Ameen Qudir

Published:
2017-03-13 17:58:48 BdST

কিডনি পাচার করা যায় না : মুর্খ মিডিয়ার অপপ্রচারে বিশ্বাস করবেন না : শেয়ার করুন





ডাক্তার প্রতিদিন ডেস্ক
___________________________


এই লেখাটি একটি জুররী জনসচেতনতা পোস্ট। বেশী বেশী শেয়ার করে সবাইকে সচেতন করা দরকার। নতুবা " কিডনী পাচার " সংক্রান্ত মুর্খ মিডিয়ার কথায় বিশ্বাস করে দেশে আরও ডাক্তার হেনস্থার ঘটনা ঘটতে পারে।

লেখাটি জরুরি বিধায় অনলাইন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। মূল ড্রাফট যিনি করেছেন ; তার নাম দুদিন চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারি নি। তদুপরিও জন সচেতনতার লক্ষে এটি প্রকাশ করা হল।

___________________


কিডনি পাচার সংক্রান্ত যে কোন খবর প্রত্যাখ্যান করুন। এটা বিশ্বাস করে নিজের বেকুবির প্রমান দিবেন না।আবার শুরু হয়েছে অপপ্রচার, যাতে ঠকবে দেশের রোগীরা। কিডনি কেটে পাচার করা অসম্ভব এবং অসম্ভব। কারন বুঝতে এই লেখা পড়ুন।


কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হলে ডোনারের কাছ থেকে কিডনি নিয়ে, মাত্র ত্রিশ মিনিটের মধ্যে অপারেশন শুরু করতে হয়। অপারেশন করতে লাগে ৬ ঘন্টা।

 

পৃথিবীতে ত্রিশ মিনিটের বেশি সময় দেহের বাহিরে কিডনী সংরক্ষনের কোন উপায় আবিষ্কৃতই হয়নি।

এর বেশী সময় অতিবাহিত হলে রক্তের কোষ মারা যায়, সেই কিডনী প্রতিস্থাপন করলে রোগী মারা যাবে।
কিডনী প্রতিস্থাপন করতে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিতসক লাগে, লাগে দুটি অপারেশন থিয়েটার। দাতা গ্রহীতা দুইজন থাকেন পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারে।

যার তার কাছ থেকে কিডনি নেয়াও যায়না। রক্তের গ্রুপ মিলতে হয়, এইচএলএ টাইপিং এর মত আধুনিক আরও পরীক্ষা, দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের একরকম হলে তবেই একজন আরেকজন কে কিডনি দিতে পারে। নাহলে গ্রহীতার মৃত্য নিশ্চিত।

কোনভাবেই যা সম্ভব নয়, তা কী করে এ দেশের নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার করে, কী করে সেটা ফলাও করে নিউজ আকারে প্রচারিত হয়। কিংবা কেন?

উত্তর পাবেন ২০১১ সালে ফিরে গেলে। বাংলাদেশে সবে কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপন শুরু হল। সম্ভাবনা তৈরী হল এদেশেই এসব চিকিতসা শুরুর। মাথা খারাপ হয়ে গেল, বিদেশী হাসপাতালের এদেশীয় দালালদের, বিশেষ করে পাশের একটি দেশের কতিপয় হাসপাতাল ব্যাবসায়ীদের। আর তখনি প্রথম শুরু হল গত কয়েকদিনের মত করে, কিডনি পাচার বিষয়ক সংবাদ।

যার জন্য সরকার নিষিদ্ধ করে দিল এদেশে কিডনি প্রতিস্থাপন অপারেশন। হাস্যকর হাস্যকর।
মানুষ আবার বিদেশ যেতে লাগল, ভারতে গেলে খরচ হয় ১০-১৫ লাখ টাকা, সিংগাপুর গেলে প্রায় দেড় কোটি। দালাল চক্র শান্ত হল। তাদের ভাগেও যে ২-৪ লাখ করে জুটে। তাদের দালালি করে কোটি কোটি টাকার আয় চলতে লাগল।

কিন্তু, সরকার তার ভুল বুঝতে পেরে দেশে আবার কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিল। যা এখন বঙবন্ধু মেডিকেলে ১ থেকে ১.৫ লাখ টাকায় করা যায়। বারডেমে ২ লাখ ৭৫ হাজারে, কিডনি ফাউন্ডেশনে ২ লাখ ৩০ হাজারে, আর জাতীয় কিডনি ইন্সটিটিউট এ বিনামুল্যে।

আবারও মাথা খারাপ হয়ে গেল দালাল চক্রের, শুরু হল ২০১১ এর মত করে অপপ্রচার। অজ্ঞ মানুষেরা সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করল। যেটা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসম্ভব বলে বিবেচিত।

যেটা হওয়া সম্ভব সেটা হল,কিডনি নেয়ার জন্য একজন মানুষকেই ভারতে বা অন্য কোন দেশে পাচার করে দেয়া, যার ব্লাড গ্রুপ, এইচএলএ টাইপিং সহ সব কিছু মিলতে হবে গ্রহীতার সাথে, এর সম্ভাবনা খুব কম, সাধারনত এসব কিছু পরিবারের লোকজনের সাথে মেলার সম্ভাবনা থাকে, তাও সব সময় মেলেনা।

কিন্তু কিডনি চুরি কাঁচি দিয়ে কেটে পাঠিয়ে দেয়া, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইহা অসম্ভব। অসম্ভব। অসম্ভব।

এটা সম্ভব কেবল এদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনি, মিডিয়া আর বিদেশি হাসপাতালের এদেশীয় দালালদের অজ্ঞতা, মূর্খতা উদ্ভট কল্পনা আর ষড়যন্ত্রে।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়