Dr. Aminul Islam

Published:
2021-04-14 15:07:22 BdST

বিশ্বখ্যাত বাঙালি প্রকৌশলী  : স্বয়ং  পিপিই বানাচ্ছেন শুধু ডাক্তারদের জন্য


 


ডা রাজিয়া সুলতানা সুমি
------------------------------------

অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী। যখন মহামারী কালেও জীবনরক্ষকারী ডাক্তারদের নানা বঞ্চনার শিকারসহ অপপ্রচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তখন তিনি ডাক্তারদের রক্ষার জন্য পিপিই বানিয়ে চলছেন। কল্পনা করতে পারেন!
তাঁর সম্পর্কে জানলাম, নিচের লেখায়।
তা প্রকাশ করছি।
এই প্রবীণ ব্যক্তির নাম ড. মাকসুদ হেলালী; পেশা অধ্যাপনা। তিনি পড়ান বুয়েটে; তাঁর বিভাগ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং।
তবে এই মূহুর্তে তাঁর মূল পেশার স্থান বন্ধ; তাই করছেন ভিন্ন একটি পেশার কাজ। ডাক্তারদের জন্য পিপিই বানাচ্ছেন তিনি নিজে।
এরপরও ভাবছেন এদেশের মানুষ পড়ে পড়ে শুধু মরবে, লড়াই না করেই? এমন মানুষ চারিদিকে ছড়িয়ে আছে; তবুও আমরা হতাশ হচ্ছি!
"মানুষ"গুলোকে চিনে নিন। পৃথিবী একদিন শান্ত হবে, সেদিন তাঁদের স্মরণ করবেন। অন্ততঃ তাঁদের এই লড়ে যাওয়াটাকে যেন আমরা ভুলে না যাই!!

ড. মাকসুদ হেলালী সম্পর্কে অন্য একটি লেখা পড়ে তাজ্জব বনে গেছি।

 

ড. মাকসুদ হেলালী, অধ্যাপক, যন্ত্রকৌশল বিভাগ, বুয়েট এবং একটি অপপ্রচার নিয়ে লিখেছেন বুয়েটের এক শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন,
লেভেল ২ টার্ম ২ এ পড়ি, solid mechanics কোর্সের শেষ ক্লাস। ক্লাস নিচ্ছেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। ১০ মিনিটের মধ্যেই পড়ানো শেষ হয়ে গেল। শেষ ক্লাস, তাই কি না, রসকসহীন এই মানুষটি বললেন তোমাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে জিজ্ঞাসা করতে পার। কি মনে করে দাড়িয়ে গেলাম, জিজ্ঞাসা করলাম, স্যার একবার মেকানিক্যাল ডে তে আপনি বলেছিলেন আপনার মেট্রিক আর ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার মাঝে গ্যাপ ছিল ৮ বছর। কারন কি স্যার? স্যার তখন বললেন, আসলে আমি ছাত্রজীবনে রাজনীতি করতাম, বাম রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধের আগের বছর মেট্রিক দিয়েছিলাম, স্ট্যান্ড করেছিলাম। তার পরের বছর মুক্তিযুদ্ধ করলাম। মুক্তিযুদ্ধের পরের বছর ইন্টারমিডিয়েট দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম বলে আমাকে প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়। সরকারের সাথে বাম রাজনীতির সম্পর্ক মারাত্মক খারাপ হওয়ার ফলে দীর্ঘসময় আমাকে জেলে থাকতে হয়েছে, পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তারপর ১৯৭৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিই এবং বোর্ডে প্রথম হই। তারপর বুয়েটেও প্রথম হলাম, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হলাম। স্যারের একটা কথা এখনো কাজে বাজে- যুদ্ধের সময় টাকার বস্তা ঘাড়ে করে নিয়ে গেছি, কিন্তু একটা টাকাও ছুয়ে দেখি নি। স্যার আরো বললেন আমি জানি তোমরা হয়তো আমার পড়ানোর স্টাইল পছন্দ করো না। আসলে আমার শিক্ষকতা পেশাটা অত ভাল লাগে না, যতটা ভাল লাগে ইঞ্জিনিয়ারিং। আমি নিজেকে প্রকৌশলী ভাবতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

সেদিন আমাদের ক্লাসের প্রত্যেকে এত অবাক হয়েছিলাম, সেটা ভাষায় বোঝানো অসম্ভব। একটা মানুষ জেল থেকে এসে কিভাবে পরীক্ষা দেয়? কিভাবে বোর্ডে ফার্স্ট হয়? কিভাবে বুয়েটে প্রথম হয়? বুয়েটে পড়তে এসে সবাই ভাল গবেষক হয়, প্রফেসর হয়, সাহিত্যিক, প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী আরো কত কি হয়। আর হেলালী স্যার সেটাই হয়েছেন, যেটা হওয়ার কথা ছিল- একজন প্রকৌশলী।

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়