Ameen Qudir
Published:2018-12-22 23:50:57 BdST
লাশ জিম্মিব্যাঙ্ককের হাসপাতাল লাশ জিম্মি করলে দোষ হয় না, ঢাকায় কিছু হলেই লঙ্কাকান্ড কেয়ামত
ডা. আব্দুল্লাহ মাসউদ
__________________
ব্যাঙ্কক সিঙ্গাপুরের কোন হাসপাতাল টাকার জন্য লাশ জিম্মি করলে কোন রা শব্দ নেই। কিন্তু বাংলাদেশের কোন থ্রি বা ফোর স্টার হাসপাতাল বকেয়া টাকার জন্য লাশ আটকালেই সেখানে ভাঙচুর , লঙ্কাকান্ড কেয়ামত হত । তখন অনলাইন সহ সকল মাধ্যমে প্রচন্ড অনুভূতিশীল লোকজনের ডাক্তার বিরোধী জেহাদ শুরু হয়ে যেত।
যদিও ব্যাঙ্কক সিংগাপুর , মালয়েশিয়া র হাসপাতাল বা ঢাকার স্টার হাসপাতালের এই লাশ জিম্মি কাজের জন্য ডাক্তারদের কোন সম্পর্ক নেই। লাশ আটকায় হাসপাতাল প্রশাসন। প্রশাসনে নন মেডিকেল ব্যবসায়ীরাই থাকেন। ডাক্তাররা নয়। কিন্তু পাবলিকের সকল ক্ষোভ জেহাদ গিয়ে পড়ে ডাক্তারের ওপর। তাদের গালিগালাজ করে জীবন্ত লাশ বানানো হয়।
এই কথাগুলো আবার আলোচনায় থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককের হাসপাতালে একজন সিনেমা কিংবদন্তির দু:খজনক প্রয়াণের পর লাশ এক সপ্তাহের বেশী সময় সেখানে থাকার কারণে। অভিযোগ আছে, বকেয়া টাকার জন্য ওই মৃতদেহ এতদিন আটকে রাখা হয়েছিল।
এতবড় কান্ড; বাংলাদেশের এতবড় সেলিব্রেটির মহাপ্রয়াণ নিয়ে শোকের উচ্ছাস প্রবল ভাবে দেখা গেল। যেটা হওয়ারই কথা প্রিয় মানুষের প্রয়াণে মানুষ তো কাঁদবেই। কিন্তু তার লাশ যে এতদিন ওই ফাইভস্টার আটকে রাখল টাকার জন্য , বলে যে অভিযোগ; তা নিয়ে কাউকে টু শব্দটি করতে দেখা গেল না।
এই হচ্ছে বাংলাদেশী জেহাদী দের দ্বিচারীতা। তারা এই কাজ ঢাকার কোন হাসপাতাল করলে হাসপাতাল ভাংচুর করতো। অনলাইনে হাসপাতালকে প্রায় গুড়িয়ে দিত। মামলা হত। ফেসবুকে লাইভে ডাক্তারদের গোষ্ঠি তুলে অকথ্য গালি ও নাকি কান্না করা হত।
ওপার বাংলাতেও একই চিত্র। সেখানে সম্প্রতি কলকাতায় বেলভিউ এর সিইও প্রদীপ ট্যান্ডনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল ব্যাঙ্কশাল আদালত৷
জানা যাচ্ছে গত ১৬ই আগস্ট ২০১৬ স্টেন্ট লাগানোর জন্য এক ব্যক্তি ভর্তি হন৷ সঞ্জয় পোদ্দার নামে ওই ব্যক্তিকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার প্যাকেজ দেয় হাসপাতাল৷ কিন্তু ৫৫ দিন হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভরতি থাকার পর ২০১৬ সালের ৭ই আগাস্ট মৃত্যু হয় তার৷ তারপর বিচিত্র অভিযোগ এনে মামলা। কলকাতাতেও লোকজন বেলভিউ নয়, ডাক্তারদের শাপশাপান্ত করছে।
___________________
ডা. আব্দুল্লাহ মাসউদ । প্রাক্তন ঢাকা মেডিকেল কলেজ।
আপনার মতামত দিন: