DR. AMINUL ISLAM

Published:
2024-09-03 10:31:07 BdST

সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা: জানালেন কি করতে চান, কি করবেন , কিভাবে করবেন



ডেস্ক
__________________________

বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম দিক নির্দেশনামূলক মত জানিয়েছেন। জানালেন কি করতে চান, কি করবেন , কিভাবে করবেন ।

পাঠকদের জন্য তা প্রকাশ হল।
প্রশ্ন: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়টি বেশ বড়, বেশ জটিল। এখানে অনেক ধরনের কাজ। স্বাস্থ্য খাতে আপনার অগ্রাধিকার কী?
নুরজাহান বেগম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের ব্যাপারে কী করতে পারি, সেটাই প্রথম প্রশ্ন। অগ্রাধিকারের তালিকার প্রথমে সেটাই। আহত–নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা নির্ণয় এবং তাঁদের চাহিদা বা প্রয়োজন নির্ধারণের জন্য সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে। এই কমিটি একটি নীতিমালাও তৈরি করবে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এবং আহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে কী সহায়তা করা হবে, কীভাবে সহায়তা করা হবে—এ নিয়ে কাজ চলছে।
বর্তমানে হাসপাতালে আহত রোগীদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। অনেকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, ওই সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন সেবার মূল্য কম নেয়, এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেউ ইতিমধ্যে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে থাকলেও তা–ও ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

আমরা জেনেছি, একাধিক গুরুতর ও জটিল আহত ব্যক্তির চিকিৎসা দেশে সম্ভব হবে না। তাঁদের চিকিৎসা বিদেশে করতে হবে। দু–একজনকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগও সরকার নিয়েছে।

আন্দোলনে অনেক মানুষ চোখে আঘাত পেয়েছেন। অনেকের চোখ নষ্ট হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেবা ফাউন্ডেশন সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। তারা ঢাকার দুটি, চট্টগ্রামের একটি এবং দিনাজপুরের একটি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে যৌথভাবে চিকিৎসার কাজ করবে। পাশাপাশি তারা কিছু আর্থিক সহায়তাও দেবে।


প্রথম আলো: এই কাজগুলো কি ঠিকভাবে হচ্ছে বলে আপনার মনে হয়?
নুরজাহান বেগম: দেশের একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করছি। এরই মধ্যে আবার হঠাৎ বড় রকমের বন্যা দেখা দিল। আমরা বানভাসী মানুষের জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লাম। বন্যাদুর্গত এলাকায় চিকিৎসক, নার্স কম। বেশ কিছু চিকিৎসক ফেনীতে পাঠানো হয়েছে। আরও পাঠানো হবে। আমরা যা করতে চাই, তা শতভাগ ঠিকভাবে হচ্ছে—এ কথা আমি জোর দিয়ে বলতে পারছি না, তবে আন্তরিকভাবে করার চেষ্টা করছি। বন্যা আমাদের মনোযোগ হঠাৎই অন্য দিকে নিয়ে গেছে।

