ডা. আজাদ হাসান

Published:
2024-02-23 19:53:31 BdST

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমীপেষু :স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সংস্কার আবশ্যক: যা যা করা দরকার


 

ডা.আজাদ হাসান
_________________
আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখনো ঢাকা কেন্দ্রিক। এই সিস্টেমটি বিকেন্দ্রীকরণ করা আবশ্যক।

আমার মতে প্রতি বিভাগীয় শহরকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্বনির্ভর হওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ প্রতি বিভাগীয় শহরে মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে/ডিসিপ্লিনের সরকারী ভাবে স্পেশালিষ্ট হাসপাতাল গড়ে তুলতে হবে। যেমনঃ
১) কার্ডিয়াক সেন্টার।
২) ডায়বেটিক সেন্টার।
৩) গ্যাস্ট্রএন্টারোলজি সেন্টার।
৪) রেনাল সেন্টার।
৫) ক্যান্সার সেন্টার।
৬) শিশু হাসপাতাল।
৭) বক্ষব্যাধী হাসপাতাল।
৮)অর্থোপেডিক্স সার্জারী হাসপাতাল।
৯) সাইক্রিয়েটিক হাসপাতাল।
১০) অকুপেশনাল হেলথ এবং রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার।
ইত্যাদি।।

সেই সাথে ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতাল সমূহকে প্রান্তিক জনগণের "চিকিৎসার মূল কেন্দ্রে" পরিণত করতে হবে। এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্য জেলা হাসপাতাল সমূহে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ সমূহ নিতে হবে।
১) স্পেশালিষ্ট পদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেই সাথে আনুপাতিক হারে নার্সিং স্টাফসহ অন্যান্য টেকনিক্যাল জনবল বৃদ্ধি করতে হবে,
২) লজিস্টিক সাপ্লাই বৃদ্ধি করতে হবে।
৩) সার্বক্ষনিক ইনভেস্টিগেশন ফ্যাসিলিটিজ নিশ্চিত করতে হবে,
৪) হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে।
৫) হাসপাতালের মেইনটেইনেন্স বাবদ খরচ বৃদ্ধি করতে হবে এবং স্থানীয় হাসপাতাল পরিচালকের আর্থিক ব্যয় করার সীমা বৃদ্ধি ও বাজেট বৃদ্ধিৃ করতে হবে।

তাছাড়া স্বাস্থ্য সেবার প্রতিটি স্তরে রেফারাল সিস্টেম চালু করতে হবে। ইমার্জেন্সী কেস ব্যতীত সকল রোগী প্রথম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসবেন। অতঃপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা দিবেন। তবে যদি উক্ত রোগীর অধিকতর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তখন ৩ ক্যাগরিতে ভাগ করে উপজেলা হতে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করবেন। রেফারালের ধরণঃ
১) ইমিডিয়েট (তাৎক্ষণিক) : প্রয়োজনে এম্বুলেন্স দিয়ে রোগী পাঠাবেন।
২) রুটিনঃ
ক) আর্জেন্ট (৭দিনের মধ্যে এপয়েন্টমেন্ট পাবেন)
খ) নন-আর্জপন্ট/ কোল্ড কেস। (১ সপ্তাহ থেকে ৬-৮ সপ্তাহের মাঝে এপয়েন্টমেন্ট পাবেন)।

আবার ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালেই বেশীর ভাগ রোগী তার ইস্পিত চিকিৎসা পাবেন। তবে জটিল এবং গুরুতর অসুস্থ রোগের ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতাল হতে রোগের ধরণ এবং প্রয়োজন মোতাবেক টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতাল বা উচ্চতর হাসপতালে অর্থাৎ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিংবা স্পেশালাইজড্ হাসপাতাল সমূহে রেফার্ড করতে হবে / পারেন।।

এভাবে চিকিৎসা সেবার সর্ব স্তরে,প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সেকেন্ডারী হেলথ কেয়ার সেন্টার ও সেকেন্ডারী হেলথ কেয়ার সেন্টার হতে টারসিয়ারী হেলথ কেয়ার সেন্টারে রেফারাল সিস্টেম চালু করতে হবে।

প্রসংগত উল্লেখ্য,উল্লেখিত মডেলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক এবং সকল স্টাফদের জন্য "নিরাপদ কর্মস্থলের নিশ্চয়তা নিশ্চিত" করতে হবে। প্রয়োজনে
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা বিধান কল্পে "বিশেষ নিরাপত্তা আইন" প্রণয়ন করতে হবে। ভুল চিকিৎসার নামে চিকিৎসকদের হয়রানী বন্ধ করতে হবে এবং যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কোন চিকিৎসককে গ্রেফতার করা যাবে না বা কোন নিউজ করা যাবে না। এ ধরনের আইন প্রণয়ন করতে হবে।

সেই সাথে নিরাপদ বাসস্থান এবং ট্রান্সপোর্ট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

এভাবে স্বাস্থ্যসেবা সিস্টেমকে ঢেলে সাজাতে পারলে হয়ত এক্ষেত্রে একটা পজিটিভ চেঞ্জ আসতে পারে।

লেখক 

সিওমেক-২১

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়