Ameen Qudir
Published:2018-12-09 22:34:35 BdST
নিজের ও পরিবারের জীবন বাঁচাতে প্লিজ ডাক্তার ও স্বাস্থ্য সেবা সহযোগীদের পার্থক্যটা জানুন
ডা. নাসিমুন নাহার মিম্ মি
_______________________________
আমার নন মেডিকেল বন্ধুদের এবং ভালোবাসার ফলোয়ারদেরকে একটা কথা বলতে চাই---------
প্লিজ ডাক্তার (এমবিবিএস, বিডিএস) এবং
ফিজিওথেরাপিস্ট এবং
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, নার্স/ ব্রাদার , ওটি বয়, ওষুধ বিক্রেতা, ওষুধের দোকানের মালিক, ক্লিনিক বা হাসপাতালের মালিকের মধ্যে পার্থক্যটা কি জানুন অন্ততঃ নিজের এবং পরিবারের জীবন বাঁচাতে ।
পৃথিবীতে প্রতিটা পেশাই সম্মানের । পরিশ্রম, যোগ্যতা আর সততা দিয়ে করা কোন কাজই ছোট না। কিন্তু আমি যেমন এমবিবিএস পাশ করে নিজের নামের আগে সাংবাদিক/ মডেল/ ব্যারিস্টার/ ইন্জিনিয়ার মিম্ মি লিখতে পারি না। ঠিক তেমনি একজন ওষুধ বিক্রেতা বা ক্লিনিকের মালিক অথবা ওটি বয় নিজেকে ডাক্তার বলতে পারে না।
এটা ক্রাইম।
মানুষ মেরে ফেলার মতো অন্যায় ঘটে যেতে পারে এই ক্রাইমে। তাই আমাদের সবার উচিত সচেতন হওয়া ।
নিজের কষ্টার্জিত টাকা পয়সা খরচ করে কেন আপনি ভুয়া ডাক্তার দেখাবেন ? আপনি নিশ্চয়ই এত বোকা না?
নিজে সচেতন হন । আশেপাশের সবাইকে সচেতন করুন। মানুষ হিসেবে চিকিৎসা পাওয়া আপনার মৌলিক অধিকার। নিজের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন এবং তা আদায় করে নিন চিকিৎসকের কাছ থেকে। আমাদেরকে( চিকিৎসক) বাধ্য করুন আপনাদের সাথে যথেষ্ট সময় নিয়ে রোগ সংক্রান্ত কথা বলতে। আপনারা টাকার বিনিময়ে আমাদের মেধা আর সময় কিনে নিচ্ছেন------- এটাই কিন্তু চরম সত্য কথা ।
সময় এসেছে চিকিৎসা কে শুধু সেবার ভাবনাতে আটকে না রেখে পাশাপাশি পেশা হিসেবে ভাবার প্রাকটিস করা রোগী এবং চিকিৎসক দু পক্ষেরই।
আমাদের দেশের রোগীদের অন্যতম প্রধান অভিযোগ বড় বড় ডাক্তাররা (স্যার ম্যামরা) কথা শোনেন না, সময় দেননা রোগীকে । আমি নিজে একজন চিকিৎসক হয়েও দুঃখের সাথে এই অভিযোগের সাথে সহমত পোষণ করছি। কিন্তু তাই বলে সাধারন মানুষরা টেকনোলজিস্ট কিংবা ওষুধের দোকানদারকে ডাক্তার ভেবে ভুল চিকিৎসা নিচ্ছে এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না।
চিকিৎসক হিসেবে আমাদেরও উচিত প্রফেশনাল হওয়া, ইথিকস মেনে চলা । যদিও পুরো দেশের অন্যান্য সেক্টরের মতো সিস্টেম জটিলতা চিকিৎসা খাতেও ভয়াবহ মাত্রা ধারন করেছে। আমাদের হাত পা মুখ এবং কখনো কখনোবা বিবেকটাও বোধহয় বাঁধা পরে যায় সিস্টেমের যাঁতাকলে !
তারপরও পরিবর্তন দরকার ভীষনভাবে ই।
#ফুটনোট --- আজ নিজের চোখে দেখলাম ফার্মেসীর দোকানদার একজন রোগীকে ঠান্ডা কাশির জন্য azithromycin (500) দিচ্ছে দিনে দুবার খেতে সাতদিনের জন্য !!!! কি ভয়ংকর অবস্থা।
এটা একটা এন্টিবায়োটিক। রোগীর যে সমস্যা ছিল তাতে একটা করে ওষুধ তিনদিন বড়জোর পাঁচ দিনের জন্য যথেষ্ট হতো। এত রাগ উঠেছিল আমার তখন। আমি টিস্যু কেনার জন্য ফার্মেসীতে গিয়েছিলাম। রোগীকে নিজের পরিচয় দিয়ে বললাম এভাবে ওষুধ না নিয়ে বাবা হাসপাতালে যেয়ে প্রেসক্রিপশন লিখিয়ে ওষুন নেন। অযথা কেন নিজের টাকা নষ্ট করছেন আর শরীরকে কষ্ট দিচ্ছেন ? ফার্মেসীর দোকানদার সরি ম্যাডাম বলতে বলতে ফেনা বের করে দিচ্ছিল মুখ দিয়ে। ওনাকে বললাম --আপনাকে পুলিশে দেয়া উচিত জানেন ? এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নাম শুনেছেন জীবনে ? কি ক্ষতি করছেন সাধারন মানুষদের কটা টাকার জন্য । ছি......
_________________________
ডা. নাসিমুন নাহার মিম্ মি ।সিুলেখক।
আপনার মতামত দিন: