Ameen Qudir

Published:
2016-12-17 00:40:17 BdST

ডাক্তার নুজহাতের চোখে বাংলাদেশের অশ্রু


 

ডাক্তার প্রতিদিন
_______________________

শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা নুজহাত কাঁদলেন,কাঁদালেন সবাইকে। তার চোখের অশ্রু বাংলাদেশের কান্না হয়ে ঝরলো। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদ পিতার স্মৃতিচারণে তিনি মর্মস্পর্শী বক্তব্য রাখেন এক অনুষ্ঠানে।

এসময় তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকে একাত্তরের ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে অন্যদের সঙ্গে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে রাখা হয়। ওখানে কী করা হয়েছে-এ অংশটি আমি আর চিন্তা করতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই-১৮ তারিখে (১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর) যখন বাবার লাশ পাই, তখন তার বুকটা গুলিতে ঝাঁঝরা ছিলো। তার কপালে বেয়োনেট চার্জ করা ছিলো।’

নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘এই দিবসটিতে কথা বলা খুবই কষ্টকর। একাত্তরের এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসায় ঘুরে ঘুরে আমাদের বাবাদের (শহীদ বুদ্ধিজীবীদের) চোখে কাপড় বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু লোক দেশের সর্বোচ্চ মেধার অধিকারী কিছু মানুষকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। পেছনে পড়ে থাকছে তাদের স্ত্রী, ছোটো ছোটো সন্তান।’

‘একটি সুন্দর সোনার বাংলা দেখবো বলে আমরা এই ত্যাগ হাসি মুখে মেনে নিয়েছি। আমাদের বাবারা চলে গেছেন মাথা উঁচু করে, আমাদের মায়েরা ছিলেন, তারা কিন্তু অভিযোগ ছাড়াই, কোনো অনুযোগ ছাড়া চোখের জল গোপন করে দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সংগ্রাম করছেন।’

বাবার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি আমার বাবার খুবই আদরের মেয়ে ছিলাম। আমার ঠিক এক বছরের বড় একটি বোন আছে। তাই আমার মা আমাকে ঠিকমতো সময় দিতে পারতেন না। আমার বোনটিও একটু অসুস্থ ছিলো। মার অজান্তেই আমি ঠিক আমার বাবার বুকের ওপর গিয়ে পড়েছিলাম। এতো ব্যস্ত একজন ডাক্তার রাতে বাসায় ফিরে ওইটুকু মেয়েকে নিয়ে বুকের মধ্যে ঘুমুতেন। পাশ হতে পারতেন না, কাৎ হতে পারতেন না।’

বাবার স্মৃতি বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে ডা. নুজহাত চৌধুরীর। এ সময় অনুষ্ঠানস্থল রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে উপস্থিত অতিথিদেরও চোখে জল আসে। অনেককেই চোখ মুছতে দেখা যায় । আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আপনার মতামত দিন:


বিএসএমএমইউ এর জনপ্রিয়