Dr.Liakat Ali

Published:
2024-02-23 18:33:35 BdST

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর নতুন জেএনওয়ান সাব-ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত




ডেস্ক
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর নতুন জেএনওয়ান ((JN.1) সাব-ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হয়েছে। আজ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার)  উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এই তথ্য জানান। এই রিপোর্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান গবেষণার ফলাফল।
এসময় করোনা জেনোম সিকোয়েন্সিং বিএসএমএমইউ এর সম্মানিত গবেষকবৃন্দ, সুপারভাইজার- উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রধান গবেষক জেনোটিক্স এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি ও এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. লায়লা আনজুমান বানু, করোনা জেনোম সিকোয়েন্সিং এর সাথে যুক্ত গবেষণা টিম এর অন্যান্য সদস্যবৃন্দ-ডা. মোঃ মহিউদ্দিন মাসুম, ডা. শারমিন আক্তার সুমি, ডা. শরদিন্দু কান্তি সিনহা, সোয়েব হোসেন, শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাস, করোনা জেনোম সিকোয়েন্সিং বিএসএমএমইউ এর সাথে যুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষণা টিম এর সদস্যবৃন্দ অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হাসান, বাডাস কোভিড-১৯ প্রকল্প উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য ঝঅজঝ-ঈড়ঠ-২ এর জেনোমের গঠন উন্মাচন ও পরিবর্তনের ধরণ এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জেনোমের সাথে এর আন্তঃসর্ম্পক বের করা, ভাইরাসের বিবর্তনীয় সম্পর্ক, রোগের উপসর্গ, রোগের তীব্রতা, তুলনামূলক হাসপাতাল অবস্থানের মেয়াদকালে এবং বাংলাদেশী কোভিড-১৯ জেনোম ডাটাবেস তৈরি করা। ২৯ জুন ২০২১ থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের উপর এই গবেষণা চলমান। গবেষণায় প্রায় এক হাজার পাচঁশত কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ হ্রাস হওয়া সত্বেও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক প্যান্ডেমিক হিসেবে ঝঅজঝ-ঈড়ঠ-২ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। এই সময়ে আমরা করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এর বিভিন্ন সাব-ভ্যারিয়েন্ট পেয়ে আসছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য এই বছরের শুরুতে নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট JN.1 এর কথা জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রাপ্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর স্যাম্পল নিয়ে জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। আমাদের গবেষণায় আমরা মোট তিন জন রোগীর দেহে JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট JN.1 ; JN.1 ;১৮ এবং JN.1 .১১.১১) সনাক্ত করা হয়।
JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট এর উপসর্গগুলি অন্যান্য রূপগুলির মতোই যেমন জ্বর সর্দি, গলা ব্যথা, মাথা ব্রথা এবং হালকা গ্রাস্ট্রেইনটেস্পাইনাল লক্ষণগুলি দেখা গিয়েছে। রোগীদের উপসর্গ মৃদু হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব জানার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাবার বিকল্প নেই। JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত রোগীদের এক জনের দেশের বাইরে থেকে আসার ইতিহাস রয়েছে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে যে, নতুন JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত রোগের লক্ষণের তীব্রতা কম। সকল JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত রোগীর কমপক্ষে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া ছিলো। তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছে এরকম রোগীরও JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। মৃদু উপসর্রে কারণে JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্ট রোগীদের থেকে দ্রুত সংক্রমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। JN.1 সাব-ভ্যারিয়েন্টএ আক্রান্তদের তুলনামূলক কম উপসর্গ হয় এবং হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কম। প্রত্যেক করোনা ভাইরাস ভ্যারিয়েন্ট বিপদজনক এবং তা মারাত্মক অনুস্থতা এমনকি মৃত্যুও কারণও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশনের আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুকিপূর্ণ করতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সরকার ইতোমধ্যে আড়াই রেকাটি ডোজ টিকা সংগ্রহ নিশ্চিত করেছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ঝুকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চতুর্থ ডোজ হিসেবে এসব টিকা দেওয়া হবে। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ও টিকা গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে একই স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্যাহ আল মাসুম অনূদিত স্বরের ধ্বনি বই এর মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী জনাব আবুল কালাম আজাদ। প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট কবি অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।
এদিকে জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ২০২৪ সালের নতুন ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তেতুল খেলে ডায়াবেটিস কমে, জলপাইয়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কচুর লতি, ডুমুর, আনারসের মাথা এরকম অনেককিছু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ধূমপান, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, চিনি খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। ব্যায়াম অবশ্যই করতে হবে। মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে। করোনা ভাইরাস শেষ হয়ে যায়নি। বাঁচতে অবশ্যই মুখে মাস্ক পড়তে হবে। যারা এখনো করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেয় নি তারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা অবশ্যই যেনো টিকা গ্রহণ করেন।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়