প্রথম আলো: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কী হচ্ছে, একদিকে মিছিল, অন্যদিকে মহাপরিচালক অফিস করতে পারছেন না?
নুরজাহান বেগম: অন্য সব ক্ষেত্রের মতো অভিযোগ আছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বৈষম্য হয়েছে। অনেক মানুষের প্রতি নানা ধরনের বৈষম্য করা হয়েছে। সহ্যের সীমার বাইরে দুর্নীতি হয়েছে। শুধু আর্থিক দুর্নীতি নয়, দুর্নীতি নানাভাবে হয়েছে। মেধার মূল্য দেওয়া হয়নি। একজন দক্ষ ব্যক্তিকে এমন জেলায় বদলি করা হয়েছে, যেখানে তাঁর জ্ঞান বা দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগই নেই। ভালো ও সৎ মানুষকে চাপে রাখা হয়েছে। এসব দীর্ঘদিন চলে আসার কারণে কারও কারও মধ্যে ক্ষোভ আছ। আমি সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলব। বৈষম্যের শিকার যাঁরা হয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ বা কথা শোনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সন্তুষ্ট চিত্তে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য। আশা করছি নতুন মহাপরিচালকও অফিসে বসতে পারবেন, নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন।
প্রথম আলো: আপনি কাদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন? অনেক চিকিৎসকই তো কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক বা কর্মী।
নুরজাহান বেগম: ধর্ম, বর্ণ, দল—এগুলো মেনে আমি চলব না। আমি দেখব যোগ্যতা। ছাত্ররা কী চেয়েছেন? পরিবর্তন চেয়েছেন। একজনকে সরিয়ে অন্য একজনে বসালেই কি পরিবর্তন হবে? হবে না। মানুষ যেমন সরাতে হবে, একই সঙ্গে যোগ্য মানুষকে রাখতে হবে, সঠিক জায়গা দিতে হবে। পরিবর্তন আনতে হলে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার খুবই জরুরি। চিকিৎসকদের দলীয় মতাদর্শের প্রতিফলন কর্মক্ষেত্রে পড়বে, এটা কেউ আশা করে না।
প্রথম আলো: স্বাস্থ্য খাত অনেক বড়, জটিল। এর সংস্কার করা কঠিন। কীভাবে সংস্কার করবেন? কোথায় হাত দেবেন? কেউ কেউ স্বাস্থ্য কমিশন করার কথা বলছেন।
নুরজাহান বেগম: স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার তাড়াতাড়ি সম্ভব না, তড়িঘড়ি করে করা যাবে না, উচিতও না। প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য নীতিমালা করতে হবে। চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ বহু ধরনের কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছেন। আছে নানা স্তরের শিক্ষা ও সেবা প্রতিষ্ঠান। সংস্কার হতে হবে সবার জন্য, সব প্রতিষ্ঠানের জন্য। কাজটি করার জন্য বিশেষজ্ঞদের দরকার, আমি বিশেষজ্ঞদের কমিটি দিয়ে কাজটি করাতে চাই। এ রকম একটি কমিটি ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশন করার মতো চিন্তা আপাতত নেই।
আশির দশকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একটি স্বাস্থ্যনীতি দিয়েছিলেন। সেই নীতি অনুসরণ করলে স্বাস্থ্যে আজকের এই জটিল সমস্যা হয়তো সৃষ্টি হতো না। আমরা আধুনিক একটি স্বাস্থ্যব্যবস্থা পেতে পারতাম। সেটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। আমরা তাঁর দেওয়া ওষুধনীতির কথা স্মরণ করতে পারি। ওষুধনীতির কারণে বাংলাদেশ ওষুধের ক্ষেত্রে দৃঢ় অবস্থানে আছে।


প্রথম আলো: গোটা স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার খুব শিগগির হবে, এটা আশা করা উচিত নয়। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন কী কোথাও হচ্ছে?
নুরজাহান বেগম: মডেল হিসেবে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বেছে নিয়েছি। আমরা ঢাকা মেডিকেলকে বিশ্বের সেরা হাসপাতাল হয়তো করতে পারব না, তবে চেষ্টা করলে এশিয়ার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারব। আমি ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানকে বলেছি, কোন তিন-চারটি পরিবর্তন আপনি ১০০ দিনের মধ্যে করে দেখাতে পারবেন? তিনি কিছু কাজ শুরু করেছেন।
এক নম্বরে আছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের দৌরাত্ম্য কমানো। একটি সিন্ডিকেট অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিয়ন্ত্রণ করে। শুনেছি হাসপাতালের কর্মচারী, কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এর অংশ। তাঁদের কারণে রোগীরা নিজেদের পছন্দমতো অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে বা ব্যবহার করতে পারেন না। এই সিন্ডিকেট ভাঙা হবে। ঢাকা মেডিকেল ২ হাজার ৬০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু রোগী ভর্তি থাকে গড়ে চার হাজারের ওপরে। বারান্দায়, সিঁড়ির নিচে এমনকি ওয়াশরুমের সামনে রোগী থাকে। রোগীর সঙ্গে দুই, তিন, চারজন করে অ্যাটেনডেন্ট থাকেন। এর সঙ্গে আছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। এই ভিড়ে, এই পরিবেশে মানসম্পন্ন সেবা সম্ভব নয়। কিন্তু এভাবেই চলে আসছে যুগের পর যুগ।

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ভিড় করার পাশাপাশি চিকিৎসকদের অনেকটা সময় নিয়ে নেন। ওই সময় রোগীদের পাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক রোগীর অ্যাটেনডেন্ট ও কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালের প্রবেশের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবেন। তিনি কাজও শুরু করেছেন। এ ছাড়া হাসপাতালের প্রবেশপথের আশপাশ থেকে অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করবেন বা করে ফেলেছেন। এই বাহ্যিক বিষয়গুলো ঠিকঠাক করার পর আমরা সেবার বিষয়গুলোতে হাত দেব।

ঢাকা মেডিকেল দেখার পর আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিছু পরিবর্তন দেখতে চাই। এসব অভিজ্ঞতা আমরা পরে সারা দেশে প্রয়োগ বা ব্যবহার করার চেষ্টা করব।

