Ameen Qudir

Published:
2019-04-29 20:25:09 BdST

" কোম্পানি গুলো কোয়াকের হাত দিয়ে বড় বড় এন্টিবায়োটিক বিক্রি করে "




ডা. অসিত বর্দ্ধন
_______________________________

এন্টিবায়োটিক সম্পর্কিত রিট ও এর বাস্তবায়ন
গত কয়েকদিন ধরে সঙ্গত কারণে সচেতন ডাক্তার সমাজ বেশ উৎফুল্ল। একজন ব্যারিস্টার সবার জন্য উপকারী একটা কাজ করেছেন যেটা আসলে সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যঅধিদপ্তর, আমাদের মেডিকেল সঙ্ক্রান্ত বিভিন্ন সোসাইটি , চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় পেশাজীবী সংগঠন বিএমএ, চিকিৎসকদের দলীয় পেশাজীবী সংগঠনগুলো, বরেণ্য চিকিৎসক, চিকিৎসক রাজনীতিবিদ , বিভিন্ন এনজিও সহ যে কেউ করতে পারতেন।অনেক আগেই পারতেন। কন্তু করেননি। তারপরেও এটা হয়েছে , তাই সবাই বেশ আটখানা।

রিট কিম্বা হাইকোর্টের আদেশ মানে আদেশ বাস্তবায়ন নয়। বিচার বিভাগ সঙ্ক্রান্ত একটা মামলায় ( মাসদার হোসেন বনাম সরকার সম্ভবত ) হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, সম্ভবত আপিল ডিভিশনের ফুল বেঞ্চ বিচারপতির নেতৃত্বে কয়েকবার এটর্নি জেনারেল কে সময় চাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন, কিন্তু সরকার অনেক বছর ধরে এটাকে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। এই প্রক্রিয়ায় সমস্ত বিচার বিভাগের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল, কিন্তু বিভিন্ন সরকারের ( বিএনপি, আওয়ামী লীগ, তত্ত্বাবধায়ক ) অনীহার ফলে রায়ের প্রায় ১২ ( ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ ) বছর পর তা বাস্তবায়িত হয়। এই বলার উদ্দেশ্য হল যে , রিট , রুল যেমন সহায়ক শুধু রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে এন্টিবায়োটিকের বিক্রি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সদিচ্ছা, বাস্তাবায়ন কৌশল, ডাক্তারদের অংশগ্রহণ, ফারমাসিউটিকাল কোম্পানিগুলোর সহায়তা, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ওষুধের দোকানগুলোর অংশগ্রহণ, ঔষধ অধিদপ্তরের কড়া নজরদারি প্রয়োজন। অপরপ্রান্তে দরকার জনগণের সচেতনতা। এতগুলো পক্ষকে এক ছাদের তলায় আনতে পারা গেলে তা হবে বিপ্লব।
আমাদের দেশে প্রত্যেক জেলায় প্রশাসনিক কাজ হয় সিভিল সার্জনদের নেতৃত্বে। সেখানে উদ্যমী ও সৎ নেতৃত্ব প্রয়োজন। তাদের বর্তমান কাজের ভিড়ে এরকম একটি ভারী কাজ কিভাবে হবে সেটা ভেবে দেখা দরকার।
আমার মনে হয় আমাদের একটি সমন্বিত অনলাইন সফটওয়্যার দরকার যেখানে, হাসপাতাল, চিকিৎসক , ওষুধের বিপণন কারি , ফারমাসিউটিকাল কোম্পানি একই সাথে সংযুক্ত থাকবেন যেন প্রেস্ক্রাইব করা ওষুধের সাথে বিক্রিত ওষুধের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় প্রেস্ক্রিস্পশানের বাইরে কত ওষুধ বিক্রি হচ্ছে।
ঔষধ কোম্পানি গুলো কোয়াকের হাত দিয়ে বড় বড় এন্টিবায়োটিক বিক্রি করে। এদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা থামানো কঠিন। গ্রামের কোয়াকেরা ওষুধ কিনে আনে বড় বড় ফার্মেসি থেকে, এখানেও এন্টিবায়োটিক বিক্রি নিয়ন্ত্রিত করা যেতে পারে।

যেভাবে মরফিন গোত্রের ব্যাথা নিরাময়কারি ওষুধ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার ফলে বেশিরভাগ হাসপাতাল অপিয়েড লাইসেন্স নেয় না, কিন্তু কালোবাজারে কেনে, এবং ওষুধ প্রশাসনের লোকেরা গাড়ি বাড়ি কেনার সুযোগ পায়, আর জনগণকে কখনো ১০০ গুন দামে কিনতে হয় পেথিডিন, তেমনি আবার নিয়ন্ত্রণ করতে যেয়ে এন্টিবায়োটিকের দাম না আকাশছোঁয়া হয়ে যায়!
সত্যি সত্যি প্রেস্ক্রিপশান ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করতে গেলে যে ধরনের সফটওয়্যার প্রয়োজন, BDEMR এ সে ধরনের কার্জকারিতা/সক্ষমতা আছে। কেউ আগ্রহী হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সরকারের উঁচু পর্যায়ে পৌছা আমার পক্ষে কঠিন, কেউ সাহায্য করলে খুশি হব।
______________________________

ডা. অসিত বর্দ্ধন । পাঠক ধন্য সুলেখক। তার তৈরী করা অ্যাপস ডাক্তারদের কল্যাণে এখন জনপ্রিয়।
কানাডায় কর্মরত এনেস্থেসিওলজিস্ট, BDEMR নামের সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়