Ameen Qudir

Published:
2018-06-20 17:46:39 BdST

মেডিকেল কলেজে কেন এই বিষন্নতা, কেন এই আত্মহনন?




ডা. কামরুল হাসান সোহেল
__________________________

মেডিক্যাল কলেজগুলোতে সুইসাইডের হার আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের এই ব্যাপারে নজর দিতে হবে, শিক্ষকদের দায়িত্ব ও অনেক এইক্ষেত্রে। একজন শিক্ষকই ভাল জানেন তার স্টুডেন্টকে, কে তার সাবজেক্টে দুর্বল? কে ক্লাস ফাঁকি দিচ্ছে? কে পাস করতে পারবে কি না এই নিয়ে ভয় পাচ্ছে?কে বিষন্নতায় ভুগছে? আপনি শুধু ক্লাস নিয়ে চলে আসলেন, কাউকে আইটেমে অনার্স মার্কস দিলেন আবার কাউকে জিরো দিলেন তাতেই আপনার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।

যেই স্টুডেন্ট অনার্স মার্কস পেল তার হয়তো আপনার সুদৃষ্টির দরকার নেই কিন্তু যে জিরো পেল তার খুব দরকার আপনার সুদৃষ্টির। আপনার একটু সহানুভূতি,আপনার একটু সহমর্মিতা, আপনার দিক নির্দেশনা, তাকে ডেকে তার সাথে কথা বলা, তার রেজাল্ট কেন খারাপ? তার পড়া বুঝতে সমস্যা হচ্ছে কোথায় তা জানতে চাওয়া, কিভাবে সে এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে তার পরামর্শ দেয়াই হয়তো তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

মেডিক্যাল কলেজে দেশ সেরা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরাই পড়ার সুযোগ পায়। তারা কেউই তাদের শিক্ষাজীবনের কোন পরীক্ষায় খারাপ করেনি, কিন্তু মেডিক্যাল কলেজের কারিকুলাম ভিন্ন। এইখানে প্রতিদিন ক্লাস,লেকচার,টিউটোরিয়াল, প্র‍্যাকটিকেল ক্লাস থাকে। প্রতিদিন প্রায় প্রতি সাবজেক্টের এক,দুইটা করে আইটেম থাকেই। মেডিক্যাল কলেজের পড়াশুনা টাফ, আমাদের সিস্টেম এইটাকে আরো টাফ বানিয়েছে স্টুডেন্টদের কাছে।প্রতিদিন দৌড়াতে হয় এখানে, কেউ যদি একবার এই দৌড়ে পিছিয়ে পরে তাহলে সে পিছিয়েই যেতে থাকে। একসময় সে তার ব্যাচমেটদের থেকে অনেক পিছিয়ে পরে, তার ব্যাচমেটরা পাস করে যায়, ডাক্তার হয়ে যায়। দেখা যায় সে হয়তো প্রফে বসতেই পারেনা ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ার কারণে বা প্রফে বসার সুযোগ পেলেও খারাপ করে।আর এভাবেই ডিপ্রেশন গ্রাস করে স্টুডেন্টকে।

যদি শিক্ষকরা পড়ানোর পাশাপাশি আরো একটু খোজ নিতেন স্টুডেন্টদের বিশেষ করে যারা পিছিয়ে পরছে সেইসব স্টুডেন্টের খোজ নিতেন, তাহলে তারা হয়তো আরো পিছিয়ে পরতো না, স্যারদের হেল্প নিয়ে তাদের সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পেত।তাহলে সে আর ডিপ্রেশনে ভুগতো না।স্টুডেন্টদের পড়ানোর পাশাপাশি স্টুডেন্টদের কাউন্সেলিং করাও শিক্ষকদের একটি দায়িত্ব। শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ডাঃ মনসুর খলিল স্যারের মতো পিতাসুলভ শিক্ষক যদি বেশি বেশি পেত
মেডিক্যাল কলেজগুলো তাহলে স্টুডেন্টদের ডিপ্রেশন এ ভোগার সম্ভাবনা অনেক কমে যেত। স্যার যখন ডেকে মাথায় তার স্নেহের হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করবে মা তোর কি সমস্যা বা বাবা তোমার কি সমস্যা তখন একজন স্টুডেন্টের মন কত ভালো হয়ে যায় তা শুধু সেই স্টুডেন্টই বলতে পারবে। স্টুডেন্ট কাউন্সেলিং খুব খুব জরুরি এই আত্মহনন ঠেকানোর জন্য।
_________________________

লেখক :ডা. কামরুল হাসান সোহেল

আজীবন সদস্য, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ , কুমিল্লা জেলা।
কার্যকরী সদস্য, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ
আজীবন সদস্য,বিএমএ কুমিল্লা।
সেন্ট্রাল কাউন্সিলর, বিএমএ কুমিল্লা

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়