DR. AMINUL ISLAM
Published:2024-09-03 09:57:23 BdST
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করি কর্মস্থলে লাঞ্ছিত চিকিৎসকদের আর্তনাদে
ডা. বাহারুল আলম
ডা. বাহারুল আলম
বরেণ্য চিকিৎসক ও পেশাজীবি মুখপাত্র
________________________
চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তার দাবী দীর্ঘদিনের- উপেক্ষিত বিগত সময়ের সরকারসমূহের কাছে
............................
হাসপাতালে নিরাপত্তাহীন ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা কর্মস্থলে চিকিৎসক লাঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ। বৈষম্য বিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা এই সমস্যার কতটা সুরাহা করতে পারবে - তা চিকিৎসকদের কাছে স্পষ্ট নয়! সচিবালয় নি:ছিদ্র নিরাপত্তায় ঢেকে দেওয়া হয়েছে কিন্তু জীবন -মৃত্যুর ভরসাস্থল হাসপাতাল উন্মুক্ত ও নিরাপত্তাহীন। এ বৈষম্য কি উপদেষ্টার নজরে আসেনি? সচিবালয়ে প্রবেশের প্রথম দিনেই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার এ ন্যাক্কারজনক বৈষম্য অবসানেয় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। হাসপাতাল সমূহ সচিবালয়ের মত নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারত।
সিদ্ধান্ত না নেওয়ার বিষয়টা চিকিৎসকদের জানা -- সহিংস আন্দোলনে উপদেষ্টা যেভাবে সাড়া দিতে অভ্যস্ত , অহিংস আন্দোলনের প্রতি ততটুকুই উদাসীন। তাহলে চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা আদায়ে তারা কি সহিংস হয়ে উঠবে?
নিশ্চয়ই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষিত হবে কর্মস্থলে লাঞ্চিত চিকিৎসকদের আর্তনাদে।
২.
জনমনের বিভ্রান্তি দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ হতে দ্রুত রাষ্ট্রীয় সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা প্রয়োজন
......................................................
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতন হলে রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিয়েছে। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর হতে অদ্যাবধি রাষ্ট্রের কি সংস্কার বা মেরামত করা হবে - তার কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে তার সরকারের সংস্কারের রূপরেখা উত্থাপন করেনি। সংস্কারের কোন ঘোষণা ছাড়াই রাষ্ট্রের কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যন্ত বেশ কিছু হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে / ঘটে চলেছে। তার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত জনমনে সংস্কার সম্পর্কীয় রূপরেখার বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও জাতীয় রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামাতের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব – সংঘাত দৃশ্যমান । ১/১১ এর মাইনাস টু ফর্মুলা ও জামাতের বাংলাস্তান মাঝেমধ্যে উঁকি দিচ্ছে। জনমনের বিভ্রান্তি দূর করতে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের একটি ঘোষণা এই সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই আসা প্রয়োজন।
একদিকে বিগত ৫৩ বছর ধরে রাষ্ট্র থেকে জনগণ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে , অপরদিকে রাষ্ট্রের সরকার / সরকার প্রধান সংবিধানের দোহাই দিয়ে ব্যাপক ক্ষমতাবান হওয়ার কারণে স্বৈরাচার হয়ে উঠেছে । অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কারের অগ্রাধিকার তালিকায় ১ নম্বরে থাকা প্রয়োজন সংবিধান জনগণের অনুকূলে আনা বা কাউকে স্বৈরাচার হওয়ার পথ রুদ্ধ করা । মৌলিক বিষয় বলে সংবিধানের কিছু ধারা আছে , সেগুলোকে অপরিবর্তনশীল মনে হলেও এর কারণে রাষ্ট্রে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হয়ে সরকারেসমূহের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসছে। জনস্বার্থে সংবিধানের এই ধারাগুলোর পরিবর্তন প্রয়োজন।
সঙ্গত কারণেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র ও রাজনীতির কি কি পরিবর্তন বা সংস্কার আনা হবে – সেটি ঘোষিত না হলে জনমত সৃষ্টি না হয়ে কাল্পনিক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সেইসাথে আরও গুরুত্বপূর্ণ দেশে কোন হিংস্রতার জন্ম না হওয়া , সকল অপরাধীর বিচার হওয়া , ইত্যবসরে ন্যায়বিচারের দৃষ্টিভঙ্গিতে বৈষম্যের অঙ্কুরোদ্গম ঘটেছে । কঠোর হস্তে এসব দমন করা প্রয়োজন – জনগণ ন্যায়বিচার চায় , শান্তি চায়। উপদেষ্টারা অনভিজ্ঞ হলেও অদূরদর্শিক নয় ।
আপনার মতামত দিন: