Ameen Qudir

Published:
2019-02-17 23:14:44 BdST

৪ সুস্থ তরুণকে হাসপাতালে নিয়ে 'মাদকসেবী' হিসেবে লিখে দিতে ডাক্তারকে চাপ: অত:পর..



সংবাদদাতা
_________________________

  আটকের পর হাসপাতালে নিয়ে আসা চারজন সুস্থ তরুণকে মাদকসেবী উল্লেখ করে প্রেসক্রিপশন না দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসকের সঙ্গে পুলিশ সদস্যের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই হল উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের চিত্র।

সেদিন রাতে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক ডা. আবু শাহাদাৎ মাহফুজ। এ সময় শিবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সিরাজের নেতৃত্বে পুলিশ চার ব্যক্তিকে আটকের পর ওই হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এসময় এসআই (উপপরিদর্শক) সিরাজ ওই চারজনকে মদ্যপায়ী হিসেবে ব্যবস্থাপত্র দিতে চিকিৎসককে চাপ দেন। কিন্তু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মদ্যপানের আলামত না পাওয়ায় তাদের মাদকসেবী হিসেবে ব্যবস্থাপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান ডা. মাহফুজ।

এ নিয়ে ডাক্তার মাহফুজের সঙ্গে এসআই সিরাজের কথাকাটাকাটি হয়। পরে এসআই সিরাজ আটককৃত চারজনকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চলে যান।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার চিকিৎসক আবু শাহাদাৎ মাহফুজ গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন তিনি। বলেন, শুক্রবার রাতে উপ-পরিদর্শক সিরাজ চার ব্যক্তিকে হাতকড়া পরা অবস্থায় নিয়ে এসে তার কাছে এমসি চান এবং অ্যালকোহলিস্ট (মাদকসেবী) হিসেবে ব্যবস্থাপত্র দিতে বলেন। কিন্তু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওই চারজনের মদ্যপানের কোনো আলামত না পাওয়ায় তা দিতে অস্বীকৃতি জানান চিকিৎসক শাহাদাৎ মাহফুজ।

এরপর এসআই তার মোবাইল ফোন থেকে সম্ভবত শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) র সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিছুক্ষণ ওসি তাকে বলেন, ‘আপনি পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে সহযোগিতা করছেন না।’ এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

এরপর এসআই সিরাজ আটককৃতদের সঙ্গে নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে তিনি চিকিৎসক আবু শাহাদাৎ মাহফুজের নাম পদবী মোবাইল নম্বর এবং কততম বিসিএস ব্যাচ তার তথ্য কাগজে লিখে দিতে বলেন। এরপর তিনি তা লিখে দেন।

বিষয়টি নিয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আকতারুজ্জামান বলেন, চিকিৎসক মাহফুজ প্রাথমিকভাবে বাহ্যিক পরীক্ষা করে কোন আলামত পাননি। তাই তিনি সে বিষয়ে কোন ব্যবস্থাপত্র দেননি। পরে ডা. মাহফুজ তাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিকদার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ফার্স্টএইড নিতে গিয়ে ডাক্তারের দেরি দেখে তাড়াতাড়ি আটকৃতদের চিকিৎসা দেয়ার অনুরোধ করা হয়। একপর্যায়ে এই নিয়ে উভয়ের মধ্যে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে, এরচেয়ে বেশি কিছু ঘটেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সায়ফুল ফেরদৌস মো. খায়রুল আতাতুর্ক সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ কয়েকজন মাদকসেবীকে নিয়ে এসেছিল। তারপর পুলিশ তাদের মাদকসেবী হিসেবে লিখে দিতে বলেছে। এই নিয়ে ইগো প্রবলেম থেকে হয়তো কথা কাটাকাটি হয়েছে। ঘটনার পর ওই চিকিৎসক তাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়