প্রথম আলো: সেবার ক্ষেত্রে কোন ধরনের দুর্বলতা আপনার চোখে পড়েছে?
নুরজাহান বেগম: নার্সিংয়ের ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে। যত নার্স আছেন, তা দিয়ে মানসম্পন্ন সেবা আশা করা যায় না। প্রশিক্ষিত, দক্ষ নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। অন্য একটি প্রসঙ্গের অবতারণা করতে চাই, কোনো চিকিৎসক বা প্রতিষ্ঠান পরিপূর্ণ সেবা দিতে না পারলে তাদের উচিত রোগী আটকে না রেখে রেফার করে দেওয়া।
প্রথম আলো: রোগী রেফার করা নিয়ে আলোচনা বহু বছর ধরে চলছে। কিন্তু একটি কার্যকর রেফারেল পদ্ধতি গড়ে ওঠেনি।
নুরজাহান বেগম: স্বাস্থ্যসেবার বিকেন্দ্রীকরণ করা সম্ভব হলে রেফারেল পদ্ধতি কার্যকর করা যাবে বলে আমি মনে করি। ধরে নিই উপজেলা হাসপাতালে ১৪ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু কাজ করছেন দুই জন। অন্যরা সবাই ঢাকায়। ঢাকা বা ঢাকার আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যাধিক্য। এটাই বৈষম্য। অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় প্রভাবের কারণে এটা হয়েছে।
এই অবস্থায় উপজেলায় কে চিকিৎসা দেবে, কে রোগী রেফার করবে। চিকিৎসা না পেয়ে রোগী সরাসরি ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো শহরের হাসপাতালে আসেন। বড় শহরে রোগী আসা বন্ধ করতে হলে উপজেলা বা গ্রামে মানসম্পন্ন সেবা থাকতে হবে।

অন্য আর একটি সমস্যাও আছে। চিকিৎসকদের থাকার মতো বাসস্থানের সংকট আছে। থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা না করে থাকতে বলা কতটা যৌক্তিক, তা–ও আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি।

প্রথম আলো: কিন্তু এখন তো কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে, এটা কীভাবে সামলাবেন?
নুরজাহান বেগম: অনেকের গায়ে দলের ছাপ আছে। বর্তমানে চাপের মুখে অনেকে পদত্যাগ করেছেন, অনেকে বাধ্য হয়েছেন। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে যে যাঁর মতো করে অফিস অর্ডার করছেন। এটা ঠিক হচ্ছে না। প্রশাসনকে প্রশাসনের মতো চলতে দিতে হবে। নিয়মনীতি মানতে হবে। প্রয়োজনে নিয়মনীতি বদলাতে হবে। কিন্তু যা আছে, তা মানতে হবে। না মানলে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
অনেক মেডিকেল কলেজ থেকে অধ্যক্ষরা পদত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন। এখন একসঙ্গে এত মেধাবী লোক কোথায় পাওয়া যাবে? আবার অন্যদিকে অকারণে মেধার অপচয় হতে দেখা গেছে। এসব মেনে নেওয়া যায় না। উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক থাকতে চান না। অভিযোগ করা হয়, সেখানে থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ভালো ব্যবস্থা থাকার পরও কেউ যদি উপজেলা হাসপাতালে না থাকেন, তবে তাঁকে আর সরকারি চাকরিতে থাকতে হবে না, বিদায় নিতে হবে।


প্রথম আলো: স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি একটি বহুল আলোচিত বিষয়। দুর্নীতি কি কমিয়ে আনা বা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে?
নুরজাহান বেগম: স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি হয় চিহ্নিত কয়কটি ক্ষেত্রে: নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, প্রশিক্ষণ ও কেনাকাটা। প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম, নীতি ও পদ্ধতি আছে। সবকিছু যদি নিয়ম, নীতি ও পদ্ধতি মেনে হয়, তাহলে দুর্নীতি হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি পদ্ধতির মধ্যে কোনো গলদ থাকে, তাহলে বেশি দূর যাওয়া যাবে না। তাই পদ্ধতি শক্তিশালী করা খুব জরুরি। ব্যক্তিও গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতির ব্যাপারে আমার অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আমি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলব।
প্রথম আলো: আপনার এই যাত্রায় আপনি কাকে সঙ্গে পেতে চান?
নুরজাহান বেগম: আমি এই যাত্রায় সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাব। এত রক্তের বিনিময়ে, ছাত্র–জনতার ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পেয়েছি। এই সুযোগ কাজে লাগাতে প্রত্যেককেই এগিয়ে আসতে হবে সাহস নিয়ে। আমরা নিশ্চয়ই ভালো স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব।

সৌজন্যে দৈনিক প্রথম আলো
#

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়