Ameen Qudir
Published:2016-11-26 05:01:39 BdST
এই তিন নারীর অবদানের কথা জানলে সত্যি মুগ্ধ হবেন
ডা. তারিক রেজা আলী
______________________
ছবিতে তিনজন মহিয়সী নারী কে দেখতে পাচ্ছেন। আমি ধন্য, তাঁদের একসাথে পেয়েছি, ওনাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছি।
এই তিনজনই তাঁদের স্বামীকে হারিয়েছেন। সামনে বসা অধ্যাপক এ. এইচ. সাইদুর রহমান স্যারের স্ত্রী। অধ্যাপক সাইদুর রহমান ছিলেন প্রখ্যাত চক্ষু চিকিৎসক, ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি। সারা জীবনে তৈরী করেছেন অসংখ্য চক্ষু চিকিৎসক।
তাঁর পিছনে বাম দিকে ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন সাহেবের সহধর্মিনী। আব্দুল মতিন সাহেব পরিচিত ছিলেন 'ভাষা মতিন' হিসেবে। ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদান নতুন করে বলার ধৃষ্টতা আমার নেই, প্রয়োজনও নেই।
এরপর আছেন আমাদের বৌদি, আমার বন্ধু অকাল প্রয়াত ডা. বাবুল চন্দ্র দে শিশিরের স্ত্রী। শিশির ছিলেন সন্ধানীর একনিষ্ঠ কর্মী বলতে যা বুঝায় তাই। অত্যন্ত অল্প বয়সে দুটি শিশু সন্তান কে অনাথ করে পরপারে চলে গেছেন তিনি।
কেন মহিয়সী বললাম এই তিন নারীকে? কারণ তাঁরা তিনজনই তাঁদের প্রয়াত স্বামীকে বাঁচিয়ে রেখেছেন মরণোত্তর চক্ষুদানের মাধ্যমে। তাঁদের সবচেয়ে প্রিয়জনের মৃত্যুর পর শোকবিহ্বল সময়ে শোক কে অতিক্রম করে দিয়েছেন চোখের কর্ণিয়া সংগ্রহের প্রয়োজনীয় অনুমতি। এ কাজ সহজ নয়, এ দান যেমন মহান করেছে প্রয়াত তিনজনকে, একই ভাবে মহিমান্বিত করেছে তাঁদের স্ত্রী তথা পরিবারের সব সদস্যকে। তাঁরা যদি অনুমতি না দিতেন, কর্ণিয়া সংগ্রহ অসম্ভব ছিল। তিনজনের ছয়টি কর্ণিয়া দিয়ে দেখছেন ছয়জন অন্ধ মানুষ।
সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির ৩২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আজ তাঁরা এসেছিলেন। আরে ছিলেন কর্ণিয়া সংযোজন করা হয়েছে এমন সাতজন রোগী। এ এক অন্যরকম মিলন মেলা। আবেগের মিলন, দায়বদ্ধতার মিলন। এ এক অন্যরকম অনুভূতি !
______________________________
লেখক ডা. তারিক রেজা আলী , সুলেখক ।
সহকারী অধ্যাপক, রেটিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
আপনার মতামত দিন: