ডেস্ক

Published:
2024-03-28 19:01:44 BdST

দায়িত্ব হস্তান্তর : পুস্পস্তবক দিলেন বিদায়ী, গ্রহণ করলেন নতুন উপাচার্য


 

ডেস্ক


________________

দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান হলো পুষ্প সহযোগে : পুস্পস্তবক দিলেন বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ডা মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ,গ্রহণ করলেন নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ডা দীন মোহাম্মদ নূরুল হক।
দুজনেই বাংলা দেশের বরেণ্য চক্ষু চিকিৎসক। বরেণ্য শিক্ষক। দক্ষ প্রশাসক। দুজনেই মানব সেবী
। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অক্লান্ত কাজ করেছেন বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ডা মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি সেই দায়িত্ব ভার অর্পণ করে গেলেন নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ডা দীন মোহাম্মদ নূরুল হকের হাতে। ফুলসহ দায়িত্ব ভার গ্রহণ করলেন তিনি। বিদায় এবং দায়িত্ব গ্রহণকালে দুজনেই পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে।পুষ্পনিবন্ধনে অনুষ্ঠিত হয় হস্তান্তর ।

ওদিকে, বিদায় দিবসে সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডা শারফুদ্দিন আহমেদ আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি উপস্থিত শিক্ষক চিকিৎসকদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। খোঁজ খবর নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ, সুচিকিৎসা ব্যবস্থা, গবেষণার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সকলকে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে আহবান জানান। 


এ নিয়ে বাংলা দেশের একজন বরেণ্য চক্ষু চিকিৎসক ও প্রথিতযশ লেখক ডা. তারিক রেজা আলী মনোজ্ঞ একটি লেখা লিখেছেন। পাঠকের কাছে তা দেওয়া হল।

ডা. তারিক রেজা আলী লিখেছেন,
"
আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে গেলাম। দেখলাম এক শিক্ষকের বিদায় ও অন্য শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ। দু'জনেই স্বনামধন্য প্রতিথযশা চক্ষু বিশেষজ্ঞ। একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, অন্যজন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে দীন মোহাম্মদ স্যারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেন অধ্যাপক মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। আক্ষরিক অর্থেই নবীন উপাচার্যকে হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিলেন। দীন মোহাম্মদ স্যার কাজ শুরু করলেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। শারফুদ্দিন স্যারও বিদায় নিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে। দুজনেই আমার সরাসরি শিক্ষক। দীন মোহাম্মদ স্যার তো সেই ১৯৮৫-৮৬ সালে আমাদের অ্যানাটমি পড়াতেন। পরে এই দুজনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেও চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রয়াস পেলাম। সব পোষ্ট গ্র‍্যাজুয়েশন ও ফেলোশিপ শেষ করে বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতিতে ধীরে ধীরে কাজ শুরু করলাম ২০০৮ সালে। পরবর্তী বছরে সভাপতি নির্বাচিত হলেন অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। তাঁর কার্যকরী পরিষদে আমি ছিলাম একজন সদস্য। এর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি কার্যকরী পরিষদে বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হবার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি ছিলেন টানা ছয় বছর। তাঁর কার্যকরী পরিষদে আমি সর্বশেষ ছিলাম কোষাধ্যক্ষ হিসাবে। এর পরের বছর আমি যখন মহাসচিব নির্বাচিত হই তখন শারফুদ্দিন স্যার সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন, আমাদের আরেক প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক এ কে এম এ মুকতাদির হলেন আমার সভাপতি।

সে অন্য কথা। অর্থাৎ অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক এবং অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ দুজনেই ছিলেন বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি এবং আমি, এই অতি ক্ষুদ্র মানুষ ছিলাম তাঁদের উত্তরসূরী হয়ে একই সংগঠনের মহাসচিব হিসাবে এবং বর্তমানে আছি সহ-সভাপতি হিসাবে। বিষয়টি যদি আমার ভিতর আত্মশ্লাঘা জাগায়, খুব কি দোষ দিতে পারি নিজেকে?

তাঁদের দুইজনের জন্য রইলো আন্তরিক শুভকামনা। দীন মোহাম্মদ স্যারের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কিছুটা নতুন মনে হতে পারে, তবে সব জেনে বুঝেই এই বিশাল দায়িত্ব তাঁর কাঁধে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক নিঃশঙ্ক চিত্তে পুরোপুরি নির্মোহ ভাবে দল-মত নির্বিশেষে সবার উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী এবং এই প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি।

"তবু তরী বাইতে হবে
খেয়া পারে নিতে হবে
যতই ঝড় উঠুক সাগরে।
তীরহারা এই ঢেউয়ের
সাগর পারি দিব রে।"

অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হকের সামনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়, যথেষ্ট কন্টকযুক্ত ধারণা করি। কিন্তু ভেঙে পড়ার মানুষ তিনি নন। অবশ্যই তিনি সফল হবেন। আপনার জন্য আন্তরিক প্রার্থনা রইলো স্যার।

"তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।
তোমার সেবার মহান দুঃখ সহিবারে দাও ভকতি ॥"

 

------

বিএসএমএমইউ কর্মকর্তারা জানান,
নতুন উপাচার্য,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহা-পরিচালক ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হককে বরণে রঙিন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, শিক্ষক-ছাত্র,কর্মকর্তা কর্মচারীরা বরণ করে নিয়েছেন।
উপাচার্যকে বরণের জন্য ছিল অসংখ্য ফুলের মালা । ঢাক-ঢোল বাজিয়ে উৎসবমুখরভাবে তাকে স্বাগত জানানো হয়।

দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে সপরিবারে নতুন উপাচার্য বিএসএমএমইউতে প্রবেশ করেন । সাড়ম্বরে এসময়ে উপাচার্যকে বরণ করে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক-শিক্ষক,নার্স-কর্মকর্তাসহ কর্মচারী এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা।

 

বিএসএমএমইউ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানায়,


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ দুপুর ১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত যারা এই মহতী কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদের শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়