ডেস্ক

Published:
2021-08-02 22:55:34 BdST

টিকা গ্রহণকারীদের ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য


 


ডেস্ক / সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
____________________

কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহীতাদের ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা পূর্বেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি এন্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জন টিকা গ্রহীতার মাঝে পরিচালিত গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া যায়। আজ সোমবার ২ আগস্ট ২০২১ইং তারিখে শহীদ ডা. মিল্টন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও “Haematological Parameters and Antibody Titre After Vaccination Against SARS-CoV-2” শীর্ষক গবেষণার প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।  উপাচার্য বলেন, কোনো ধরণের আতঙ্ক নয়। অবশ্যই করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে হবে। টিকা নিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি একেবারেই কম। মাননীয় উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে দেশের সকল মানুষের টিকাদান নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষাণা অনুযায়ী দেশেই টিকা উৎপাদনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে অবশ্যই টিকা নিতে হবে । তিনি আরো জানান, আজকের এই গবেষণা থেকে বাংলাদেশে জনগণের উপর টিকা প্রয়োগের পর কার্যকর এন্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে সময়ের সাথে এন্টিবডির উপস্থিতি এর পরিবর্তন এবং পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচীতে নতুন অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য টিকার এন্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য আরো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন চার মাস পরে দ্বিতীয় ডোজ নিলে কি পরিমাণ এন্টিবডি তৈরি হয় সেই বিষয়েও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কোভিড মোকাবিলায় টিকাদান কর্মসূচিকে সার্থক করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধির যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
 উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারীতে সমস্ত বিশ^ আজ বিপর্যস্ত। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস অতিমারীর তৃতীয় ঢেউ চলমান। দেশে সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২০ হাজার ৯১৬ জন এবং মোট শনাক্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন।  প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে কোভিড অতিমারী মোকাবেলায় দেশে করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচী চলমান আছে এবং বর্তমানে তা আরো বেগবান হচ্ছে। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে আরো কয়েক ধরণের টিকা এ কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। টিকাদান এর উদ্দেশ্য হল মানবদেহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করা যা ভবিষ্যতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো এবং আক্রান্ত হলে রোগের জটিলতা হ্রাস এবং মৃত্যু ঝুঁকি কমানো।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণকারীদের উপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশী স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সাথে জড়িত। অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১ শতাংশের পূর্বে কোভিড সংক্রমিত হবার ইতিহাস আছে। অর্ধেকেরও বেশি অংশগ্রহণকারী পূর্ব থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানীসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রোগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা গ্রহণের পর এন্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকাগ্রহণের পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে সামান্য জ্বরসহ মৃদু উপসর্গের কথা জানিয়েছেন। রক্ত জমাট বাঁধা বা এরকম অন্য কোনো জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গবেষণাকালীন সময়ে পরিলক্ষিত হয়নি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এর সাথে এন্টিবডি এর উপস্থিতির কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহণকারীদের মাঝে ৯৮ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যে ২ শতাংশের এন্টিবডি পাওয়া যায়নি তারা জটিল রোগে আক্রান্ত, অনেক বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। এই গবেষণা কার্যক্রমটিতে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ সালাহউদ্দীন শাহ সহ-গবেষক হিসেবে এই গবেষণা প্রকল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন।
এদিকে আজ সোমবার ২ আগস্ট ২০২১ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। মাননীয় উপচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও শিশু বিভাগে ডেঙ্গু কর্ণার চালু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সকল বিভাগ ও অফিসে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে দেশবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার রাখতে হবে, ফুলের টবসহ অন্যকোনো পাত্রে যাতে একদিনের বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমানে মানুষ একই সাথে করোনা ভাইরাস ও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে এবং এক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকিও বেশি থাকে। তাই ডেঙ্গু জ্বরের কারণ এডিস মশার উৎপত্তি স্থল অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে।
এ সকল কার্যক্রমে সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, সদ্য বিদায়ী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, শিশু অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, নার্সিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, পরিচালক (হাসপাতা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম খান, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তাফা জামান, নাক কান গলা বিভাগে অধ্যাপক ডা. জহুরুল হক সাচ্চু, মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার-ই-মাহাবুব, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মোঃ নাজমুল করিম মানিক, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ কুমার কুন্ডু, সহকারী প্রক্টর মোঃ ফারুক হোসেন, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের পিএস-১ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ রাসেল, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের পিএস-২ সহকারী পরিচালক দেবাশীষ বৈরাগী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন । সম্পাদনা: সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়