Ameen Qudir

Published:
2019-05-10 22:04:44 BdST

ছুরি-কাঁচি দাও হাতে নারী ডাক্তারকে ধাওয়া: এসবই হাসপাতালে ঢুকে সস্তা হিরোগিরির কুফল


এটা উপমহাদেশের আরেক নারী ডাক্তার ডিউটি কালে আক্রান্ত হওয়ার ছবি। ফাইল থেকে নেওয়া।



আমিন কাদির
_______________________

প্রতি শনিবার হাসপাতালে গিয়ে ছুরি-কাঁচি হাতে তুলে নেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং৷ আর বাংলাদেশে ছুরি-কাঁচি দাও হাতে নারী ডাক্তার সহ স্বাস্থ্যসেবার প্রাণরক্ষকদের দিকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে রাস্তার গুন্ডা, ছিচকে সন্ত্রাসী। হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তারকে গালাগাল করে এইট পাশ পাড়া মহল্লার উঠতি গুন্ডা বদমাশ।
এসবই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। এ কাজে সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এই ভয়াবহ অবস্থা বাড়তেই থাকবে।
বিশৃঙ্খল হবে স্বাস্থ্য সেক্টর।
বৃহষ্পতিবার সিলেটের ঘটনা তো ভয়াবহ। সুচিকিৎসার জন্য নিয়ম মেনে চলা এবং এক সঙ্গে কম মানুষ আসার সবিনয় অনুরোধ করায় সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন ডিউটি নারী চিকিৎসক এক রাজনৈতিক পতাকাধারী উগ্র মারমূর্তি যুবকের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ সংক্রান্ত প্রামান্য ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে ও ফেসবুকে। ডাক্তারের সঙ্গে সাথে নিরাপত্তা প্রহরী ও লিফটম্যান লাঞ্চিত হন ।
এই বিখৎসতার দায় কে নেবে।
বরং দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে তামাশা বানানো হয়েছে। যে কেউ হাসপাতালে ঢুকে গুন্ডামি মাস্তানি করছে। হিরোগিরিতে পেয়ে বসেছে সবাইকে। তার ফল হল এসব ছিচকে গুন্ডামির ঘটনা।
রাস্তার গুন্ডাদেরও হিরোগিরিতে পেয়ে বসেছে। ওরা ভাবছে, রাষ্ট্র সরকার তো ডাক্তারদের বিরুদ্ধে । তো এসো সবাই হিরোগিরি করি। আমরা সবাই রাজা। সবাই হিরো। হিরোগিরি করার জন্য নিরীহ ডাক্তার আর হাসপাতাল তো আছেই।
এর ফল হবে ভয়াবহ। আগামীতে দেশে ডাক্তার তো মিলবেই না। কলকাতা , বেঙ্গালুরু , চেন্নাই থেকেও হাত পা ধরে ডাক্তার ভাড়া করে আনা যাবে না। গুন্ডাপান্ডাকে বাঙালি, কন্নড়, তামিল , মাদ্রাজী সবাই ভয় পায়। ডাক্তাররা তো আর রাস্তার গুন্ডা নয়। মহল্লার মাস্তান নয়। তারা ভয় পেয়ে আসবে না।
তখন বাংলাদেশের নীচু তলার রোগীদেরও কলকাতা, চেন্নাই, সিঙ্গাপুর , ব্যাঙ্গালুরু ছুটতে হবে।
অথচ এই উপমহাদেশের শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র ভুটান কি অনন্য সব নজীর স্থাপন করছে। তিনি বাংলাদেশের মেডিকেল থেকেই পাশ করা ডাক্তার । এখন প্রধানমন্ত্রী।

হাসপাতালে একদিন রোগী দেখেন স্বয়ং ভুটানের ডাক্তার প্রধানমন্ত্রী । ভুটান ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র হয়েও বদলে দিচ্ছে উপমহাদেশের সংস্কৃতি । শেখাচ্ছে সভ্যতা, ভব্যতা, কৃষ্টি , মানবিক গুনাবলী। ।

ডাক্তারি এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব দুটোকেই এক চোখে দেখেন শেরিং৷ এক মনে করার একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী৷ হাসপাতালে একজন ডাক্তার রোগীকে সারাতে ঔষধ দেন কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখেন৷ প্রধানমন্ত্রীর কাজও একই, কারণ, তাঁকে সরকারের বিভিন্ন পলিসি পরীক্ষা করে দেখতে হয়, সার্বিক অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতে হয়৷


সপ্তাহের পাঁচদিন ব্যস্ত থাকেন দেশ পরিচালনায়৷ ডাক্তারি পেশার প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার টানে সপ্তাহের একটি দিন চলে যান হাসপাতালে৷

লেখক আমিন কাদির। সিনিয়র সাংবাদিক।

 

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়