Ameen Qudir

Published:
2017-10-16 01:17:03 BdST

রোগী কথনব্রেষ্ট ক্যান্সার: নারীর নীরব ঘাতক


আজকে আমরা কথা বলব ব্রেষ্ট ক্যান্সার নিয়ে। এ রোগের সচেতনতার জন্য একটি ডে পালন করা হয়, 'নো ব্রা ডে।'

 





 


ডা.ছাবিকুন নাহার

________________________________

অনেক দিন থেকেই ভাবছি রোগী কথনে গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো নিয়ে কিছু কিছু লিখব। তেমন সময় করে ওঠতে পারছি না। অথচ লেখা দরকার। কত্ত জরুরি!

আমার বর্তমান যে অবস্থা, ফরজ কাজ ছাড়া সবকিছু হারাম হওয়া উচিৎ। তারপরও ফেবুতে ঢুকি, টুক করে দু একটা লেখা পোষ্ট করে আবার টুক করে কেটে পড়ি।

কত কত প্রিয় লেখা দেখি! করুণ চোখে তাকাই। ভাবি, একদিন আমার ও নিশ্চয় সময় হবে। গোগ্রাসে প্রিয় সব লেখা পড়ব, মতামত জানাব।
কবে সে সময় আসবে কে জানে! তারপরও আশায় বাঁধি ঘর...

আমার কথা বাদ। আজকে আমরা কথা বলব ব্রেষ্ট ক্যান্সার নিয়ে। এ রোগের সচেতনতার জন্য একটি ডে পালন করা হয়, 'নো ব্রা ডে।' অনেকে আবার পিংক ব্যাজ ধারণ করেন। বলে, 'থিংক পিংক।' আসল কথা হচ্ছে সচেতনতা তৈরী। সেটা যেভাবেই হোক না কেন।

মূল গল্পে চলুন:

দয়িতা। পঁচিশ/ ছাব্বিশ বছরের তরুনী। শরতের আকাশের মতো ঝকঝকে। কিন্তু চোখ দুটো ভয়ার্ত, বিষন্ন! যেনো মহাবিপর্যের কার্নিশে দাঁড়িয়ে! অপেক্ষা শুধু ধ্বসে পড়া।

- বসো। কি করো?
- অনার্স শেষ, মাস্টার্স করছি।
- বিয়ে করেছো?
- হুম একটা বাচ্চা আছে, তিন বছর।
- সাথে কে এসেছে?
- আম্মু।

মায়ের চোখে মুখে উৎকন্ঠা দ্বিগুন।
- আচ্ছা মা কি হয়েছে বলেন তো শুনি?
- আপা আমার মেয়ের বুকে চাকা না কি যেনো।
- আপা...
কথা শেষ করতে পারে না, চোখ ভরে যায় জলে।

মা, মেয়েকে আশ্বস্ত করলাম। যা শুনলাম, মূল কথা হচ্ছে ওর ব্রেষ্টে চাকা অনুভব করছে কিছুদিন যাবৎ। সাথে স্কিন চেঞ্জ। মাঝে মাঝে রেড কালার নিপল ডিসচার্জ! আগে খেয়াল করেনি।

এর সবগুলো লক্ষণই ব্রেষ্ট ক্যান্সারের দিকে যায়। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে আরো বেশি নিশ্চিত হলাম। তারপরও কনফার্ম করা হলো ল্যাব পরীক্ষা করে। অনেকটা ছড়িয়েছে। অথচ একটু সচেতন হলেই এই মরনব্যাধি আর্লি ডায়াগনোসিস করা সম্ভব হতো।

- আগে আসনি কেন?
- ম্যাম ভেবেছিলাম তেমন কিছু না। তাছাড়া ব্যাথাও তেমন নাই। তাই ভাবলাম সিরিয়াস কিছু না।

আহারে মেয়ে! তুমি যদি জানতে পৃথিবীর সমস্ত ঘাতকরা এমন নীরবেই হানা দেয়! ঢোল পিটিয়ে আসলেতো তাদের মিশন সফল হবে না।

আসলে ব্যাথা বেদনা না থাকলে আমরা রোগীরা সাধারনত ডাক্তারখানা যেতে চাই না। আর ক্যান্সারগুলি এমন হারমী! চারদিকে না ছড়ানো পর্যন্ত এক ফোঁটা ব্যাথা দিবেনা। যেনো মনিবের প্রতি তার দয়া অসীম!

দয়িতার পরের কোশ্চেন,
'ম্যাম আমি বাঁচব তো? আমার এক খালার এমন হয়েছিলো, তার ব্রেষ্ট কেটে ফেলতে হয়েছে, আমারও কি তাই হবে?'

টলটলে চোখের দিকে তাকিয়ে কি বলেছিলাম? আজকে থাক, অন্য কোন দিন বলব।
- কেন হয়?
- কিভাবে স্ক্রিং করে?
- চিকিৎসাই বা কি?
এবং সংশ্লিষ্ট সব উত্তর নিয়ে আরেকটা পর্ব করা যেতে পারে যদি আপনারা চান তো...

পরবর্তী কিস্তিতে লেখা শেষ হবে

__________________________________

 Image may contain: 1 person

ডা.ছাবিকুন নাহার
মেডিকেল অফিসার
ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়