Dr.Liakat Ali

Published:
2022-09-29 03:39:20 BdST

জাতিসংঘে বিএসএমএমইউ ইভেন্ট:‘চিকিৎসা গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বায়োব্যাংক’


বিএসএমএমইউ সংবাদ সংস্থা
_____________________

‘একটি আন্তর্জাতিক মানের বায়োব্যাংক বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ধারণ করারও সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশের যা চিকিৎসা গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। ’ আজ ‘নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বায়োব্যাংকিং, বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি কেস স্ট্যাডি’ শীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে এ সকল কথা বলেন আলোচকগণ। বাংলাদেশে বায়োব্যাংক প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে চলমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের আওতায় এই বৈজ্ঞানিক সাইড-ইভেন্টের আয়োজন করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এই ইভেন্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়োব্যাংক বিশেষজ্ঞসহ বিপুলসংখ্যক আন্তর্জাতিক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। এটি ছিল একটি হাইব্রিড ইভেন্ট যেখানে সরাসরি ও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণকারীগণ যোগ দেন।
একটি আন্তর্জাতিক মানের বায়োব্যাংক নির্মাণের পাশাপাশি, বক্তাগণ গবেষণার ক্ষমতা তৈরির গুরুত্বের ওপরও জোর দেন যাতে স্থানীয় গবেষণাকে বাস্তবে কাজে লাগানোর জন্য গবেষকগণ বায়োব্যাংককে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারেন। এই উদ্যোগটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একাডেমিক-বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখবে, যা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এর আওতায় বৈশ্বিক পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক বিজ্ঞান নিশ্চিত করার একটি উদাহরণ।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, টিউমারের মধ্যকার সেলুলার ও আণবিক ভিন্নতা, বিভিন্ন হোস্ট ইমিউন প্রতিক্রিয়া, খাদ্য, পরিবেশগত প্রভাব, জীবনধারা এবং রোগী জনমিতিসহ বিভিন্ন কারণ ক্যান্সারের ওষুধ বা বায়োমার্কারের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। সুতরাং ক্যান্সারের মতো রোগের ক্ষেত্রে সকলের জন্য একই পদ্ধতি বা সকলকে একই পাল্লায় বিবেচনা করার ধারণাটি আজ অপ্রচলিত। পৃথকভাবে ক্যান্সার-যত্নের নীতিগুলো প্রয়োগ করে কার্যকর ওষুধ/বায়োমার্কারসমূহ তৈরির কৌশল ডিজাইন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এটি সবার জানা যে ড্রাগ/বায়োমার্কার টেস্টিং এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল তালিকাভুক্তিতে জাতিগত ভিন্নতা বিদ্যমান, কারণ বেশির ভাগ অনুমোদিত ক্যান্সারের ওষুধ/বায়োমার্কার বাস্তবতার কারণেই ককেশীয় জনগোষ্ঠীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে।
ক্লিনিক্যাল ডাটাসহ নির্ভরযোগ্য/বিশ্বস্ত বায়োম্যাটেরিয়ালের অভাব একটি বড় কারণ যার ফলে অনেক এশিয়ান দেশগুলো বায়োমার্কার স্টাডিতে কম প্রতিনিধিত্ব করছে। সুতরাং বাংলাদেশে অনুবাদমূলক গবেষণা বিকাশের জন্য একটি বিশ্বমানের বায়োব্যাংক তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। বিএসএমএমইউর প্রতিনিধগণ বায়োব্যাংকের মতো বিষয়গুলো ধারণ করার জন্য তাদের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। কিভাবে এই সুবিধা স্থানীয় অনুবাদমূলক গবেষণাকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে তাও তুলে ধরেন তারা।
বায়োব্যাংক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অস্ট্রিয়ার গ্রাজ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্ট জাফউকাল, ইতালির ভেরোনা ইউনিভার্সিটির ড. রিটা ললোর, ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার, ফ্রান্স র ড. জিসিস কোজলাকিডিস এবং কাতার বায়োব্যাংকের পরিচালক ড. নাহলা আফিফি ইভেন্টটিতে বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত এবং বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক সমন্বয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন আইরিশ-বাংলাদেশি ক্যান্সার গবেষক ড. আরমান রহমান, বিএসএমএমইউর অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানু এবং অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন ড. আরমান রহমান।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়