তি যে, দুদিন আগে যে উপকার করলো দুদিন পরই তা বেমালুম ভুলে যায়।
ডেঙ্গু জ্বর মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকা শহর ছাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে পুরো দেশে।ঢাকার হাসপাতাল গুলোতে উপচে পড়া ভীড়। ধারণ ক্ষমতার আট দশ গুণ বেশী রোগী সামাল দিতে হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী, ঢাকা মেডিকেল সহ সকল সরকারী হাসপাতাল গুলোকে।প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে না সিট। সরকারী হাসপাতালে ডেঙ্গুর টেস্ট ও চিকিৎসা ফ্রী করায় প্যাথলজির সামনে যেমন বিশাল লাইন তেমনি ভর্তি রোগীও হাসপাতালের ওয়ার্ডের বেড, ফ্লোর ভরে গিয়ে সিড়ির নীচে, লিফটের কাছে চাদর বিছিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে।
এই আট দশ গুণ বাড়তি রোগীর চাপ শামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নবীন চিকিৎসক গণ। এদের নিয়মিত প্রেশার মাপা, ডেঙ্গুর ডেন্জার সাইন দেখা, সে অনুযায়ী ফ্লুইড ম্যানেজমেন্টে ইন্টার্ণ চিকিৎসক, অনারারী চিকিৎসক, সি এ, আই এম ও রা এতোটাই ব্যস্ত সময় পার করছে যে মর্ণিং ফলোআপ দিতে গিয়ে কতো চিকিৎসক যে সকালের নাস্তা করতে পারছে না, রাউন্ড পরবর্তী ফাইল ওয়ার্ক, সুস্থ রোগী ডিসচার্জ, খারাপ রোগীর ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট করতে গিয়ে কতো চিকিৎসকের যে দুপুরের খাওয়া হচ্ছে না আসরের আযান হয়ে গেলেও, এই আর দুটো বেডের কাজ করেই ওয়াশ রুমে যাবো করতে করতে গত এক ঘন্টায় ওয়াশ রুমে যাওয়া হয়নি কতো চিকিৎসক এর, তার খবর কি কেউ রেখেছে।
আট দশ গুণ রোগীর চাপ সামলানোর জন্য দ্বিগুণ চিকিৎসক ও কি নিয়োগ দেয়া হয়েছে কোন সরকারী হাসপাতালে। আটশো রোগী সামলানোর জনবল দিয়ে তিন চার হাজার রোগী যে চিকিৎসক রা অত্যন্ত সফলতার সাথে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বাড়ী পাঠাচ্ছে, হাসি ফুটাচ্ছে রোগাক্রান্ত মায়ের সন্তানের মুখে, তার জন্য প্রধাণ মন্ত্রী বা রাস্ট্রপতির পক্ষ হতে অথবা ঢাকার দুই অভিভাবক দুই মেয়রের পক্ষ হতে আজ পর্যন্ত চিকিৎসক সমাজকে একটাও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে..???
ধন্যবাদ তো দূরের কথা ক্লান্ত বিধ্বস্ত হয়তো রোগীর চাপে সময় মতো খেতে না পারা চিকিৎসক যখন ভর্তি প্রয়োজন নয় এমন রোগীকে ফেরত পাঠাচ্ছে তার উপর টিভি ক্যামেরা নিয়ে হামলে পড়ছে সাংবাদিক নাম ধারী মানুষ রুপী কতগুলো পশুর দল। উদ্দেশ্য মূলক ভাবে হাসপাতালের সামনে গাড়ী হতে নামা থেকে শুরু করে রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের ভিতরে াচলাবস্থা সৃস্টি করে ডাক্তারকে উস্কানীমূলক আচরন দ্বারা উত্তেজিত করে তার ভিডিও করে ফেসবুকে ভাইরাল করে চ্যানেলের কাটতি বাড়ানোর চেস্টা করছে। চ্যানেল ভিত্তিক এসব হলুদ সাংবাদিকদের মানসিকতা কতোটা নোংরা হতে পারে, যে সৈনিকরা নাওয়া খাওয়া ভুলে তাদের ই মা বোনদের চিকিৎসায় অহর্নিশি সদা জাগ্রত, সদা সতর্ক তাদেরকে নিয়েই নেগেটিভ ভিডিও ভাইরাল করে ব্যবসায়িক স্বার্থ সিদ্ধি করছে।
আর কতো নীচে নামবি তোরা, তোদের অসুস্থ মা বোন সন্তানদের যারা দিন রাত জেগে সুস্থ করে তুলছে তাদের নিয়েও ব্যবসা করবি..?? তোদের বিবেক কি একটুও জাগ্রত হয় না...??
আর কেমন জাতি তোরা যে সে সব ভাইরাল ভিডিওতে অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করিস তোরা এতো বড়ো মহামারী শামাল দেয়া সেসব বীর সৈনিক দের।জীবনেও তোরা নিসনি চিকিৎসা কোন সরকারী হাসপাতালে..?? আজ তোর মা-বোন-সন্তান অসুস্থ হলে যখন দৌড়াবি সরকারী হাসপাতালে তখন কি একটুও লজ্জা লাগবে না তোদের..??
এ বিশাল রোগীর চাপ শামাল দেয়া ইন্টার্ণ আর মেডিকেল অফিসার রা কি এক টাকাও বেতন বেশী পাবে, পাবে কি অনারারীরা বাড়তি একটি টাকাও...???
ওরে কৃতঘ্ন জাতি কবে তোরা শিখবি উপকারীর উপকার স্বীকার করতে, কবে তোরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে শিখবি উপকার পেয়ে..???
ঢাকার বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক গণ, আপনারা আপনাদের এ কর্মযজ্ঞের কোন প্রতিদান আশা করবেন না। এ জাতি প্রতিদান দিতে ভূলে গেছে ভালো কাজের, এ জাতি প্রতিদান দিতে ভূলে গেছে উপকারের।
ক্লান্তি_আমার_ক্ষমা_করো_প্রভু
আপনার মতামত দিন: