Dr. Aminul Islam
Published:2020-06-15 18:35:03 BdST
করোনায় কেন এতো চিকিৎসক মারা যাচ্ছেন ! যে কারণ বললেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক
সংবাদ সূত্র : শওগাত আলী সাগর
__________________________
করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে নিহত এবং অসুস্থ হওয়া চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন সংস্থা। বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনসহ স্বাস্থ্যখাতের এই সংস্থাগুলো দ্রুতই এই ব্যাপারে কিছু তথ্যউপাত্ত তুলে ধরতে পারবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।
তিনি বলেন,করোনা ভাইরাসে জনগনকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর প্রাণহানি অত্যন্ত দু:খজনক এবং দেশের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি।
কানাডার বাংলা পত্রিকা নতুনদেশের প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঙ্গে ’বাংলাদেশে এতো চিকিৎসক কেন মারা যাচ্ছেন’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় তিনি এই মতামত প্রকাশ করেন। এতে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি, চিকিৎসা সুবিধা, নাগরিকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের কেন এতো চিকিৎসক মারা যাচ্ছেন- এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন,এটি অত্যন্ত দু:খজনক যে নানা বয়সের দক্ষ চিকিৎসকগণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, মারা যা্ওয়া চিকিৎসকদের কারো কারো কোমরবিডিটি (অন্যান্য শারীরিক উপসর্গ) ছিলো। তাঁদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে এটি হয়তো ভূমিকা রেখে তাখতে পারে। তাছাড়া চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত জীবন যাপন পদ্ধতি্ও ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন,চিকিৎসকরা সরকারি - বেসরকারি হাসপাতালে কাজ শেষে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। দিনের প্রায় পুরোটা সময়ই হাসপাতাল, ক্লিনিক - এগুলো করে পার করে দেন। ‘ফিজিক্যাল ফিটনেসে’র দিকে তাঁরা খুব একটা মনোযোগ দিতে পারেন না। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কোমরবিডিটি এবং ফিজিক্যাল ফিটনেস ঘাটতির প্রভাব এই মৃত্যুর পেছনে থাকতে পারে।
অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারে ভ্রান্তিও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হ্ওয়ার পেছনে কাজ করে থাকতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করে বলেন, চিকিৎসকরা হয়তো ব্যক্গিত সুরক্ষা সামগ্রী যথাযথভাবে পরিধান এবং ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সেগুলো খোলার সময় সামান্য বিচ্রূতি ঘটলেই স্বাস্থ্যসেবীদের আক্রান্ত হ্ওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়।
সম্পূর্ণ নতুন এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে চিকিৎসকদের কতোটা প্রস্তুত করা হয়েছিলো - এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনলাইনে এবং তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্শীদের হাল নাগাদ তথ্য সরবরাহ করছে।তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়েছে। গত জানুয়ারি মাসেই সোসাইটি অব মেডিসিনসারা বাংলাদেশের বাংলাদেশে কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে।তিনি বলেন, যাচ্ছে। আমরা বারবার বলেছি ব্যক্তিগত সুরক্ষার ব্যাপারে আপোষ করা যাবে না।তারপরেও দুর্ঘটনা হচ্ছে। সেগুলো দেখার জন্য বিভিন্ন বিভাগকে বার্তা দেয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়মিত ভাইরাস টেস্টিং এ যেতে হয় বলে উল্লেখ করে অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশের চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট সময় হাসপাতালে কাজ করার পর তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারিন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, একজন সুস্থ চিকিৎসক সপ্তাহে ৬ দিন হাসপাতালগুলোতে সেবা দিতে পারতেন। কিন্তু আমরা ১০ দিন কাজ করানোর পর বাধ্যতামূকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তখন অন্য একটি গ্রুপ এসে দায়িত্ব পালন করে। ১৪ দিন পর পূণরায় ভাইরাসের টেস্ট করে নিশ্চিত হয়েই তাদের আবার চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত করা হয়। এতো সতর্কতার পরেও দু:খজনক ঘটনাগুলো ঘটছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নতুনদেশ সম্পাদক শওগাত আলী সাগর আলোচনায় নিম্নমানের মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি নিয়ে সাদারন চিকিৎসক এবং জনসাধারনের বিভিন্ন অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন।
___________________
দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামে’র আত্মপ্রকাশ
নতুনদেশ ডটকম: বাংলাদেশে একটি জনমুখী, মানবিক ও জবাবদিহিমূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলায় সহায়তা দিতে ’স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম’ নামে একটি অনলাইন প্লাটফরম গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত স্বাস্থ্যসেবাখাতের বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্টজনের এই ফোরামে সম্পৃক্ত রয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিষ্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার এই ফোরামের অন্যতম উদ্যোক্তা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফোরামের অফিসিয়াল পেজে ফোরামের লক্ষ্য ও কার্য প্রণালী বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে,‘এই ফোরামটি স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত, যা কোনভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়। এখানে কোন রাজনৈতিক বক্তব্যও গ্রহণযোগ্য নয়। এর মূল লক্ষ্য হলো- "একটি জনমুখী, মানবিক, ও জবাবদিহিতামূলক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা করা, যেখানে মুনাফা নয় বরং প্রতিটি রোগী-চিকিৎসক-নার্সের অধিকার সংরক্ষিত থাকে সর্বাগ্রে"।
এতে বলা হয়, এখানে সদস্যদের শেয়ারকৃত একেকটি লেখা, ছবি, ভিডিও, বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় লাইভ ওয়েবিনার হবে অসাধু স্বাস্থ্য ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার হাতিয়ার। দূর্নীতিবাজদের অপশক্তি আমাদের সম্মিলিত শক্তির কাছে কিছুই না। আমাদের মনে রাখতে হবে, নিরাপদ এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসা পাওয়া কোন অনুগ্রহ নয় - এটা আমাদের অধিকার।
এতে বলা হয়,আমাদের এই ফোরামের বিশেষ উদ্দেশ্যসমূহ: • বাংলাদেশের সকল নাগরিকের নিরাপদ ও মান সম্পন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা • চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সেবার মান উন্নয়নে অনুপ্রাণিত করা • স্বাস্থ্য অব্যবস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের আইনি সহায়তায় প্রদান করা • চিকিৎসা খাতে জাতীয় বাজেট বাড়িয়ে আধুনিক ও গবেষণামুখি চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা ‘
_________________________________
Information
INFORMATION
আপনার মতামত দিন: