SAHA ANTAR

Published:
2020-10-12 00:35:31 BdST

ওসিডির বংশগত কারণ , পারিপার্শ্বিক কারণ এবং ৪ লক্ষণ


 




ডা. সুলতানা আলগিন,

সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ ও

ওসিডি কনসালট্যান্ট,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
______________________

ওসিডির জন্য বংশগত কারণ যদি ৫৫ ভাগ দায়ী হয় তবে পারিপার্শ্বিক কারণ ৪৫ ভাগ। বংশগত কারণ ছাড়াও এটা হতে পারে। এই রোগের জন্য মানসিক চাপ অনেকাংশে দায়ী। শিশুরা প্রকাশ করতে পারে না, তাই তাদের প্রকাশভঙ্গি বড়দের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়। স্কুলে ভর্তি বা পরীক্ষার চাপ, সহপাঠীদের সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনা শিশুদের মনে অভিভাবকদের অজ্ঞাতেই একটা কালো ছায়া ফেলে। বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হওয়া, ছেলেদের স্বপ্নদোষ—অনেক ক্ষেত্রে ওসিডির সূত্রপাতের ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা রাখে। কিশোর বয়সে বিয়ে, গর্ভধারণ বা বাচ্চা প্রসবও প্রভাব ফেলে।

জীবনের যেকোনো ঘটনা দিয়ে রোগটি শুরু হতে পারে। ব্যক্তিজীবনের মানসিক চাপ, পরিত্যক্ত ব্যান্ডেজ বা বর্জ্য ইত্যাদি দেখেও হতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রে শারীরিক রোগের কারণে এটি হতে পারে।

ওসিডিতে ব্রেনের কর্টিকো-স্ট্রায়েটাল-থ্যালামোকর্টিক্যাল লুপ অথবা সার্কিট আক্রান্ত হয়ে থাকে। এতে শরীরে জৈব রাসায়নিক সিরোটনিন, গ্লুটামেট, ডোপামিনের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।

লক্ষণ

ওসিডির লক্ষণগুলোকে আমরা চারটি মাত্রায় ভাগ করতে পারি। কোনো না কোনো মাত্রার সঙ্গে আপনার লক্ষণগুলো মিলে যাবে। ওসিডি আক্রান্তের এক বা একাধিক রকম লক্ষণ থাকতে পারে, যা চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে নেওয়া যায়।

১. জীবাণু ও সংক্রমণজনিত উদ্বেগ।

২. ক্ষতি, আঘাত বা দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী ভেবে উদ্বেগ।

৩. অগ্রহণযোগ্য চিন্তাগুলো।

৪.সামঞ্জস্যপূর্ণ, সম্পূর্ণ ও নিখুঁতভাবে করার বিষয়ে উদ্বেগ।

আপনি কী করছেন?

ওসিডি বংশানুক্রমিক রোগ। হয়তো আপনি অনেক দিন থেকে এই রোগে ভুগছেন। আপনার কারণে আপনি নিজে বা আপনার আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী বা অনাত্মীয় কেউ মৃত্যুভয়ে আতঙ্কিত নন। আপনার ওসিডি আপনাকে একটা ভুল অযৌক্তিক চিন্তার দ্বারা তাড়িত করে। যাকে আপনি চাইলেও মাথা থেকে সরাতে পারেন না। আর তারই কারণে আপনি ধোয়াধুয়ি, গোসল করা, বাথরুমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিচ্ছেন। আপনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এতে আপনার পরিবার, আপনার পেশাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আপনার এই আচরণ আপনার পরিবারের বা সমাজের আর কেউ করছে না। আপনাকে বাধা দিলে আপনি রাগ করছেন। ঝগড়া করছেন। খাওয়াদাওয়া, ঘুম সবকিছুরই ব্যাঘাত ঘটছে। ওসিডির ক্ষেত্রে শুধু আপনিই আইসোলেশনে থাকছেন। পরিবার থেকে, সমাজ থেকে একমাত্র আপনারই সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব বাড়ছে। আপনার কাছ থেকে করোনার মতো কারও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। আপনার অজান্তেই আপনি ঘরবন্দী হয়ে পড়ছেন।

আপনি ক্রমেই অন্যান্য মানসিক রোগ যেমন বিষণ্নতা, ফোবিয়া, প্যানিক ডিজঅর্ডারে ভুগতে পারেন। নিজেকে আঘাত করার বা আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা দিতে পারে। সঙ্গে যদি অন্যান্য শারীরিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন ওষুধের মাত্রা বাড়িয়ে দিলেও এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ে।

 

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়