Ameen Qudir

Published:
2019-02-22 00:22:04 BdST

ঢাকা মেডিকেল ও মিটফোর্ডে আজ লাশ আর লাশ: লাখো প্রাণের কান্না


এই করুণ মর্মন্তুদ দৃশ্য সহ্য করা যায় না

 

ডা. স্বীকৃতি সাহা
_______________________

এই করুণ মর্মন্তুদ দৃশ্য সহ্য করা যায় না । আগুনে দগ্ধ কয়েক শ হতাহত মানুষকে নিয়ে আসা হচ্ছে হাসপাতালে। সেখানে শোক আর শোক। কান্না আর কান্না। তাদেরকে ঘিরে লাখো প্রাণের কান্না। আহাজারি। সেই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে জরুরি কর্তব্যরত চিকিৎসক , নার্স স্বাস্থ্যসেবীরাও তাদের কান্নাকে ধরে রাখতে পারছেন না।
এই দৃশ্য এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। মিটফোর্ড হাসপাতালের । সেখানে চিকিৎসকরা ক্লান্তিহীন কাজ করে চলেছেন। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে তারা সর্বসাধ্যে কাজ করছেন।
পুরান ঢাকার শোকাবহ অগ্নিকান্ডে পুরো ঢাকাই এখন শোকপুরী। আর সেই নগরীর শোক সব এক স্রোতে গিয়ে মিশেছে হাসপাতাল; মানুষের জীবনরক্ষালয়ে।
সেখানে বাচাঁর আকুতি। বাচানোর জন্য ডাক্তারদের অবিশ্রাম প্রয়াস। সব মিলিয়ে শোকের এক নজিরবিহীন মাতম; লোকসেবার এক মহাআয়োজন। একমাত্র ঢাকা মেডিকেলেই আনা হয়েছে ৬৫ লাশ।
মিডিয়ার খবর আনুযায়ী
রাজধানী ঢাকার চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে গতকাল বুধবার রাতে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্রিফিংয়ে জানান, ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও লাশ থাকতে পারে। উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লাশের সংখ্যা জানা যাবে না বলছে ফায়ার সার্ভিস।

লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। পুড়ে যাওয়া লাশগুলো এখনো শনাক্ত করা যায়নি। লাশের সঙ্গে আসছেন স্বজন, আসছেন আহত মানুষ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি মর্মবিদারক।

 

একমাত্র ঢাকা মেডিকেলেই আনা হয়েছে ৬৫ লাশ।------------------

গতকাল রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবনে আগুন লাগে। রাতে পৌনে একটার দিকে পাশের কয়েকটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চকবাজার এলাকার গ্যাস লাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, রাজ্জাক ভবনের পাশে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে।

ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট রাত তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সরু গলি হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও ফায়ার সার্ভিস পানি সংগ্রহ করছে।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, সকাল আটটা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরও সময় লাগবে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ বলেন, উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর নিহত মানুষের সঠিক সংখ্যা জানা যাবে।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়