Ameen Qudir

Published:
2016-12-18 01:42:33 BdST

ল্যাব-এইডে ডা.শাম্মীর অকাল মৃত্যুর ঘটনাক্রমের পোস্ট মর্টেম


 

 

 

 

ডা. সাব্বির খান
______________________________

বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা: নাঈমুক হক শাম্মীর CAG ( করোনারী এনজিওগ্রাম) করার জন্য ল্যাব এইড হাসপাতালের প্রিপ্যারেশন এবং ঘটনাক্রমের কিছু সমীকরণ ( সেখানে উপস্থিত ডা: শাম্মীর কিছু শুভানুধ্যায়ী চিকিৎসক এবং ল্যাব এইডে কর্মরত/ দায়িত্ব পালনরত কিছু চিকিৎসক এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে জানা তথ্যের ভিত্তিতে------

#কার্ডিওলজিষ্ট অধ্যাপক ডা: আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ( K41, DMC) ডা: শাম্মীর চিকিৎসক হিসাবে CAG করেন। কয়েক বছর আগে ইউনাইটেড হাসপাতালে ডা: শাম্মীর বাবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় শাম্মী ইউনাইটেডে না গিয়ে ল্যাব এইডে গিয়েছিলেন। অথচ....!

# ওটিতে কোন এন্যাস্থেটিস্ট উপস্থিত ছিলেন না। যদিও এধরনের হাই প্রোফাইল রোগীর ক্ষেত্রে তো বটেই, যে কোন রোগীর ক্ষেত্রেই উপস্থিত রাখা বাঞ্চনীয়। না হলে কিসের ক্যাথ ল্যাব আর কি ধরনের ও টি ল্যাব এইডের?

# এ ধরনের জরুরী ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যাবহারের জন্য কোন ভেন্টিলেটর প্রস্তুত ছিল না। এমনকি অক্সিজেন দিতেও দেরী করেছে তারা। এসব সিচুয়েশনে ( অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে) ১ মিনিটের দেরীও রোগীর ভাইটাল ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়ায়; ডা: শাম্মী তো মরেই গেল!

# কোন ডি-ফিব্রিলেটর ছিলো না পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য।

# ডা: শাম্মীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় ডা: ওয়াদুদ যখন এন্যাস্থেটিষ্ট ও ভেন্টিলেটরের জন্য চেচামেচি শুরু করছেন ওটি তে, তার প্রায় ৬/৭ মিনিট পর এন্যাস্থেটিষ্ট ধীরে সুস্থে খুব স্বাভাবিকভাবে ওটি তে ঢোকেন। এন্যাস্থেটিস্ট ওটিতে উপস্থিত থাকলে তাৎক্ষণিক ভাবে ইনটিউবেট করে অক্সিজেন দিয়ে ডা: শাম্মীর জীবন রক্ষার চেষ্টা করতে পারতেন, যেটা এন্যাস্থেটিস্ট করেছেন ৬/৭ মিনিট দেরীতে ওটিতে এসে এবং আরো কিছু সময় ব্যায়ের পরে। এন্যাস্থেটিষ্ট এর দেরীর কারনে ওটিতে উপস্থিত চিকিতসকরাই নাকি ডা: শাম্মীকে ইনটিউবেট করেন ( ডা: ওয়াদুদ এর ভাষ্য এটা) । হয়তোবা এই delay না হলে মৃত্যুর পথ থেকে ফিরিয়ে আনা যেত ডা: শাম্মীকে।

# উপরের ঘটনাক্রম definitely proves the inadequate preparation of Labaid for CAG. This negligence might be proven as a criminal offence in future. আর এজন্যই, অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ ইনফর্মেশন, পোষ্ট মর্টেম ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহন বাঞ্চনীয়।

# এখন পর্যন্ত ল্যাব এইড কোন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা দেয় নি ডা: শাম্মীর দু:খজনক মৃত্যুর ঘটনার।

