ডেস্ক

Published:
2024-01-05 08:58:34 BdST

ডিমেনশিয়া: অবহেলা নয়, চাই সচেতনতা


প্রতীকী ছবি

 

ডা. মোঃ মুঈদ সাকিব মীম
_____________________

সদ্য অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী জনাব মোরসালিন (কাল্পনিক নাম) আজও বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না কিনে বাসায় ফিরেছেন। স্ত্রী খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন আজকাল বড্ড ভুলোমনা হয়ে গিয়েছো। পরবর্তীতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ায় তারা জানতে পারলেন তিনি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ নামক অসুখে ভুগছেন।


শুধু মোরসালিন সাহেব নন, তাঁর মতো প্রায় ৬ লক্ষাধিক বাংলাদেশি কমবেশি স্মৃতিশক্তি সম্পর্কিত অসুখে আক্রান্ত বলে জানা যায় একটি সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বর্তমানে প্রায় ৫৫ মিলিয়ন মানুষ এ ধরণের রোগে ভুগছেন , যাদের সিংহভাগই প্রবীণ।


মোটাদাগে স্মৃতিভ্রংশ জাতীয় রোগসমূহকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়ে থাকে। চিন্তার বিষয় এই যে, বর্তমানে বৈশ্বিক মৃত্যুহারের জন্য দায়ী কারণগুলোর মধ্যে ডিমেনশিয়ার অবস্থান ৭ম স্থানে।


ডিমেনশিয়ার কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যা যা জানা যায় তাদের মধ্যে বয়স (৬৫ বা তার অধিক), উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ধূমপান, মমদ্যপান, বিষণ্ণতা, শারীরিক পরিশ্রমহীনতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।


সাধারণত, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বেশ বেগ পেতে হয়। যার ফলে প্রায়শই তারা নিজেদের উপর বিরক্ত থাকেন, অনেকে নিজেদের অন্যদের থেকে গুটিয়ে রাখতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, অনেক ক্ষেত্রে এসব ব্যক্তিরা পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে অনেক অবহেলার স্বীকার হন।


ডিমেনশিয়া সম্পূর্ণভাবে সারিয়ে তোলার কোন উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি, তবে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার নিকট পরিজনদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।


অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে উপযুক্ত ওষুধ গ্রহণ করা, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়া, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, নিজের শখ অনুযায়ী কাজে অবসর সময় অতিবাহিত করা ইত্যাদি ছাড়াও ডিমেনশিয়ার জন্য স্বীকৃতভাবে দায়ী বিভিন্ন অভ্যাস ত্যাগ করার মাধ্যমে একজন রোগী অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।


পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এ ধরণের মানুষের প্রতি আরো যত্নবান হতে হবে যাতে তারা নিজেদের বোঝা মনে না করেন। তাদের যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের প্রতি আন্তরিকতাই পারে তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে।

 

আসুন আমরা সচেতন হই, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠি।


ডাঃ মোঃ মুঈদ সাকিব মীম

এমবিবিএস (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ)।

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়