ডেস্ক

Published:
2021-08-07 13:54:10 BdST

৩৯ বিসিএস(বিশেষ) উত্তীর্ণ নিয়োগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলনে যা বলেছেন


 

বিজ্ঞপ্তি
________________

বাংলাদেশে বিদ্যমান করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে ৩৯ তম বিসিএস(বিশেষ) উত্তীর্ণ নিয়োগ বঞ্চিত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে জুমে।
৫ই আগস্ট ২০২১।
এতে সংশ্লিষ্ট নেতারা যা বলেন, বিস্তারিত দেওয়া হল।

প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

বাংলাদেশে বিদ্যমান করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে ৩৯ তম বিসিএস উত্তীর্ণ নিয়োগ বঞ্চিতদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি।

আমি সর্বপ্রথমে স্মরণ করছি হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের রুপকার,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, স্মরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কাল রাত্রিতে নিহত সকল শহীদদের, স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ বাঙালিকে যাদের আত্মত্যাগে আমরা আমাদের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, স্মরণ করছি করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবারত অবস্থায় আত্মহুতি দেয়া সকল চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের, স্মরণ করছি করোনা আক্রান্ত হয়ে যেসব সাংবাদিক বন্ধুরা ও অন্যান্য সম্মুখ যোদ্ধা প্রাণ দিয়েছেন তাদেরকে।

এখন পর্যন্ত করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত যে ১৬৯ জন চিকিৎসক তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের সকলের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

আপনারা সকলেই জানেন বিগত এক বছর পুরো বিশ্ব করোনা ভাইরাস নামক এক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয় । গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক ভাবে খারাপ হচ্ছে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে সেটা আরো বেশ কয়েক মাস স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। করোনার এই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বেশি সংক্রমনশীল হওয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুর হার অনেক বেড়ে গেছে। আপনারা জানেন বর্তমানে শুধু ঢাকা নয় , গ্রাম ও মহল্লায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এই অবস্থায় জনসাধারণের সুষ্ঠ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের লক্ষে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই।

আমরা সকলেই জানি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং করোনা অতিমারি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে আরো চিকিৎসক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন।

ইতিমধ্যে ৩৯ তম বিসিএস থেকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর পক্ষ থেকে সংগ্রামী সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং সম্মানিত মহাসচিব ডাঃ এহতেশামুল হক দুলাল স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে চিকিৎসক নেয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার এসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ) এর সম্মানিত মহাসচিব, বিএমএর সিনিয়র নেতা ও স্বাচিপের সহ-সভাপতি ডাঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরীর পক্ষ থেকেও প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ৩৯ তম (বিশেষ) বিসিএস থেকে দ্রুত নিয়োগ দানের জন্য সুপারিশ করা হয় । এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং খুলনা বিএমএ এর সম্মানিত সভাপতি ডাঃ বাহারুল আলম সহ অনেকে ৩৯ তম বিসিএস থেকে নিয়োগ প্রদানের পরামর্শ প্রদান করলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে সেটার বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা।

বর্তমানে কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ৪২ তম বিসিএসের মৌখিক পরিক্ষা সম্পন্ন করা অনেকটা অনিশ্চিত ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ততদিনে দেশের করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। অথচ জাতির এই দুঃসময়ে জীবন দানের জন্য আমাদের মত তরুন চিকিৎসকেরা সাদা পোশাক চাপিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত। কারন ৩৯তম বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষা থেকে শুরু করে ভাইবা পরীক্ষা এবং উত্তীর্ন ডাক্তারদের তালিকা পর্যন্ত সকল অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন হয়ে আছে। শুধুমাত্র সুপারিশ প্রাপ্ত হলে আমরা যেকোন সময়ে কাজে যোগদান করতে প্রস্তুত।

আমাদের ৬৩৬০ চিকিৎসক সবাইকে নিয়োগ দিলেও দেশের চিকিৎসক সংকট সামগ্রিকভাবে দূর হবে না। যা পরবর্তীতে ৪২ তম বিশেষ বিসিএস থেকে উত্তীর্ণ চিকিৎসকদের নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে সেই সংকট অনেকাংশে দূরীকরন সম্ভব।

অথচ এই জরুরী পরিস্থিতিতে আমরা ৩৯ তম বিসিএস পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও কেন আমাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
এই কালক্ষেপনের জন্য দেশের জনগন ও চিকিৎসকদের অনেক বেশি ভুগতে হচ্ছে।

তাই ভোগান্তির অন্যতম প্রধান কারণ জনগনের সচেতনতার অভাব এবং দেরিতে হাসপাতাল গমন ছাড়াও অন্য কোন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে কিনা সেটা আমাদের খতিয়ে দেখার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইল।

কারন আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দেশে যে চিকিৎসক, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তাদের সঠিক ব্যবহার ও কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এই করোনা অতিমারি সফল ভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

আপনারা জানেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ৩৯তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, আর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তার ফল প্রকাশ করা হয়। ৩৯তম ব্যাচে উত্তীর্ণদের ভেতর থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। একই বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮ হাজার ৩৬০ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় পদ স্বল্পতার জন্য।

এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে সেই ৮ হাজার ৩৬০ জন নন ক্যাডার চিকিৎসকদের মধ্য থেকে গত বছর ২০২০ সালের মে মাসে ২ হাজার চিকিৎসক সহকারী সার্জন পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকি আরও ৬৩৬০ জন চিকিৎসক আছেন নিয়োগের অপেক্ষায়। যেহেতু নতুন পদ সৃজন হয়েছে, সেহেতু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩৯ তম বিসিএস উত্তীর্ণ অপেক্ষামান চিকিৎসকদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া হোক।

সুপ্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগনের সেবার জন্য আমরা নিয়োজিত হতে পারি এবং সুচিকিৎসার মাধ্যমে মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে যেন অসুস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ্য করে তুলতে পারি এই কামনা দিয়ে নিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।

এতক্ষন ধৈর্য্য ধরে আমাদের বক্তব্য শোনার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপনারা ভাল থাকুন,সুস্থ্য থাকুন।
জয় বাংলা

৩৯ তম বিসিএস উত্তীর্ণ নিয়োগ বঞ্চিত চিকিৎসকদের পক্ষে,

১. ডাঃ সৈকত রায়


২. ডাঃ মোঃ আতিকুর রহমান


৩. ডাঃ রাকিব মুন্না

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়