Ameen Qudir

Published:
2016-12-02 16:30:12 BdST

রংপুরে রেপ,শেবাচিমে কোপ : এ কেমন মিডিয়াবাজি


  একটি ঘটনায় প্রতিবাদের প্রতিকী ছবি।

 

 

 

ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী
_______________________

 

রংপুরে বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটিতে একটি ছাত্র সংগঠনের দুই ছেলে গত বছর শ্লীলতাহানি করেছে এক ছাত্রীর,যার ফলশ্রুতিতে বন্ধ হয়ে গেছে ঐ শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা।ঐ দুই ছাত্রই সম্প্রতি হোস্টেলে থাকা দুই শিক্ষিকাকে লাঞ্জিত করেছে।।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে টিভি টক শো।
ছাত্রলীগ সভাপতিকে প্রশ্ন বানে জর্জরিত করা হচ্ছে।।
ভাল লাগল মিডিয়ার এই সচেতনতা।।


কিন্তু অবাক হলাম তখন যখন!যখন শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ লেডিস হোস্টেলে যাওয়ার রাস্তায় বিকেলে এবং সন্ধ্যার পরে ঘটিত ইভটিজিং এর বিপক্ষে দাঁড়াল,,প্রতিহত করতে পদক্ষেপ নিল তখন প্রিন্ট মিডিয়াগুলো এবং অন লাইন পোর্টাল গুলোর নেগেটিভ সংবাদ পরিবেশনা এবং কলেজ কতৃপক্ষকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করতে দেখে!
সাংবাদিকদের কাছে আমার প্রশ্ন,তাদের সমস্যা ইভটিজিং,,নারীর সম্মান হানিতে না ছাত্রলীগে???
লেডিজ হোস্টেলের মেডিকেল ছাত্রীদের রাতে ওয়ার্ডে ক্লাস থাকে।ইন্টার্ন ডাক্তারদের নাইট ডিউটিতে যাওয়া আসা,কখন ও বা ওটি শেষে ফিরতে রাত হয়!আর এই রাত্রবেলাতে হাসপাতাল থেকে ফেরার এইটুকু পথের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম আমার দেশের পুলিশ প্রশাসন।প্রতিনিয়ত ই আমার মেয়েরা ইভটিজারদের অভদ্র আচরনের শিকার হচ্ছে।

এমতাবস্থায় আমার মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ যুগপযোগী এবং প্রশংসনীয় ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে নিজ কলেজের ক্লাসমেট,ফ্রেন্ড,বড় আপু এবং ছোট আপুদের অসম্মানের হাত থেকে বাঁচাতে!
আমি তো মনে করি এদের সাক্ষাৎকার নেয়া উচিত।তরুন প্রজন্মের কাছে আমাদের ছেলেরা উদাহরন হতে পারত।কেবল মেডিকেল স্টুডেন্ট বলেই মিডিয়া তাদের হিরোর বদলে জিরো বানালো।
ঠিক এই ভাবেই একটু অবসরে প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে টিভির সামনে বসলে এক একটা প্রোগ্রামে সেলিব্রেটিদের সাক্ষাৎকার শুনি।।


কে কত বড় চরিত্রহীন ছিল,ফাঁকিবাজ ছিল,ঈদের ছুটিতে কতটি মেয়ের পেছনে লাইন মেরেছে,পূজার ছুটিতে মেয়েটি কটা প্রেমিক জুটিয়ে অবশেষে নায়িকা গায়িকা হয়েছেন তার ই প্রতিবেদন।
জাষ্ট রাগে গা জ্বলতে থাকে।কি শেখার আছে এসব থেকে?

আমরা জানি জীবন মানে কি?প্রফ মানে কি??কতগুলো শীতের রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়!এক একটি পরীক্ষাতে কতজন একিউট সাইকোসিস বা পেনিক এট্যাকের শিকার হয়!আমরা জানি কত ঈদ জলাঞ্জলি দিয়ে ডাক্তার হওয়া যায়!!
আমাদের মধ্যে এখন সব আছে।
গায়ক - গায়িকা,অভিনেতা - অভিনেত্রী,বাদ্য শিল্পী,বংশী বাদক,ম্যান্ডোলিন বাদক,গিটার বাদক,নিউজ প্রেজেন্টার,এংকর সব আছে সব।।
খুব কি কঠিন কাজ একটি টিভি চ্যানেলের ইনিশিয়েটিভ নেয়া।

সত্যিই আমাদের চিকিৎসকদের একটি মাধ্যম চাই।হতে পারে সেটা বিএমএ র তত্বাবধায়নে বা কোন গ্রুপ অব ডক্টর অথবা প্লাটফর্ম।।

সেই চ্যানেল কেবল আমাদের কথা বলবে।আমাদের সংবাদ পরিবেশন করবে।আমাদের কে কত বড় ফালতু থেকে জনপ্রিয় অভিনেতা হয়েছে তা জানার ইচ্ছে নেই।কিন্তু কতটা ডেডিকেশন,ধৈর্য,কর্মস্পৃহা দিয়ে একজন ডাঃ এম আর খান হয়েছিলেন।ডাঃ দীন মোহম্মদ হয়েছেন জানার আছে।
তাই আমাদের নিজেদের একটু স্পেস দিতে এই মুহূর্তের বাংলাদেশে ডাক্তার পরিচালিত,ডাক্তারদের জন্য একটি টিভি চ্যানেল অত্যন্ত জরুরী।।
আমরা আমাদের হিরোদের টিভি স্ক্রীনে দেখতে চাই।গল্প শুনতে চাই।।লিজেন্ডদের কথা শুনতে চাই।।নিজেদের বিরুদ্ধে করা ষড়যন্ত্র আর সব কালো আইনের বিরুদ্ধে জনমত গড়তে চাই।।

তাই এই গুরুতর বিষয়টি ভেবে দেখা কি খুব কঠিন?

______________________

 


লেখক ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী । সুলেখক। মেডিকেল অফিসার , শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

আপনার মতামত দিন:


ক্যাম্পাস এর জনপ্রিয়