Dr. Aminul Islam

Published:
2023-06-14 02:28:05 BdST

জুনেই সুপার স্পেশাল হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৩/৪ হাজার রোগী সেবা পাবেন


বিএসএমএমইউ উপাচার্য

 

বিএসএমএমইউ সংবাদ
___________________

বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রচারণার জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগীদের অত্যাধুনিক সেবা দিতে। জীবন রক্ষার কাজে, সেবা দেওয়ার কাজে কোন অাপোস নয়। কোন গাফিলতি নয়। একটির পর একটি

সব বিভাগ চালু হচ্ছে। হাসপাতালটি সিঙ্গাপুর কোরিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় রোগীদের চিকিৎসায় অত্যাধুনিক সেবা দিবে। একাজে আমরা
দৃঢ় সংকল্প বদ্ধ। জুনেই প্রতিদিন সুপার স্পেশাল হাসপাতালের আউটডোরে তিন থেকে চার হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা পাবেন।

মিডিয়ার কাছে তিনি বলেন, চলতি জুন মাসেই পূর্ণাঙ্গভাবে সব বিভাগের চিকিৎসা শুরু হবে। বাংলাদেশ সরকার ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়ানে নির্মিত এই হাসপাতালটির মাধ্যমে বিভাগভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ পদার্পণ করেছে সেন্টার বেজড চিকিৎসা সেবা।


উপাচার্য অধ্যাপক
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে একই ছাদের নিচে রোগীরা পাবেন পরীক্ষা-নিরিক্ষাসহ সব ধরনের চিকিৎসা সেবা। রোগীকে অন্য কোথাও যেতে হবে না। এখানে থাকছে চিকিৎসা সেবায় উন্নত প্রযুক্তি। হাসপাতালে থাকছে মেগা হসপিটাল ইনফরমেশন সিস্টেমের (এইচআইএস) আওতায় অন্তর্ভুক্ত কাটিং এজ ইনফরমেশন সিস্টেম, মাল্টিডিসিপ্লিনারি এবং স্পেশালাইজড হেলথ কেয়ার সার্ভিস সুবিধাসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সুবিধা। এই অটোমেটেড হসপিটাল ইনফরমেশন সিস্টেমের আওতায় রোগীদেরকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এভিডেন্স বেইজড মেডিসিন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

 

উপাচার্য অধ্যাপক
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউ’ থেকে কিছুটা বেশি হলেও ভারত, ব্যাংককক, সিঙ্গাপুরের চেয়ে খরচ কম হবে। এখানে গরিব ও ধনী সব ধরনের লোকের জন্য চিকিৎসা সেবা থাকবে। মূলত সেন্টার বেজড হাসপাতাল ৫টি অত্যাধুনিক সেন্টার থাকবে। এক সেন্টারেই মিলবে সংশ্লিষ্ট রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা। অন্য কোথাও যেতে হবে না।

তিনি বলেন, এখানে দুর্ঘটনাজনিত এবং জরুরি চিকিৎসাসেবা চলবে। হৃদরোগ ও স্নায়ুরোগীদের সার্জারিসহ সব ধরনের চিকিৎসা থাকবে। হেপাটোবিলিয়ারি প্যানক্রিয়াটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্টসহ সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা থাকবে। হেমোডায়ালাইসিস, কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট কিডনি রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ থাকবে।

উপাচার্য বলেন, ‘এখানে থাকবে চিকিৎসকদের জন্য অত্যাধুনিক পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ, জিন থেরাপি, রোবটিক সার্জারির মতো অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। ৬ ভিভিআইপি এবং ২২টি ভিআইপি কেবিন এবং ২৫টি ডিলাক্স কেবিন থাকবে। থাকবে জেনারেল ওয়ার্ড, সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এসআইসিইউ), নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এনআইসিইউ), পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ), ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এবং মেডিকেল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এমআইসিইউ)।’
উপাচার্য অধ্যাপক
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন,
সুপার স্পেশাল হাসপাতালে বিভিন্ন রোগজীবাণু পরীক্ষায় থাকছে অত্যাধুনিক সিটিস্ক্যান, এমআরআই প্যাথলজি ও ইমেজিং পরীক্ষার সুযোগ। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্স টেকনিশিয়ান দ্বারা হাসপাতালটি পরিচালনার ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৮০ জন চিকিৎসক, ৩০ জন নার্স, ১০ জন মেডিকেল টেকনিশিয়ান এবং প্রশাসনের ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১৮ জন চিকিৎসকসহ মোট ৫৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে দেশে এনে ৪৮০ জনকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি দুই বছরের জন্য ৫৬ জন কোরিয়ান কনসালট্যান্ট কাজ করবেন।
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য চিকিৎসকসহ প্রায় মোট ৬১০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে। তাদের মধ্যে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, হাসপাতালে সেবা নিতে এসে রোগীসহ অভিভাবক হাসপাতালের ভেতরেই কনভেনিয়েন্স শপ, ব্যাংকিং সুবিধা, ফার্মেসি পাবে। পাশাপাশি ৩৫০ সিট বিশিষ্ট উন্নত কিচেন থাকবে যার আওতায় ৩টি ক্যাফেটেরিয়া সুবিধা পাবেন। থাকছে ৯০ সিট বিশিষ্ট ডক্টরস ক্যাফেটেরিয়া, উন্নত লন্ড্রি হাউজসহ কার পার্কিংয়ের সুবিধাও। এখানে রোগীদের সেবায় থাকছে ১টি ভিভিআইপি এলিভেটরসহ ১৬টি এলিভেটর ও ১টি এসক্যালেটর, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা, হিটিং, ভেনটিলেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম। আর এসব সেবার মান যাচাইয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ হবে বলে জানান তিনি।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শতভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে। সেই সঙ্গে যন্ত্রপাতি সংযোজনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় লোকবল এরই মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়ে গেছে এবং আরো লোকবল নিয়োগে কাজ চলছে।

তথ্য বিভাগের কর্মীরা জানান, বিএসএমএমইউর ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতাল ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থায়নে নির্মিত এই হাসপাতালের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার পাঁচশ’ ৬১ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে কোরিয়া ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১ হাজার সাত চল্লিশ কোটি ৩৩ লাখ চুরাশি হাজার টাকা, বাকি টাকা বাংলাদেশের। ৪০ বছর মেয়াদি এ ঋণের প্রথম ১৫ বছর কোনো টাকা কোরিয়াকে দিতে হবে না। ১৬তম বছর থেকে পরবর্তী ২৫ বছরে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হারে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়