ডেস্ক

Published:
2022-03-29 05:40:44 BdST

ব্রেইন ডেথ ব্যক্তির অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ, সংযোজন ও প্রতিস্থাপনে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বিএসএমএমইউ


 

সংবাদ দাতা
______________
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যাবস্থায় আসছে বৈপ্লবিক নানা উদ্যোগ। প্রতিক্রিয়াশীল অন্ধচিন্তার বিপরীতে স্বাস্থ্যসেবায় জ্বলে উঠছে আশার আলো। 

ব্রেইন ডেথ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ, সংযোজন ও প্রতিস্থাপন নিশ্চিত করতে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

আজ সোমবার ২৮ মার্চ ২০২২ ইং তারিখে বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে ব্রেইন ডেথ ঘোষিত ব্যক্তির অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ, সংযোজন ও প্রতিস্থাপন নিশ্চিত করা সংক্রান্ত ক্যাডাভেরিক জাতীয় কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিশিষ্ট কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মোঃ আশারাফুজ্জামান সজিব।

ওদিকে মরণোত্তর অঙ্গদানের ব্যবস্থা সহজতর করতে জরুরি আইন করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। রোববার (২৭ মার্চ) রাজধানীর সাতারকুলে ইউনাইটেড ক্লাব হাউসে আয়োজিত ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্লান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রেন-ডেড রোগীদের অঙ্গদান নিয়ে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের কথা বলবেন।

 

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন,সফলভাবে কৃত্রিম হৃদপিন্ড ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর এ ব্যাপারে আমার উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। সংসদে এ সংক্রান্ত আইন পাস হলে মানুষের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা বাড়বে, সচেতনতা তৈরি হবে।

তিনি বলেন, আইন হলেই হবে না, মানুষকে বোঝানোর ধারা অব্যাহত থাকতে হবে। একবারেই সব কিছু হয়ে যাবে না। সব কিছু সবাই জানেও না।

কোনো মানুষ যদি মৃত্যুর সময় তার বিভিন্ন অঙ্গ দান করেন যান, তাহলে ৬/৭ মানুষকে নবজীবন দান করা সম্ভব। দুটি কিডনি দুইজনকে দেওয়া যায়। হার্ট একজনকে দেওয়া যায়। দুইটা লাং দুইজনকে দেওয়া যায়। চোখ দেওয়া যায়। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যায়।

আমাদের কেউ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন অঙ্গ দান করেন, তাহলে তিনি মারা গেলেও তাঁর চোখ, কিডনিটা বেঁচে থাকে। কে কোন বিশ্বাসের, কোন ধর্মে, বর্ণের—এটা বড় কথা না। মানবতাই হলো মূল বিষয়। আমরা মারা গেলে অঙ্গ না দিলেও এগুলো পঁচেই যাবে, অথচ এটা দান করলে এর মাধ্যমে আরেকজন মানুষ বেঁচে থাকার সুযোগ পান। ট্রান্সপ্ল্যান্টের মাধ্যমে সুস্থ হওয়া ব্যক্তি বড় কিছুও হতে পারেন। সুতরাং ক্যাডাভারি ট্রান্সপ্ল্যান্ট আলোর মুখ দেখলে এটা মানুষ, মানবতার জন্য বিশাল কাজ হবে।

এ ব্যাপারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, প্রশাসন, সুশীল সমাজ, চিকিৎসক, গণমাধ্যমকর্মী—তারা যদি প্রচার-প্রচারণা চালান, তাহলে এটা খুব কঠিন হবে না।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যমান আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইন থাকলেও এর প্রয়োগ নাই। এটি যদি পূর্ণাঙ্গ ও যুগোপযোগী করা যায়, তাহলে জনগণ অঙ্গদানে উৎসাহিত হবেন, উদ্বুদ্ধ হবেন। কারণ আইন যেমন দরকার, তেমনি নিরাপত্তাও দরকার।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। জানান, গণমাধ্যমে তাঁর এ সংক্রান্ত লেখা প্রকাশের পর একাধিক ব্যক্তি তাঁকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন, তারা অঙ্গদানে আগ্রহী, এটি করতে তারা কোথায় যাবেন?
অনেকেই তাদের একাধিক অঙ্গদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সুতরাং ক্যাডাভারি ট্রান্সপ্ল্যান্টের কথা বললেই হবে না, এজন্য উদ্যোগ নিতে হবে, কিছু করতে হবে। সুশৃঙ্খল উপায়েই করতে হবে।

এ সময় দেশে কৃত্রিম হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ঘটনাকে স্বাস্থ্যখাতের অভাবনীয় সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক। দেশের মাটিতে এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ধরনের সাফল্যের জন্য মানসম্মত হাসপাতাল ও দক্ষ জনবল দুইই জরুরি।

 

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়