Dr.Liakat Ali

Published:
2022-03-26 07:58:13 BdST

বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলে অনুসরণ করুন ৫০ ৫০ সূত্র


 


অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
__________________________


বয়স ৫০এর পরে কি করবেন, কি করা যাবে না।

শরীর এক দুর্জ্ঞেয় মেশিন বটে তবে এর চালক সেই মহান সৃষ্টিকর্তা। আর চালক যেমন করে ঘোরান তেমনি চলে। তবে এই মেশিন ভাল চলার জন্য চাই ভাল জ্বালানি।আর তাই দরকার সুষম, পুষ্টিকর খাবার। জ্বালানি যতই মান সম্মত হোক বয়সের সঙ্গে তা বদলায়। ২০ বছরের যে খাবার, তা ৫০ এর পর একরকম না-ও থাকতে পারে।



তাই বয়স্ক হলে আহার পানের একটি পরামর্শ থাকে। যাতে ওজন থাকে স্বাস্থ্যকর, শরীর থাকে সবল।

১। নিজ দেহের ওজন যত এর অর্ধেক পরিমান পানি (আউন্সে) গ্রহণ করা। ওজন যদি হয় ১৩২ পাউন্ড (৬০ কেজি) তাহলে গ্রহণ করা উচিত অন্তত ৩০ ফ্লয়িড আউন্স পানি। এর মানে ৮৯০ মিলিলিটার । অন্তত। এই পরিমান পান করতে হবে তবে চাহিদা হলে এর বেশিও পান করা যায় । একটা কথা বলা ভাল, বয়স বেশি হলে পিপাসার চেতনা কমে তাই নিরুদন হলেও অনেক সময় টের পাওয়া যায় না।

যদি শরীর চর্চা করেন তাহলে ব্যায়ামের সময়, এর আগে আর পরে পানি পান করতে হবে। যাতে শরীর চর্চার পর শরীর পুনঃস্থিত হয়।

২। খুব বেশি চিনি বা ফ্যাট খাদ্য বা পানীয়ের বদলে কম পরিমান চিনি/ফ্যাট যুক্ত খাদ্য/পানীয় গ্রহণ।

অনেকে ক্যাফিন গ্রহণে অনুরক্ত, প্রিয় তাদের ক্রিম ফ্লেভার কফি ড্রিংক, ভেনিল্লা, মচা লেটস, কাপুচিন্ন, আর বাইরে গেলে সটার বাকের ফ্রাপ্পু চ্চিনস। এর বদলে মাঝেমাঝেই নেবেন কোল্ড ব্রু ব্ল্যাক কফি। মনে রাখা ভাল, আমরা শরীরে ওজন বাড়াই প্রধানত সুগার থেকে,ফ্যাট খেয়ে তেমন নয়।

প্রতিদিন ফ্যাট সমৃদ্ধ এভোকেডো খেলে ওজন বাড়েনা, বাড়বে মিষ্টি, মিঠাই, কোমল পানীয় গ্রহণে। সেভাবে দুধ চিনি চায়ের বদলে, রং চা পান করুন আদা দিয়ে। সোডার বদলে পান করুন পানি। পান করুন গ্রিন টি ।

৩। মদ্যপান যে দেশে সামাজিক আচার, গ্রহণ করুন পরিমিত। এলকোহলে প্রতি মিলিলিটারে ৭ ক্যালোরি । তাই এগুলি পান করলে অলক্ষ্যে ক্যালরি জমে। মদ্যপান না করে সকালে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ৮ আউন্স জলে মিশিয়ে পান করুন।ওজন থাকবে খুব ঠিক । এর এসেটিক এসিড রক্তের গ্লকোজ ও রাখবে সুস্থিত।

৪। বার বার কম কম খাওয়ায়, বিপাক থাকে উজ্জীবিত। শুনতে কেমন লাগতে পারে কিন্তু পুষ্টিবিদ বলেন, প্রতি ৩-৪ ঘণ্টায় কম কম খাওয়া বা স্ন্যাক্স খেলে বিপাক থাকে উজ্জীবিত। পুষ্টিবিদ সান ডি ইয়উনান বরিখ বলেন, বার বার কম খাওয়া বাড়িয়ে দেয় মেটাবলিজম ‘আর’ ক্ষুধা জেগে উঠে না ।

৫। রেজিসট্যানট স্টার্চ এ অভ্যস্ত হন: রেজিসট্যানট স্টার্চের এমন নামকরণ মানে এটি হজমের প্রতি রেজিসট্যানট, সহজে হজম হয় না। ক্ষুদ্র অন্ত্র দিয়ে তেমন হজম না হয়ে এগোয় আর পরিপাক তন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া এদের ফারমেনট করে। তাই সুগার থাকলেও শরীরে ঢোকে কম। এমন প্রক্রিয়ার উপজাত ইন্সুলিন শরীরকে উন্নত করে আর ফ্যাট সঞ্চয় কমায় কোমরে বলে পাচক নালী বিশেষজ্ঞরা লাউ,ডাল,শুটি, কাচ কলা, মিষ্টি আলু, বীজ ,শস্যদানা ওট ,সবজি এতে আছে এমন সব স্টার্চ ।

৬। অনুসরণ করুন ৫০ ৫০ সূত্র: এর মানে হল প্রতিবার আহারের সময় প্লেটের অর্ধেক ভরে নিন সবজি দিয়ে। কাঁচা বা কাটা সবজি রান্না সবজি, রান্না না করলে এদের সিজন করতে পারেন অলিভ অয়েল, সামান্য নুন, গোল মরিচের গুড়া, ভিনেগার,শস্য,আদা। রান্না বা ভাপে সিদ্ধ সবজি যেভাবে পছন্দ। হৃদ সুখকর হতে পারে। প্লেটের অন্য অংশে অর্ধেক প্রোটিন মাছ ,কচি মাংস,ডিম । আরেক অর্ধেক স্টার্চ হল গ্রেন লাল চাল,লাল আটা ।

৭। প্রচুর আঁশ গ্রহণ করুন: খাদ্যে আঁশ প্রচুর থাকলে দীর্ঘ সময় পেট থাকে ভরাট । এ ছাড়া পাচক নালীতে থাকে হিতকর জীবাণু বা মাইক্রোবায়ম। এরা পেট ফাপা, বদ হজম কমায়। সুস্থ রাখে পরিপাক তন্ত্র।

 

লেখক: অধ্যাপক ও সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।

 

 

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়