আমিন কাদির / রাতুল সেন

Published:
2020-06-02 14:56:31 BdST

অবসরের কালে বিএসএমএমইউ-কে নিয়ে অনন্য কবিতা লিখলেন অধ্যাপক ডা.আবদুর রহিম


 


ছবি ডা. খায়রুল বাশারের সৌজন্যে
ডেস্ক
_____________

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্যার এর শেষ কার্য দিবস ছিল ৩ ১ শে মে । প্রিয় প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউ-কে নিয়ে তিনি অসাধারণ এক কবিতা লিখেছেন। কবিতাটি এখন ব্যাপক আলোচিত। এছাড়া সংকটের প্রেক্ষাপটে শিরনামে
মায়ের চিকিৎসায় বিড়ম্বিত
বিপর্যস্ত চিকিৎসক সন্তানের অনুরোধক্রমে লেখেন অনন্য এক কবিতা। তাঁর সাম্প্রতিক কবিতা দুটি স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা প্রকাশ করছি।

প্রিয় প্রতিষ্ঠান

অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রহিম
ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

এই সেই অতিশয় প্রিয় প্রতিষ্ঠান
যেইখানে জীবনের দীর্ঘ অধিষ্ঠান
ক্রমান্বয়ে সংহত করে অবস্থান
দিয়েছে অভূতপূর্ব প্রভূত সম্মান।

প্রাণপণ সাধনায় ব্যস্ত নিরন্তর
কেটে গেছে সমুজ্জ্বল পঁচিশ বছর,
চিকিৎসা গবেষণা জ্ঞান অন্বেষণ
উন্নত করেছে কত বিন্যস্ত জীবন।

কেটেছে সময় কত তুলনাবিহীন
অপরূপ মহিমায় ভালো লাগা দিন,
যা পেয়েছি কিছুই তো তুলনীয় নয়
মনে হয় যেন কত অপার বিস্ময়।

স্পর্শ করে অভিভূত হৃদয়ে হৃদয়
যেখানে কেটেছে প্রিয় অমূল্য সময়,
পরস্পর গুণান্বিত মুগ্ধ বিনিময়
বিস্মিত করেছে স্নিগ্ধ আপ্লুত হৃদয়।

কখনো সখনো কারো ক্ষণিক বিরাগ
উপহার দিয়েছে তো মুগ্ধ অনুরাগ,
বিমুগ্ধ বিভোর কত প্রীত প্রিয়জন
উপহার দিয়েছে তো হৃদয়ে আসন।

অনেকে আবদ্ধ করে কৃতজ্ঞতাপাশে
করেছে যে কত ঋণী কত অনায়াসে,
এবংবিধ পুঞ্জীভূত গুণমুগ্ধ ঋণ
শোধ করা যাবে না তো আর কোনোদিন।

ক্রমান্বয়ে সমর্পিত হৃদয়ে আসন
মানবীয় জীবনের অতল অর্জন,
জয় করে নিতে পারা মানবহৃদয়
পৃথিবীর বুকে এক বিপুল বিস্ময়।

ভালোলাগা জীবনের মধুর সময়
সাবলীল গতিতেই প্রবাহিত হয়,
তবু যেন মনে হয় এই তো সেদিন
এইখানে এসে আমি হয়েছি বিলীন।

জীবনের সাহজিক স্নিগ্ধ প্রেমময়
মিশে গেছে কত যেন হৃদয়ে হৃদয়,
প্রবাহিত হৃদয়ের স্নিগ্ধ অনুরাগ
হৃদয়ে হৃদয়ে কত কেটে গেছে দাগ।

উপভোগ্য জীবনের সৌন্দর্যনিচয়
যেইখানে প্রস্ফুটিত বিকশিত হয়
এই সেই হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়
গ্রথিত রয়েছে যেথা আবিষ্ট হৃদয়।

আবেগের অশ্রুধারা হয়নি নিঃশেষ,
শোভনীয় মোহনীয় স্নিগ্ধ প্রতিবেশ
আলোড়িত পরিপ্লুত সুষমা বিশেষ
এ জীবনে কোনোদিন হবে না তো শেষ।

