ডেস্ক

Published:
2022-03-29 05:07:07 BdST

কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সবচেয়ে দরকারী পরামর্শ দিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য


বিএসএমএমইউ উপাচার্য বক্তব্য রাখছেন

 

বিএসএমএমইউ সংবাদ দাতা
_________________

কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের সবচেয়ে দরকারী পরামর্শ
দিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা মো. শারফুদ্দিন অাহমেদ। তিনি এজন্য
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, শাক সবজি খাওয়া এবং ফাস্টফুড ও এ্যালকোহল জাতীয় খাবার না খাওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। কোলন ক্যান্সার নির্ণয়ের লক্ষ্যে মল পরীক্ষা (ফিট) করে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আজ সোমবার ২৮ মার্চ ২০২২ ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোলন ক্যান্সার সচেতনতা মাস মার্চ ২০২২ উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলে তিনি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পরামর্শ উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে এক গবেষণায় দেখা যায়, পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সারে পুরুষদের মাঝে প্রতি ২১ জনে ১ জন ও মহিলাদের মাঝে প্রতি ২৩ জনে ১ জন এই রোগে ভোগেন। পুরুষদের মাঝে দ্বিতীয় ও মহিলাদের তৃতীয় মৃত্যুর কারণ হিসেবে অন্ত্রনালির ক্যান্সার দায়ী। পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সারের লক্ষণ হলো পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য, মল ত্যাগের পরে পেট খালি না হওয়া ভাব, রক্তসহ মল বা গাড় লাল বা কালো রঙের মল, মলদ্বার দিয়ে রক্ত পরা, পেট ফাঁপা বা ব্যাথা, কিছু না খাওয়ার পরও পেট ভরা ভরা লাগা, দুর্বলতা ও অবসাদগ্রস্ত ভাব, হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, পেটে মাংসপিন্ড আকৃতির অনুভব, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ফুসফুসের ক্যান্সারের পরে পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সার সারা বিশ্বে পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে আছে। অন্ত্রনালীর ক্যান্সারের জন্য বেশ কিছু কারণ দায়ী। কোলন ক্যান্সারের রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকি সমূহ হলো-বৃদ্ধ বয়স, উচ্চ মাত্রার প্রাণীজ প্রোটিন, চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ, অল্প আঁশ যুক্ত খাবার গ্রহণ, মদ্যপান, পূর্বে স্তন, ডিম্বাশয় বা জরায়ুর ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, বংশগত কারো পায়ুপথ বা অন্ত্রনালীর ক্যান্সার থাকলে, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রন্স ডিজিজ বা আই বি ডি (অন্ত্রনালীর ঘা জাতীয় সমস্যা), স্থুলতা, ধূমপান, কায়িক পরিশ্রম না করা, কারো যদি খাদ্যান্ত্রে পূর্ব থেকে পলিপ বা ছোট মাংসপিন্ড থেকে থাকে, তা ক্যান্সার রূপান্তরিত হতে পারে।


কোলন ক্যানসার প্রতিরোধের পরামর্শ
_______
মানুষের পরিপাকতন্ত্রের দুইটি প্রধান অংশ আছে, একটি হল ক্ষুদ্রান্ত্র ও অন্যটি হল বৃহদান্ত্র। বৃহদান্ত্রের একটি অংশ এই কোলন। আর এই অংশে যে ক্যান্সার হয়, তাকেই বলা হয় কোলন ক্যান্সার।

নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই মারাত্মক ব্যাধি কোলন ক্যান্সার। যা একবার শরীরে বাসা বাঁধলে আর সহজে ছাড়ে না। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মতো ৭টি উপায়ে কোলন ক্যান্সারের শতকরা ৪৫ ভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন গবেষকরা।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন: আপনি যদি কোলন ক্যান্সার হওয়া থেকে নিজের শরীরকে রক্ষা করতে চান তাহলে অবশ্যই আজ থেকে নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনাকে বাঁচাতে পারে এই ভয়াল রোগ থেকে।

ধূমপান ত্যাগ করুন: ৪০ বছর বয়স পেরনোর পর প্রায় ১৭ শতাংশ মানুষ এই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন ধূমপানের খারাপ অভ্যাসের কারণে। আপনি যদি একজন ধূমপায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে শরীরের সুস্থতার জন্য আজ থেকেই এই ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করার চেষ্টা শুরু করুন।

লাল মাংস খাবেন না: বেশি পরিমাণে লাল মাংস (রেড মিট) খেলে পেটের সমস্যা হয়, বৃহদান্ত্রের চর্বি বৃদ্ধি পায়। যা থেকে হতে পারে কোলন ক্যান্সার। তাই কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে এই লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া কমিয়ে দিন। প্রয়োজনে রেড মিটের পরিবর্তে অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পেটের মেদ কমিয়ে আনুন: পেটের অতিরিক্ত মেদ হওয়া কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাই যতটা সম্ভব ডায়েট এবং শরীরচর্চার অভ্যাস করে এই পেটের মেদ ঝরিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।

বেশি করে শাক-সবজি আর ফলমূল খান: আপনার শরীরের হজমকে সঠিক মাত্রায় পরিচালিত করতে সবুজ শাক-সবজি আর ফলমূল খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই যতটা সম্ভব সবুজ শাক-সবজি আর ফলমূল খান এবং শরীরকে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপযুক্ত করে তুলুন।

গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন: গ্রিন টিতে অনেক ধরনের উপকারী উপাদান রয়েছে যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। তাই কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং নিজেকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখুন।

ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণ করুন: কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণ করা অত্যন্ত আবশ্যক। তাই নিয়ম করে এই কালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান এবং শরীরকে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপযুক্ত করে তুলুন।

কোলন ক্যানসার নিয়ে বিএসএমএমইউ অনুষ্ঠান নিয়ে 

বিএসএমএমইউ মিডিয়া সেল জানায়,

 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহাদত হোসেন সেখ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পাল, কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু তাহেরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়