Ameen Qudir
Published:2019-07-31 06:30:01 BdST
ফার্নিচার ব্যবসায়ী এইচএসসি পাস :১৫ বছর ধরে এমবিবিএস ডাক্তার
ডেস্ক ও সংবাদদাতা
___________________________
এমবিবিএস পাশ করে ব্যবসাও করা যায়। তাই বলে
এইচএসসি পাস করে ফার্নিচার ব্যবসা এবং এমবিবিএস পাশ ডাক্তার সেজে ডাক্তারি ; হ্যাঁ, এটা বাংলাদেশেই সম্ভব। এই মহাদুর্নীতির খবরগুলো কমই আসে। সিভিল সার্জন অফিসের ম্যাজিস্ট্রেসি না থাকায় হাজারো নকল ডাক্তার রমরমা ক্লিনিক ব্যবসায় করে যাচ্ছেন। এমনই একজন মোস্তাক ।
নামের সঙ্গে মিল থাকা সরকারি নিবন্ধনকৃত (২৬৬৩৩ নং) ডাক্তার মো. মোস্তাক আহমেদের কোড ব্যবহার করে নিজেকে এমবিবিএস (ডি-অর্থো), পিজিটি (ডি-অর্থো), পিজিটি (হৃদরোগ), চিফ মেডিকেল অফিসার, হাড়জোড়া, বাত ব্যথা, মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দেন করিম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে প্যাড ছাপিয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দিয়ে বিগত ১৫ বছর ধরে ডাক্তার সেজে রোগী দেখে আসছেন। বসেন বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নিউ মুক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে রোগী দেখার সময় ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার মোস্তাক আহমেদ করিমকে আটক করে র্যাব-১১।
২৯ জুলাই ২০১৯ রাত ৯টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইল মোড় হক সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে তাকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় পাঁচজন রোগী উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে দুজন ছিলেন পুরোনো রোগী। তারা আসছেন ডাক্তারের দেওয়া এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে।
করিম কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার সালেহাকান্দি এলাকার মৃত রহিম মণ্ডলের ছেলে। ভাড়া বাসায় থাকেন ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায়।
এইচএসসি পাস করে একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করতেন মোস্তাক আহমেদ করিম। পরে চাকরি ছেড়ে শুরু করেন ফার্নিচার ব্যবসা। সফল হতে না পেরে পানি বোতলজাত করে পাড়া মহল্লার দোকানে নিজেই সরবরাহ করেন। কিন্তু পানি ব্যবসাও আলোর মুখ দেখছে না। তাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি সরবরাহ করে বিকেলে কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে এমবিবিএস ডাক্তার সেজে রোগী দেখেন তিনি। ফি নেন দুইশ টাকা।
নিজের দোষ স্বীকার করে ভুয়া ডাক্তার করিম জানান, তিনি ডাক্তার না।
এমন কাজ আর জীবনে করবে না- দুই কান ধরে কথা দিয়ে তাকে আটক না করে অর্থ জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়ার জন্য র্যাব কর্মকর্তাদের অনুরোধও করেন এই ভুয়া ডাক্তার।
সিদ্ধিরগঞ্জের আটি ভূমিপল্লীর আবদুল আলীম ও পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার শাহজালাল জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের প্রলোভনে পড়ে ভালো ডাক্তার মনে করেই মোস্তাক আহমেদ করিমের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন।
তারা বলেন, প্রথম দিনে কিছু ওষুধ আর কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছিল। সেই সব পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আবার ডাক্তারকে দেখাতে তারা এসেছেন। রিপোর্ট দেখানোর আগেই র্যাব অভিযান চালায়।
র্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিতে নিশ্চিত হয়ে নিউ মুক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এক সময়ের ফার্নিচার ব্যবসায়ী এইচএসসি পাস ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার মোস্তাক আহমেদ করিমকে রোগী দেখার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আপনার মতামত দিন: