Ameen Qudir

Published:
2018-02-03 00:39:51 BdST

প্রথম ইনিংসেই এ পর্যন্ত ১০১৭ রান , উইকেট পড়েছে ১৩


 




ডেস্ক রিপোর্ট

__________________________

বোলিংএ কোন ধার নেই। দুর্বল ফিল্ডিং, মওকা হাতছাড়া করা আর বাজে শরীরী ভাষা-এ ছিল এ পর্যন্ত তিনদিনে চট্টগ্রাম টেস্টের চিত্র। পুরো দিনের সেশন শেষে দুটি পতন। কুশ ল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট। তবে দুজনই করেছেন বিশাল সেঞ্চুরি। একজন ডাবলের অপেক্ষায়ও ছিলেন।

 

শুক্রবার চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ৫০৪। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৫১৩।

 

 

রান উৎসবের দিনে শ্রীলঙ্কার খানিকটা আক্ষেপের গল্প জড়িয়ে প্রাপ্তির সঙ্গেই। ডাবল সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও করতে পারেননি ধনঞ্জয়া ও মেন্ডিস। ১৭৩ রানে ফিরেছেন ধনঞ্জয়া। মেন্ডিসের ইনিংস যেমন আরেকটু বড়, আক্ষেপও বেশি। আউট হয়েছেন ১৯৬ রানে!

তবে ৩০৮ রানের জুটিতে দুজন উঠেছেন একটি চূড়ায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি এটিই। পেছনে পড়ে গেছে ২০০২ সালে গ্রায়েম স্মিথ ও গ্যারি কারস্টেনের ২৭২ রানের জুটি।

বাংলাদেশের স্পিনারদের বোলিং ছিল নখদন্তহীন। নেতৃত্বের অভিষেকে খুব উদ্ভাবনী বা চমক জাগানিয়া কিছু দেখাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। প্রাণহীন উইকেটে নিজেকে উজার করে বোলিং করলেন কেবল মুস্তাফিজুর রহমান।

 

সকালে বাংলাদেশ নতুন দিন শুরু করেছিল নতুন আশায়। কিন্তু ফিরে আসে আগের দিনের ভূত। আবারও সুযোগ হাতছাড়া।
আগের দিন দুই দফায় বেঁচে যাওয়া কুশল মেন্ডিসকে ২৩তম জন্মদিনের উপহার সকালেই দিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ মিরাজ। কঠিন ছিল কাজটা, তবে স্লিপে তো ক্যাচ তো আর সবসময় সরাসরি হাতে আসবে না!

জীবন পেয়ে দ্রুতই সেঞ্চুরিকে আলিঙ্গন করেছেন মেন্ডিস। চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ২০০ বলে।

গত ভারত সফরের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যান। ফর্মে না থাকা তরুণকে ভারতের কঠিন বোলিংয়ের সামনে পাঠিয়ে আত্মবিশ্বাস আরও তলানিতে নামতে দিতে চাননি নির্বাচকেরা। বাংলাদেশের এবার বোলার-ফিল্ডাররা বাড়িয়ে দিয়েছেন বন্ধুত্বের হাত। মেন্ডিস সানন্দে ফিরেছেন ফর্মে।

আগের দিনই সেঞ্চুরি করা ধনঞ্জয়া এদিনও শুরু থেকে ছিলেন সাবলীল। একটুর জন্যও ছিল না তার ব্যাটে কোনো অস্বস্তি। ক্রিজে দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান বলেই কিনা, মিরাজকে দিনের প্রথম ২৭ ওভারে বোলিংয়েই আনেননি অধিনায়ক।

 

Image result for sri lanka bangladesh test chittagong 2018

 

প্রথম সেশন বাংলাদেশের জন্য ছিল নিষ্ফলা। ৩১ ওভারে শ্রীলঙ্কা তোলে ১০৮ রান।

লাঞ্চের পরপর জুটির রান ছাড়ায় তিনশ। জুটির পথচলাও থামে খানিক পরই। দ্বিতীয় বলে মুস্তাফিজকে পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন ধনঞ্জয়া। ১৭৩ রানের ইনিংসটি টেস্টে তো বটেই, প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেই তার সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশের সুযোগ ছিল নতুন উদ্যমে ম্যাচে ফেরার লড়াই করার। পথও বের হয়েছিল। কিন্তু যথারীতি নিজেরাই নষ্ট করেছে সুযোগ!

মিরাজের বলে ১ রানেই রোশেন সিলভার স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেন লিটন দাস। মেন্ডিসের সঙ্গে রোশেন গড়ে তোলেন শতরানের জুটি।

সেঞ্চুরির পর মেন্ডিস ছিলেন আগ্রাসী। ফিরেছিলেন নিজের সেরা ফর্মে। ডাবল সেঞ্চুরিকে মনে হচ্ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। হঠাৎই ১১ মাস আগের ভুল করে বসলেন আবার।
গত মার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে গলে ১৯৪ রান করে আউট হয়েছিলেন ছক্কা মারার চেষ্টায়। এবার ১৯৬ রান থেকে তুলে মারতে গেলেন তাইজুলকে। অনেকটা দৌড়ে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নিলেন মুশফিকুর রহিম। জন্মদিনে দুর্দান্ত ইনিংসের সঙ্গে যোগ হলো ৪ রানের আক্ষেপ!

বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরতে পারেনি এরপরও। অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালের সঙ্গে রোশেন সিলভার জুটিও দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন ৮৯ রানে। অভিষেকে টেস্টে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস খেলা রোশেন এবার অপরাজিত ৮৭ রানে।

এই বাংলাদেশে একটি সুখস্মৃতি আছে তার। ২০১৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে একটি ম্যাচে মুমিনুল হকের সঙ্গে গড়েছিলেন ২৭৬ রানের জুটি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যেটি চতুর্থ উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটির বিশ্বরেকর্ড। এবার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সুবাসও পাচ্ছেন এই বাংলাদেশেই।

 

 

দিন শেষে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস নেই। কোনক্রমে বললেন “দ্বিতীয় ইনিংসে আমাদের খুব ভালো ব্যাটিং করতে হবে।”

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫১৩

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১৩৮ ওভারে ৫০৪/৩ (আগের দিন ১৮৭/১)(মেন্ডিস ১৯৬, ধনঞ্জয়া ১৭৩, রোশেন ৮৭*, চান্দিমাল ৩৭*; মুস্তাফিজ ১/৮৮, সানজামুল ০/১২৮, মিরাজ ১/৯৭, তাইজুল ১/১৪৪, মোসাদ্দেক ০/২৪, মুমিনুল ০/৬, মাহমুদউল্লাহ ০/৭)।

আপনার মতামত দিন:


খেলা এর জনপ্রিয়