# ডা: ওয়াদুদ ল্যাব এইড থেকে চলে গেছেন ঘটনার পর পরই। ডা: শাম্মী শুধু তার রোগীই না, তার ১ বছরের সিনিয়রও ছিলেন। একজন সিনিয়র কলিগের স্ত্রীর কাছে তার স্বামীর ( যিনি তার হাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দূর্ভাগ্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন) মৃত্যুর কোন ব্যাখ্যা দেন নি ডা: ওয়াদুদ। আমি ডা: ওয়াদুদের সাথে কথা বলে এ'নিয়ে আমার এবং ডাঃ শাম্মীর পরিবার ও তার শুভানুধ্যায়ীদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছি তাকে। এবং ঘটনার সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবী করেছি তার কাছে। সেই সাথে তাকে জানিয়েছি, ল্যাব এইডের কাছেও আমরা ঘটনাক্রমের ব্যাখ্যা চাই।

# ল্যাব এইড সংশ্লিষ্ট কিছু চিকিৎসক প্রেশার বেড়ে গিয়ে (২২০/১২০) পালমোনারী ইডিমা ডেভেলপ করেছিল বলে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন উপস্থিতভাবে এবং এখনও সে কথাগুলোই বলে চলেছেন ব্যাক্তিগতভাবে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে, সেটা কার্ডিওলজিষ্টরা গ্রহনযোগ্য মনে করছেন না। তাদের ভাষায় এটা খোড়া যুক্তি। এটারও সদুত্তর সংশ্লিষ্টদেরকেই দিতে হবে।

# ডা: ওয়াদুদ নিজেও দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ১ জন চিকিৎসক নেতাকে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানা গেছে, সেটাও কার্ডিওলজিষ্টদের কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয় নি। এক ই ব্যাখ্যা তিনি আমাকেও দিয়েছেন। আমি কার্ডিওলজিষ্ট নই বিধায় সে ব্যাপারে আমার কোন মন্তব্য করা সমীচিন নয়।

# আর, CAG র পূরো ভিডিও রেকর্ড ল্যাব এইড কতৃপক্ষ সরবরাহ করুক ডা: শাম্মীর পরিবারের কাছে ( এখনো সেটা করেছে কি না, জানি না আমি), তারপর এটা নিয়ে এনালাইসিস করা যাবে।

# ল্যাব এইড এবং ডাঃ ওয়াদুদের ভুলে গেলে চলবে না, তারা একটা ডেলিকেট ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। চিকিৎসকেরা কিন্তু অনেক সংগঠিত। ঢাকা সহ সারা দেশে ডা: শাম্মীর ওয়েল উইশার চিকিতসকের অভাব নেই। এবং যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষার পর সেইসব চিকিতসক সহ দেশের চিকিতসকেরা নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত নেবেন, ভবিষ্যতে কি করতে হবে তাদেরকে। তাছাড়া, দেশের সাধারন মানুষও বিষয়টা জেনেছে। অতএব, সময় থাকতে ডা: ওয়াদুদ এবং ল্যাব এইড আমাদেরকে গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা দিয়ে সন্তুষ্ট করুক, সেটাই আমাদের সববার প্রত্যাশা।

## বলেছিলাম আমি অনেক কিছু জেনেছি। সোশ্যাল মিডিয়াতে সব কিছু বলা যায় না। আরো কিছু বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। কিছু তথ্য-প্রমানও এসেছে, আসছে এবং আসবে আমাদের হাতে। অপেক্ষায় থাকি!

______________________


ডা. সাব্বির খান

Member, Central Executive Committee, SWACHIP at Swadhinata Chikitsak Parishod ( SWACHIP )
President at Moulvibazar BMA
Former Medical Officer at Government of the People's Republic of Bangladesh, Employees.
Former Vice President at VP, Sylhet MAG Osmani Medical College Students Union

আপনার মতামত দিন:


ক্লিনিক-হাসপাতাল এর জনপ্রিয়