ডা শাহাদাত হোসেন

Published:
2022-06-08 05:49:34 BdST

বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান নিয়ে কুচক্রি মহলের অনাকাঙ্খিত সমালোচনার জবাব


বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে নবীন ফেলোদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ ছবি: ফেলো অব বিসিপিএস



 

ডা. আবু সোলায়মান
______________________________

সীতাকুণ্ডের মহাশোকের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান নিয়ে একটি কুচক্রি মহলের সমালোচনায় দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে বিসিপিএস-এর ফেলোদের। একজন বিসিপিএস ফেলো হিসেবে পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, সীতাকুণ্ডের মহাশোকের ঘটনায় আমরা বিসিপিএস সভ্যগন গভীর সমবেদনা জানাই। এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকারদের চিকিৎসায় বিসিপিএস থেকে উচ্চ শিক্ষা ও ডিগ্রি লাভকারী দক্ষ চিকিৎসকগন নিয়োজিত রয়েছেন। ঢাকার এই মহতী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অনেক বিসিপিএস ফেলো শেষ মুহুর্তে যোগ দিতে পারেন নি। তারা মানবতার ডাকে চিকিৎসক হিসেবে মানুষের জীবন বাঁচানোর মহতী কাজে সার্বক্ষনিক নিয়োজিত রয়েছেন।

এটাই হল, চিকিৎসক জীবন। হাসি কান্না আনন্দ বেদনার সঙ্গী চিকিৎসক গন। তাদের জীবনেও সু:খ দু:খ নিত্য সঙ্গী। সেসবের মাঝেই তারা সর্বস্ব ত্যাগ করেন মানুষদের জীবন রক্ষায় । মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে তারা ব্রতী। এজন্য সংসার, স্বাভাবিক জীবন তারা ত্যাগ করেন হাসি মুখে। কষ্টকে , কষ্টকর চিকিৎসক জীবনকে তারা হাসিমুখেই ব্রত হিসেবে নিয়েছেন।

বিসিপিএস-এর অনুষ্ঠান দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনায় করা। এই আয়োজনের জন্য সীতাকুণ্ডের আহতদের সুচিকিৎসা ব্যহত হয় নি। বরং তাদের জীবন বাঁচিয়ে চলেছেন চট্টগ্রামে আবস্থানরত বিসিপিএস ফেলো দক্ষ ডাক্তাররাই।

আমরা সীতাকুণ্ডের মহাশোকের ঘটনায় প্রয়াতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানাই। আহতদের জীবন রক্ষায় সর্বদা আমরা আমৃত্যু জাগ্রত, কর্মরত , অবিচল। আছি , থাকব।

আমরা কষ্ট পেয়েছি , যখন দেখেছি, অল্প সংখ্যক চিকিৎসক এই তালেবান সর্দারদের সমালোচনার মিছিলে হিসেবে ঢাক ঢোল নিয়ে নেমে পড়েছেন। বোঝাই যায়, এরা যে কোন ছুতো পেলেই দেশের শিল্প সাহিত্য ঐতিহ্য নিয়ে সমালোচনায় নেমে পড়েন অজ্ঞ মুর্খ তালেবানী মনোভাবী পাবলিকের মত।

কিছু কুচক্রি লোক কদর্য ভাষায় হামলা করেছেন বিসিপিএসর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কতিপয় তালেবান ডাক্তারও তাতে ইন্ধন দিচ্ছেন।

 

বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য চিকিৎসকবৃন্দ : ছবি: ফেলো অব বিসিপিএস

বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য  ও নবীন চিকিৎসকবৃন্দ : ছবি: ফেলো অব বিসিপিএস

----------------------
ডা. এম আমির হোসেন বলেন ,
সীতাকুণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনা করছে মূলত চারটি চিকিৎসক শ্রেণি (কারণ বিচারে):
১) যারা বিসিপিএস-এর ফেলো নন (৭০%)
২) যারা হাসি-আনন্দ, নাচ-গান, রঙ, নারী-পুরুষের হুল্লোড় মনে মনে অপছন্দ করেন। সীতাকুণ্ড তাদের কাছে মোক্ষম ছুতা! (২৯%)
৩) যারা বিসিপিএস-এর ফেলো কিন্তু স্ট্যাটাসে লাইক-কমেন্ট চান, ভাইরাল হতে চান, ব্যতিক্রমী হতে চান, বিপ্লবী হতে চান এমন। (১%)
৪) যারা প্রচণ্ড মানবপ্রেমী। ঘটনার সাথে সাথেই সীতাকুণ্ডে ছুটে গেছেন। তাদের রান্নাবান্না করে খাওয়াচ্ছেন। সেবাযত্ন করছেন। (০%)
সম্পূরক প্রশ্ন: প্রায় প্রতি ঈদের আগেই তো লঞ্চডুবি, সড়ক দুর্ঘটনা হয়। তখন কি ঈদ উৎসব বন্ধ রাখার দাবি কেউ কখনো শুনেছেন?
ফাইনাল কমেন্ট: জীবন চলমান। পৃথিবীতে একই সময়ে তীব্র আনন্দে কেউ হাসছে, আবার তীব্র যন্ত্রণায় কেউ কাঁদছে। এটাই বাস্তব। ডাক্তারি একটি প্রফেশন। রোগীদের প্রফেশনালি ম্যানেজ করতে হবে। এখানে অতি আবেগের কিছু নেই, 'আমি মহৎ'- এই আত্মতুষ্টিতেও ভোগার কিছু নেই। আমরা অন্যান্য প্রফেশনের মতোই কিছু-একটা করে খাচ্ছি। সুখ ও দুঃখের মতো, জন্ম ও মৃত্যুর মতো পৃথিবীতে সব কিছুই চলমান থাকবে সমানতালে, সমান্তরালে...
সীতাকুণ্ডের জন্য প্রার্থনা...
বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী আয়োজকদের জন্য ভালোবাসা...
**পার্সেন্টেজ সংখ্যাবিচারে নয়, অন্তর্নিহিত কারণবিচারে।

 

 

 

বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে দুই গর্বিত মুখ  ছবি: ফেলো অব বিসিপিএস

 

বিসিপিএস-এর সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে দুই গর্বিত মুখ ছবি: ফেলো অব বিসিপিএস

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়