অন্তহীন জীবনের অনুসন্ধিৎসায়
শেষ হলো বর্ণময় উজ্জ্বল অধ্যায়,
সাধনায় প্রার্থনায় থেকে অবিচল
অনন্ত জীবন হোক সার্থক সফল।

------------
সংকটের প্রেক্ষাপটে

 

(শ্রদ্ধেয়া মায়ের চিকিৎসায় বিড়ম্বিত
বিপর্যস্ত চিকিৎসক সন্তানের অনুরোধক্রমে)

মানবীয় জীবনের সাহজিকতায়
আকস্মিক সৃষ্টি করে বড়ো অন্তরায়
বিশ্বজুড়ে করে সব ওলটপালট
করোনায় সৃষ্ট আজ কত-যে সংকট!

সংকটের প্রেক্ষাপটে সীমাবদ্ধতায়
রোগ নির্ণয়ের কোনো অনিশ্চয়তায়
যে-কোনো ব্যাঘাত যদি ঘটে চিকিৎসায়
থাকে না তা গ্রহণীয় সহনীয়তায়।

বিশেষত কোনোভাবে কোনো অবস্থায়
মায়ের চিকিৎসায় কোনো অন্তরায়
সন্তানেরা যদি কভু হয় সম্মুখীন
শুরু হয় কষ্টকর দুর্বিষহ দিন।

মায়ের সুচিকিৎসায় বাধাবিঘ্নতায়
নিদারুণ কষ্টক্লেশে মন ভেঙে যায়,
প্রত্যাশায় ভারাক্রান্ত বিষাদিত মন
এমনটা যেন কারো না-ঘটে কখন।

চিকিৎসক সন্তানের হেন ব্যর্থতায়
পরিস্থিতি থাকে না তো সহনীয়তায়,
হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরে মুক্তির উপায়
ধন্য হতে পারে যেন ঠিক চিকিৎসায়।

অবশেষে পেয়ে কোনো সুবর্ণ সুযোগ
যথাসাধ্য করে তার সমূহ প্রয়োগ
ক্রমান্বয়ে কার্যকর উন্নতিসাধন
আলোকিত প্রত্যাশায় ভরে যায় মন।

কায়মনোবাক্যে নিত্য করে নিবেদন
দয়াময় করে যেন প্রত্যাশা পূরণ,
আল্লাহর রহমতে দ্রুত সুস্থতায়
অশ্রুসিক্ত চোখে করে শোকর আদায়।

চলমান সময়ের সীমাবদ্ধতায়
মানুষকে হতে হয় কত অসহায়,
অন্তরালে চুপিসারে অশ্রুবিসর্জন
বিপর্যয়ে সাথি হয়ে থাকে অনুক্ষণ।

চিকিৎসাযোগ্য কিন্তু হারায় সুযোগ
বাস্তবে এবংবিধ থাকে অভিযোগ,
চিকিৎসাবিহীন যদি ঘনায় মরণ
মেনে নিতে পারে না তো আত্মীয়স্বজন।

সমন্বয়হীন কোনো ব্যবস্থাপনায়
চিকিৎসায় ঘটে যদি কোনো অন্তরায়
থাকে না তো কখনো তা গ্রহণীয়তায়
বিষাদিত মনঃকষ্ট আরো বেড়ে যায়।

মরণ তো নির্ধারিত থাকে চিরদিন
প্রত্যাশিত নয় তবু চিকিৎসাবিহীন,
সথাসাধ্য চিকিৎসায় মৃত্যু যদি হয়
মেনে নিতে পারে কষ্টে ব্যথিত হৃদয়।

প্রত্যাশিত উন্নয়ন স্বাস্থ্যব্যবস্থায়
যথাযথ সমন্বিত উন্নত সেবায়
পরিতুষ্ট পরিতৃপ্ত থাকে যদি মন
বেঁচে যেতে পারে কত বিপন্ন জীবন।
______________

ডা. খায়রুল বাশার জানান,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্যার অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রহিম এর শেষ কার্য দিবস ৩ ১ শে মে
, স্যার এর সুস্থতা কামনা করি।

______________________

 

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়