ডা শাহাদাত হোসেন
Published:2022-08-29 20:11:46 BdST
বিএসএমএমইউ-তে আলোচনা সভা : চেতনা ও আদর্শে বঙ্গবন্ধু ও কবি নজরুল অভিন্ন
বিএসএমএমইউ সংবাদ সংস্থা
_____________________
অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সর্বদাই সোচ্চার। তারা উভয়ই ছিলেন মানবতাবাদী, সাম্যবাদী দর্শনে বিশ্বাসী। অসম্প্রদায়িক চেতনাকে তারা ধারণ করতেন। ছিলেন স্বাধীন চিত্তের অধিকারী। মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে তারা ছিলেন আপোষহীন। চেতনা ও আদর্শে বঙ্গবন্ধু ও কবি নজরুল হলেন অভিন্ন। রবিবার (২৮ আগস্ট ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আলোচকবৃন্দ এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস এর সহায়তায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান, এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একই আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাস করতেন। তারা অন্যায় অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। তারা দুজনেই সাম্যের গান গেয়েছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম লেখনীর মাধ্যমে মানবের শৃঙ্খলতা ভেঙ্গে মুক্তির গান গেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাজী নজরুল ইসলামের সেই আদর্শকে বাস্তবে রূপ দান করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও কবি তাহী নজরুল ইসলাম ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বিরাট অবদান রেখেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত জনতার কবি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, বিশ্ব মানবতার কবি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। জাতীয় কবির সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় কবির লেখনী থেকে প্রেরণা নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও কবি নজরুলের মূল আদর্শই হল মানুষকে সেবা করা, সাম্যের গান গাওয়া।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতই তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও নজরুল ইসলামের লেখনী থেকে প্রেরণা নিয়ে বাংলাদেশে নারী পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও কবি নজরুল ইসলামের আর্দশ বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই এদেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বায়োডাটায় পিতার নামের পাশাপাশি মায়ের নাম যুক্তকরণ ও বিধবা ভাতা প্রদান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালু করেছেন। তিনি আরো বলেন, যাদের আত্মত্যাগের কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদেরকে নতুন প্রজন্মকে ধারণ করার ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল কলেজে ভর্তির আগে এদেশে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বিষয়ে ২০ নম্বরের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব । মূল আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা । আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ। আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক, ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই চিকিৎসকদের পরামর্শে বঙ্গবন্ধু ‘কবিভবন’ থেকে কবিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন আই পিজি এম আর)-এর ১১৭ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করেন। ১ বছর ১ মাস ৮ দিন এ কেবিনে চিকিৎসক ও নার্সদের নিবিড় যতœ ও সেবা দেওয়া হয় মানবতার এই কবিকে। এই ১১৭ নম্বর কেবিনেই বাঙালির পরমপ্রিয় কবির জীবনাবসান ঘটে।
আপনার মতামত দিন: