Ameen Qudir
Published:2020-03-13 20:17:51 BdST
"স্যার ,করোনাভাইরাস মারতে কোনটা ভালো, সাবান নাকি স্যানিটাইজার?"
ডা. সাঈদ এনাম
_______________
স্যার করোনাভাইরাস মারতে কোনটা ভালো, সাবান নাকি স্যানিটাইজার? এ প্রশ্ন মনে হয় শতজন ইনবক্সে করছে। করোনাভাইরাস ফোবিয়ায় জর্জরিত সবাই।
আসুন সেটা জানার আগে দেখা যাক সাবান কিভাবে করোনাভাইরাস কে মেরে ফেলে?
সাবান বা স্যানিটাইজার উভয়ের ব্যবহারে করোনাভাইরাস নষ্ট হয়ে যায়। তবে স্যানিটাইজার এর চেয়ে সাবান অনেক ভালো। বিজ্ঞানের চোখে দেখি, কিভাবে সাবান করোনাভাইরাস এর উপর কাজ করে, তাকে মেরে ফেলে।
করোনাভাইরাস এর গায়ে দুই ধরনের লেয়ার বা আবরন থাকে। এগুলো লিপিড লেয়ার বা চর্বির লেয়ার।
নাক মুখ থেকে নিঃসৃত ড্রপলেট এ করোনাভাইরাস কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিন বেঁচে থাকে। এমন কি ড্রপলেট বাতাসে শুকিয়ে যাবার পরও করোনাভাইরাস একটিভ থাকে তার এই লিপিড বাই লেয়ার এর জন্যে।
ভাইরাস এর লিপিড বা চর্বির আস্তরণ আমাদের ত্বকের মরে যাওয়া কোষ গুলোতে খুব শক্ত ভাবে আটকে থাকতে সহায়তা করে। এক সময় আমরা যখন নাকে, মুখে বা চোখে হাত দেই তখন ত্বকের করোনাভাইরাস সহজে নাক মুখ চোখ দিয়ে শরীরের ভিতরে ঢুকে যায়। এবং সংক্রমণ শুরু করে। একজন মানুষ প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর অন্তত একবার তার নাকে মুখে হাত দেয়।
সাবানে কি দিয়ে তৈরি?
সাবান ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় পদার্থের তৈরি। এই সাবান যখন হাতে মাখা হয় তখন তার ফেনা করোনাভাইরাস এর লিপিড বাই লেয়ার বা আবরণ কে একেবারে দ্রবীভূত করে। ফলে আমাদের ত্বকের সাথে আঠার মতো লেগে থাকা করোনাভাইরাস তার লিপিড আস্তরণ হারিয়ে সহজেই নষ্ট হয়ে যায় বা অকার্যকর হয়ে যায়।
স্যানিটাইজার কিভাবে করোনাভাইরাস কে নষ্ট করে?
স্যানিটাইজার এলকোহল দিয়ে তৈরি। এলকোহলেও করোনাভাইরাস এর লেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্যানিটাইজার ৬০% এলকোহল দিয়ে তৈরি। তবে স্যানিটাইজার এ এর চেয়ে কম পরিমাণে এলকোহল থাকলে তা ভাইরাসের এর লিপিড লেয়ার ধ্বংস করতে পারেনা। এটাই শংকা৷ তাছাড়া পুরো হাত ভালোভাবে কানায় কানায় পরিষ্কার করতে অনেক স্যানিটাইজারও লাগে। স্যানিটাইজার সহজে শুকিয়েও যায়।
তাই সাবান ভালো। প্রচুর ফেনায় করোনাভাইরাস হাতে থেকে যাওয়ার আশংকা নেই।
মনে রাখবেন শরীরের বাহিরে করোনাভাইরাস মারতে আপনার হয়তো দশ টাকার সাবান লাগবে কিন্তু আসতর্কভাবে সেই ভাইরাস যদি শরীরের দেহে ঢুকে যায় তবে তাকে মারতে আপনাকে কয়েক লক্ষ টাকা গুনতে হবে। তাও সম্ভব কিনা সন্দেহ।
___________________
ডা. সাঈদ এনাম
ডিএমসি,কে-৫২
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।
আপনার মতামত দিন: