Ameen Qudir

Published:
2019-12-02 06:45:34 BdST

বধিরতা প্রতিরোধে যে জরুরি পরামর্শ দিলেন অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত



ডেস্ক / সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
___________________
বধিরতা প্রতিরোধে জরুরি পরামর্শ তুলে ধরলেন অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত । নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নানা রোগের জরুরি পরামর্শ তুলে ধরেন তিনি। ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ঢাকা ক্লাবের হামিদুর রহমান সিনহা লাউঞ্জে সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস এসোসিয়েশনের উদ্যোগে সার্ক অঞ্চলের বধিরতা প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথির বক্তব্যেও তিনি বধিরতা নিরাময়ে জরুরি বিষয়গুলো খুলে বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউর প্রাক্তন উপাচার্য ও উপমহাদেশ খ্যাত মানবসেবী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, বধিরতা প্রতিরোধে আগেভাগেই সনাক্তকরণ ও দ্রুত চিকিৎসার বিকল্প নাই। শিশুসহ সংশ্লিষ্ট সকলেরই যারা বধিরতার সমস্যায় আক্রান্ত তা যত দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে সেটাই হবে রোগীর জন্য মঙ্গলজনক। এজন্য পরিবারের সদস্যদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি মটিভেশনের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, একজন মানুষ কানে শুনতে না পেলে সে সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এবং একটি শিশু মূল স্রোত ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাই বধিরতার বিষয়টি অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা শুরু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সন্তানদের বিষয়ে তাঁদের অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া জরুরি।

সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস এসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চাপ্টার) সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদারের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসোসিয়েশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার।
অন্য বক্তারা নানা জরুরি বিষয় তুলে ধরেন।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার জানান, বর্তমান বিশ্বের ৫ শতাংশ মানুষ বধিরতা ভুগছেন। বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধিতার মধ্যে বধিরতা হল দ্বিতীয় বিশ্বে ৪৬৬ মিলিয়ন মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত। এখনই যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না যায় ২০৫০ সালে ৯০০ মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১০ জনের ১ জন বধিরতা আক্রান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ৯.৬ ভাগ জনগণ বধিরতার সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ১.২ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণ বধিরতা আক্রান্ত। ১৫ বছরের নিচে বধিরতায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ৬ শতাংশ।

তিনি বলেন, চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সমস্যা নিরাময়যোগ্য। দ্রুত সনাক্তকরণ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও কানের শুনার ব্যবস্থা করতে পারলে এসকল শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসা সম্ভব। আশার কথা হল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বধিরতা নিরূপণ ও প্রতিরোধের বিষয়টি প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে অন্তভুর্ক্ত করে জাতীয় নীতি ও কর্ম কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।

নাসিমা আখতার বলেন, বধিরতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা চালু, জনসচেতনা সৃষ্টি, জনবল তৈরি, বধিরতা অতিদ্রুত নিরূপণ কর্মকৌশলে ইত্যাদি গুরুত্ব পেয়েছে। শব্দ দূষণ, অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার, একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে কথা বলা, কানের জন্মগত ক্রটি কানের সংক্রমণ বধিরতা অন্যতম কারণ। ঢাকা শহরে শব্দদূষণের মাত্রা দিগুণেরও বেশি শব্দ দুষণের কারণে বধিরতার মধ্যে ১০.৬ শতাংশ মানুষ বধিরতায় আক্রান্ত হয়। মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারও বধিরতার অন্যতম একটি কারণ। মেবাইলে উচ্চস্বরে গান শুনা থেকে বিরত রাখতে হবে। লাউডস্পিকারে বেশিক্ষণ গান শুনলে কানে শোনার সক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, বধিরতা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচীও গুরুত্বপূর্ণ। হাম, মামস, রুবেলা ও মেনিনজাইটিস এর টিকা প্রদানের মাধ্যমে ১৯ শতাংশ শিশুর বধিরতা প্রতিরোধ করা যায়। কানে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণও একটি জরুরি বিষয়। বর্তমান সময়ে ০ থেকে ৫ বছর বয়সী বধিরতা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এজন্য দ্রুত সনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হিয়ারিংএইড স্থাপন জরুরি।

গোলটেবিলে বৈঠকে সার্ক অটোল্যারিংগোলজিস্টস এসোসিয়েশনের (বাংলাদেশ চাপ্টার) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এসএম খোরশেদ আলম মজুমদারসহ এসোসিয়েশনের অধ্যাপক এএইচএম জহুরুল হক সাচ্চু, অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. এসকে নূরুল ফাত্তাহ রুমী, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু হানিফ, অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু ইউসুফ ফকির, ডা. মোহাম্মদ ইদ্রিছ আলী, ডা. দেওয়ান মাহমুদ হাসান প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন। বিদেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার Prof. Dr. Yoon Woo Koh, যুক্তরাজ্যের Prof. Dr. Golam Moula Shahiduddin Ahmed, ভারতের Dr. Arun Dumar Agarwal, Dr. Sampath Chandra Prasad Rao, Dr. Meenesh Ravindra Juvekar, Dr. Sudipta Chandra, Dr. Subbiah Kannan, শ্রীলঙ্কার Dr. R. JMRG Jayaweera, নেপালের Prof. Dr. Nar Maya Thapa I Prof. Dr. Hari Bhattarai.

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়